শিরোনাম
পোকামাকড় ডেকে এনে চাষের উন্নতি!
প্রকাশ : ১৬ নভেম্বর ২০১৮, ১৭:৩৭
পোকামাকড় ডেকে এনে চাষের উন্নতি!
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

আজকের বিশ্বে রাসায়নিক সার প্রয়োগ করে উৎপাদন বৃদ্ধি, কীটনাশক দিয়ে পোকামাকড় দমন ইত্যাদি কৃষিক্ষেত্রে নতুন কিছু নয়। নতুন হলো জার্মান বিজ্ঞানীদের একটি উদ্যোগ। তারা পোকামাকড় দমনের বদলে পোকামাকড় আকর্ষণ করে বিকল্প পদ্ধতি তুলে ধরছেন।


বন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা কাছের একটি শহরের ক্ষেতে নিয়মিত কীটপতঙ্গ পর্যবেক্ষণ করেন আর কীটপতঙ্গ দূর করার বদলে কৃষিকাজকেই তাদের (পোকা) সঙ্গে মানিয়ে চলতে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। একাজ করতে গিয়ে সবার আগে ক্ষেতের আলের দিকে চোখ চলে যায় তাদের। ঝোপঝাড় ও জংলি ফুল দিয়ে সাজানো সেই সীমানা।


সেই ঝোপের মধ্যে ৫০টিরও বেশি প্রজাতির গুবরে পোকা শীতযাপন করে। বসন্তকালে তারা আবার জেগে উঠলে ক্ষেত বেশি দূরে থাকে না। বন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর টোমাস ড্যোরিং বলেন, ‘‘এটা এক ধরনের গুবরে পোকা, সেটি নানা রকম অনিষ্টকারী কীট খেয়ে ফেলে। তাদের বিশাল ঝাঁক ক্ষেতের উপর উড়ে বেড়িয়ে সেই সব কীট ধ্বংস করে।''


প্রফেসর ড্যোরিং ও তাঁর টিম ফসলের ক্ষেতে এরকম আরও কীটপতঙ্গ আকর্ষণ করতে চান।


কৃষি পরিবেশবিদরা ক্ষেতের ধারে এমনসব উপকারী পোকামাকড়ের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করেন, যারা ক্ষতিকারক কীট খেয়ে ফেলে। ফলে কীটনাশকের আর প্রয়োজন পড়বে না বলে তাঁদের আশা। প্রফেসর ড্যোরিং বলেন, ‘‘এখানেই লেডিবাগ প্রজাতির শূককীট রয়েছে, যারা অ্যাফিড বা জাবপোকা খায়। আমরা উপকারী পোকামাকড়ের মাধ্যমে ক্ষতিকর কীটের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে আনতে পারি। যদিও তাদের একেবারে নিশ্চিহ্ন করা সম্ভব হবে না, তবে আমরা গোটা কাঠামোকে স্থিতিশীল করে তুলতে পারি।’’


ক্ষেতের ধারে গবেষকরা ফুলের সারি সৃষ্টি করেছেন। ফুলগুলো একসঙ্গে ফোটে না, একের পর এক তাদের বিকাশ ঘটে। ফলে পোকামাকড়ের খাদ্যের অভাব হয় না। প্রফেসর ড্যোরিং বলেন, ‘‘নানা ধরনের পোকা এই ফুল ব্যবহার করতে পারে। ক্ষেতের ফাঁক দিয়ে ট্রাকটর চলে। ফলে সেখানকার মাটি সাধারণত বেশ শক্ত হয়। সে কারণে অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এর তেমন উপযোগিতা নেই। মাটির এমন বৈশিষ্ট্যের ফলে সেখান থেকে আয়ের অঙ্ক কম। আয়ের চিন্তা না থাকায় সেই জায়গা পোকামাকড় আকর্ষণ করার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।’’


শুধু ধারে নয়, এই ক্ষেতের উপরের অংশও জার্মানির বেশিরভাগ ক্ষেতের থেকে ভিন্ন। গবেষকরা আগাছা ধ্বংস করতে কোনো রকম রাসায়নিক ব্যবহার করেন না। ফলে পোকারা ক্ষেতের মধ্যেও খাদ্য সংগ্রহ করতে পারে, যেমন বীজ, পরাগ, ক্যামোমিল ইত্যাদি।


ক্ষেতের ধারে ফুলের মেলা, কোনো কীটনাশক নয়, সারের পরিমাণও কম এবং ফসল পরিবর্তনের মতো পদক্ষেপ বেশ সফল হচ্ছে। প্রচলিত কৃষিক্ষেত্রের তুলনায় এখানে জীববৈচিত্র্য প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি। সেইসঙ্গে পরাগবহনকারী পোকাদের মাত্রা ৫০ শতাংশ বেশি। সূত্র : ডয়চে ভেলে


বিবার্তা/হুমায়ুন/কাফী

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com