বিশ্বকাপ ফুটবলে স্বর্ণযুগ রয়েছে ব্রাজিলের। সর্বোচ্চ পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন এবং দু’বারের রানার্সআপ তারা। কিন্তু এবার রাশিয়াতে এসে প্রথম ম্যাচেই ধাক্কা খেয়েছে তারা।
সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে ড্র করে দু’পয়েন্ট হারিয়েছে। তাই আজ জয় ছাড়া অন্য কোনো পথ নেই তাদের। কোস্টারিকার বিপক্ষে ম্যাচটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ নেইমারদের জন্য। প্রথম ম্যাচে নিজের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারেননি ব্রাজিলের এই তারকা ফরোয়ার্ড। আমি বলব তাকে খেলতে দেয়নি সুইজারল্যান্ড।
বারবার ফাউলের শিকার হয়েছেন। ব্লক হয়ে যাওয়ায় কারিশমাই দেখাতে পারেননি নেইমার। ম্যাচ ড্র হওয়ায় খুশি নন ব্রাজিলের সমর্থকরা। এমনিতেই গত ১৬ বছর কাপ দূরে থাক, ফাইনালেও যেতে পারেনি ব্রাজিল। এবার অবশ্য দারুণ একটি দল নিয়ে এসেছেন কোচ তিতে।
অভিজ্ঞদের মধ্যে রয়েছেন সিলভা, মিরান্দা, মার্সেলো, নেইমার, কুতিনহো, উইলিয়ান। নবীনদের মধ্যে রয়েছেন জেসুস। আশা করা যায় ভালো কিছু করার জন্য দ্বিতীয় ম্যাচটিকেই বেছে নেবে তারা। বিশ্ববাসীর দিকে তাকিয়ে তারা তাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে সক্ষম হবে। সমর্থকদের খুশি করতে হলে বিশ্বকাপ জেতার মতো খেলতে হবে।
স্বরূপে ফিরবেন নেইমার। আমার ধারণা এই ম্যাচের মাধ্যমে ব্রাজিল তাদের সমর্থকদের আস্থা ফেরাতে পারবে। অন্যদিকে কোস্টারিকা গতবারের কোয়ার্টার ফাইনালিস্ট।
কিন্তু এবার প্রথম ম্যাচে হেরে বিপাকে তারা। গত আসরের সেই ধার নেই এবার। আজকের ম্যাচে হয়তো কোস্টারিকাও চেষ্টা করবে বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে। সাধারণত তারা ৪-২-৩-১ কিংবা ৫-৪-১ ছকে খেলে থাকে।
আর্জেন্টিনার মতো নাইজেরিয়ার ম্যাচ থেকেও এক পয়েন্ট নিতে চাইবে আইসল্যান্ড। উচ্চতাই তাদের বড় শক্তি, যা দিয়ে তারা রুখে দিয়েছে আর্জেন্টিনার মতো দলকে।
তাই আইসল্যান্ডকে সমীহ করেই মাঠে নামতে হবে সুপার ঈগলদের। আইসল্যান্ড প্রথম ম্যাচে এক পয়েন্ট পেলেও আজ জেতার জন্য খেলবে। এবারের বিশ্বকাপে দেখা যাচ্ছে, প্রথম ম্যাচে হারা দলগুলো পরের ম্যাচে নিজেদের উজাড় করে খেলছে। নইলে গ্রুপের শেষ ম্যাচটি নিয়মরক্ষায় পরিণত হবে।
তাই নাইজেরিয়াও মরণ কামড় দেবে এটাই স্বাভাবিক। ইউরোপের দু’দেশ সার্বিয়া ও সুইজারল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। এরই মধ্যে ব্রাজিলের কাছ থেকে এক পয়েন্ট ছিনিয়ে নিয়েছে সুইসরা। এবার জয়ের লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নামবে তারা। কোস্টারিকাকে হারিয়ে তিন পয়েন্ট পাওয়া সার্বিয়াও চাইবে জিতে দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত করতে।
এদিকে পর্তুগালের কাছে হারলেও অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়েছে মরক্কো। আমি মনে করি, এ-গ্রুপে থাকলে দ্বিতীয় রাউন্ডে যেতে পারত দেশটি। কারণ প্রথম ম্যাচে আত্মঘাতী গোলে হেরেছে তারা। ইরান কোনো গোল দেয়নি।
আর পর্তুগালের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে ফিনিশারের অভাবেই পরাজয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে তাদের। তবে সুযোগটা ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছে পর্তুগাল।
আমি বলব, পর্তুগাল ভাগ্যের জোরে এগিয়ে যাচ্ছে। যে ভাগ্যের সহায়ক হয়েছেন রোনাল্ডো। তিনি আছেন বলেই আজ পর্তুগাল এই পর্যায়ে। যদিও একটি ছন্নছাড়া মিডফিল্ড দেখা গেছে তাদের। ডিফেন্স দেখে মনে হয়েছে ছোট দলগুলোর মতোই।
তারপরও তিন পয়েন্ট তুলে নিয়েছে তারা। এটা সৌভাগ্য পর্তুগালের। প্রথম ম্যাচের দিকে তাকালে দেখা যায়, স্পেনের সঙ্গেও শেষ মুহূর্তে গোল পাওয়া ছিল পর্তুগালের ভাগ্যের ব্যাপার। আমি মনে করি রোনাল্ডো ও ভাগ্য- এ দু’ই পর্তুগালকে এগিয়ে নিচ্ছে।
উরুগুয়ের কাভানি ও সুয়ারেজ রয়েছেন। তাই ভালো খেললেও সৌদি আরব জিতবে এটা কখনো মনে হয়নি। উরুগুয়ের জয়টা প্রত্যাশিতই ছিল। এই বিশ্বকাপে স্পেনও ফেভারিট দল। ইরানের বিপক্ষে জয়টা তাদের প্রাপ্য ছিল। যদিও এশিয়ার দেশটির হাতে তিন পয়েন্ট ছিল। তবে কস্তার সুযোগসন্ধানী গোলই তাদের পূর্ণ তিন পয়েন্ট এনে দিয়েছে।
আগের ম্যাচের তুলনায় ইরানের বিপক্ষে বেশ ভালো করেছেন ইনিয়েস্তারা। তবে সামনের দিকে তারকা ফুটবলারদের আরো জ্বলে উঠতে হবে। দর্শকদের মন জয় করে আরো এগিয়ে যেতে হবে। ইরানের মিডফিল্ড ও ফরোয়ার্ড লাইন ছিল সমীহ জাগানো। কিন্তু ভিএআর প্রযুক্তির মাধ্যমে গোলবঞ্চিত হয়েছে তারা।
নইলে স্পেনের কাছ থেকে এক পয়েন্ট ছিনিয়ে নিতে পারত। এখন যদি পর্তুগালের কাছ থেকে পয়েন্ট ছিনিয়ে নিতে পারে, তাহলে দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার স্বপ্ন পূরণ হতে পারে এশিয়ার দেশটির।
বিবার্তা/তৌহিদ/সোহান
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]