ঝাল মরিচ খেতে সাহস লাগে। কিন্তু জর্জিয়ায় এখন ঝাল মরিচ খাওয়ার বিষয়টি অনেকের জন্য রাজনৈতিক অঙ্গীকারের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জর্জিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এক প্রার্থীর বিরোধীরা ঝাল মরিচ খাওয়ার চ্যালেঞ্জে নাম লেখাচ্ছেন। প্রেসিডেন্ট প্রার্থী সালোমে জুরাবিশভিলিকে তাদের এতটাই অপছন্দ যে, তাকে প্রেসিডেন্ট পদে দেখার চেয়ে তারা বরং ঝাল মরিচ খাওয়াকেই শ্রেয় মনে করেন।
লাইভ টেলিভিশনে এই ঝাল মরিচ খাওয়ার অভিনব প্রতিবাদের সূচনা করেন রুস্টাভি-টু চ্যানেলের প্রধান নিকা গভারামিয়া। তিনি মুখে একটি আস্ত মরিচ ঢুকিয়ে বলেন, আমার মুখের ভেতর এখন বিপর্যয় চলছে।
প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জুরাবিশভিলিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, যদি এই বিশ্বাসঘাতক প্রেসিডেন্ট হন, তাহলে আমাদের দেশের জন্য একই ধরণের বিপর্যয় অপেক্ষা করছে।
সালোমে জুরাবিশভিলির জন্ম ফ্রান্সে, এক জর্জীয় অভিবাসী পরিবারে। তিনি ছিলেন কূটনীতিক। এবার জর্জিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যে ২৫ জন প্রার্থী হয়েছেন, তিনি তাদের একজন।
নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। তবে জর্জিয়ার ক্ষমতাসীন দল জর্জিয়ান ড্রিম পার্টি তাকে পেছন থেকে সমর্থন দিচ্ছে। দলটির নেতা খুবই ক্ষমতাশালী ধনকুবের এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিডজিনা ইভানিশভিলি জর্জিয়ার সরকারের সব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের পেছনে থাকেন বলে মনে করা হয়।
২২ বছর বয়সী এক ছাত্র নডার রুখাদজে বলেছেন, তিনি এক নারীবাদী হিসেবে এই নারী প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে সমর্থন করতে চান। কিন্তু যেহেতু জুরাবিশভিলি দেশের স্বার্থের বিপক্ষে, তাই তাকে সমর্থন করতে পারছেন না।
গত মার্চ মাসে জর্জিয়ার সাথে রাশিয়ার একটি যুদ্ধের দশম বার্ষিকী পালিত হয়। তখন জুরাবিশভিলি মন্তব্য করেছিলেন, প্রথম গোলা ছুঁড়ে জর্জিয়াই সেই যুদ্ধ শুরু করেছিল। ২০০৯ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক স্বাধীন তদন্তেও অবশ্য একই কথা বলা হয়।
কিন্তু জর্জিয়ায় তার এই মন্তব্য তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি করে। কারণ রাশিয়ার সাথে ওই যুদ্ধে জর্জিয়ার শোচনীয় পরাজয়ই শুধু ঘটেনি, জর্জিয়া তার প্রায় বিশ শতাংশ এলাকার ওপর নিয়ন্ত্রণও হারিয়েছিল।
এই মন্তব্যের কারণে জুরাবিশভিলিকে অনেক রাশিয়ার অনুগত রাজনীতিক বলে গণ্য করেন। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছেন পশ্চিমাপন্থী রাজনীতিক গ্রিগল ভাশাডজে। এমনকি তাকেও রুশপন্থী বলে গালি দেয়া হচ্ছে। তার নির্বাচনী পোস্টারে কেউ রাশিয়ার গুপ্তচর সংস্থা এফএসবির নাম লিখেছে।
এক রাজনৈতিক ভাষ্যকারের মতে, এটা গত ২৫ বছরের রুশ নীতির ফল। যা কিছুই খারাপ, তাকে রাশিয়ার সাথে জুড়ে দেয়া হচ্ছে। সূত্র: বিবিসি
বিবার্তা/জাকিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]