শিরোনাম
হাজার শিশুর নাম তার নামে!
প্রকাশ : ৩০ জুলাই ২০১৮, ১০:২০
হাজার শিশুর নাম তার নামে!
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

অ্যালিস বিখ্যাত কোনো সঙ্গীত বা সিনেমা তারকা নন। খেলাধুলাতেও তার কোনো অবদান নেই। তারপরেও লাইবেরিয়ায় এক হাজারের বেশি কন্যা শিশুর নাম রাখা হয়েছে তার নামেই।


কারণ অ্যালিস পেশায় একজন মিডওয়াইফ বা ধাত্রী, অর্থাৎ সন্তান জন্মদানে গর্ভবতী মাকে সহায়তা করাই তার পেশা। তার হাতেই মায়ের গর্ভ থেকে পৃথিবীতে এসেছে অসংখ্য শিশু। যাদের একটা বড় অংশই আবার হয়েছে দেশটিতে যুদ্ধ চলার সময়।


অ্যালিস বলেন, প্রথমবার যখন কোনো শিশুর ডেলিভারি করলাম তখন সেটি হয়েছিলো যুদ্ধের সময় বন্দুকের নলের মাথায়। সেটা ১৯৯০ সালের ঘটনা। এক নারী চিৎকার করছিলেন। এক যোদ্ধা এসে বললো, তুমি যদি ডেলিভারি করাতে যাও ও এই নারীর কিছু হলে আমি দুজনকেই গুলি করে মারবো।



তিনি বলেন, বাচ্চাটি ডেলিভারি করে তাকে মুড়িয়ে মায়ের বুকে দিলাম যাতে বুকের দুধ খাওয়াতে পারে। এটাই আমার প্রথম কোনো বাচ্চাকে ডেলিভারি করানোর অভিজ্ঞতা।


ধাত্রী হিসেবে কাজ শুরুর সময় থেকে অ্যালিস জানতেন হয়তো কিছু শিশুর নাম রাখা হবে তার নামেই। তিনি বলেন, তাই বলো এতোটা হবে সেটা ভাবতে পারিনি। এটা আমাকে দারুণ আনন্দ দেয়। এটা আমাকে অনুভব করায় যে আমি তাদের একটি অংশ।


তিনি জানান, তার হাত দিয়ে জন্ম নেয়া কন্যা শিশুদের অনেকের যেমন নাম রাখা হয়েছে অ্যালিস (Allice), তেমনি ছেলে শিশুদের অনেকের নাম রাখা হয়েছে এলিস (Ellis)। আবার মেয়েদের মধ্যে যাদের নাম অ্যালিস রাখা হয়েছে পরে তারাও অনেকে মা হয়েছেন।


মজার বিষয় হলো তাদেরও অনেকের নাম রাখা হয়েছে এই নারীর নামের সঙ্গে মিল রেখে। এদের সবাইকে নিজের সন্তানের মতোই ভালোবাসে অ্যালিস।


এই শিশুদের সবার নাম অ্যালিস


তিনি বলেন, আমি আমার সন্তানদের জন্য গর্বিত। কারণ তারা আসলেই চমৎকার। যখনই কমিউনিটিতে কোথাও যাই সবাই ডাকতে থাকে। কেউ আন্টি, কেউ দাদী বা নানী বলে ডাকে। আমার দারুণ লাগে।


অনেক কঠিন সময়েও গর্ভবতী নারীদের নিয়ে কাজ করেছেন তিনি। এমনকি যখন ইবোলা ভাইরাস মহামারী আকার ধারণ করলো তখনও।


অ্যালিস বলেন, এটা ছিলো ভয়ংকর। এমনকি আমার নিজের সন্তানকেও একটি ছোট ঘরে নিয়ে রেখেছিলাম। এমনকি আমার ভাই এসে বললো অ্যালিস তুমি এখন অনেক ঝুঁকিতে আছো। কারণ তুমি ইবোলা নিয়ে কাজ করছো। তবে আমি খুব যে সাহসী তা নই, কিন্তু ওই সময় ঈশ্বরই আমাকে শক্তি যুগিয়েছেন।


তিনি বলেন, ধাত্রী হিসেবে আমি অন্যদের সহায়তা করার প্রশিক্ষণ পেয়েছি। তাই চুপ করে থাকাটা আমার কাজ নয়। মৃত্যু পর্যন্তই আমাকে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। ধাত্রীর কাজ কিন্তু সহজ নয়। ভালো ধাত্রী হওয়াটাও সহজ কাজ নয়। শনি ও রবিবার আমার ছুটির দিন। কিন্তু সেই ছুটিও আমার কখনো নেয়া হয় না।


এই দুই গর্ভবতীর নারীর জন্ম হয়েছে অ্যালিসের হাত ধরেই। দুজনের নামই অ্যালিস।


তিনি আরো বলেন, আমি কৃতজ্ঞ ঈশ্বরের কাছে কারণ আমি তাদের কাছে দাঁড়ানোর সুযোগ আমি পেয়েছি। সূত্র: বিবিসি


বিবার্তা/জাকিয়া


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com