শিরোনাম
প্রতীকের মৃত্যু নিয়ে রহস্য!
প্রকাশ : ১৭ আগস্ট ২০১৯, ১৭:৪৪
প্রতীকের মৃত্যু নিয়ে রহস্য!
খলিলুর রহমান
প্রিন্ট অ-অ+

সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তাইফুর রহমান প্রতীকের মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।ময়না তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে সে আত্মহত্যা করেছে।তবে লাশ উদ্ধারের আগের কয়েকটি ছবি পরিবারের সদস্য সংগ্রহ করেছেন।ওই ছবিগুলো দেখলে আত্মহত্যার কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।তাই পরিবারের অভিযোগ তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে মামলার প্রস্তুতিও নিচ্ছে নিহতের পরিবার।


নিহতের পরিবাবের দাবি, তাইফুর রহমান প্রতীককে হত্যার পর ময়না তদন্ত ছাড়াই পুলিশ লাশ হস্তান্তর করার চেষ্টা করেছিল। পরবর্তীতে পরিবারের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে লাশের ময়না তদন্ত সম্পন্ন করা হয়।এরপর স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়।কিন্তু পরবর্তীতে ময়না তদন্তের প্রতিবেদন নিয়েও শুরু হয় টালবাহানা। এক পর্যায়ে নিহতের পরিবার তদবির করে ময়না তদন্তের প্রতিবেদনও সংগ্রহ করে।ওই প্রতিবেদনেও প্রতীক আত্মহত্যা করেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।এতে করে প্রতীকের মৃত্যু নিয়ে নতুন করে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।তবে ঘটনাটি সঠিকভাবে তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে প্রতীকের পরিবার।


নিহতের বড় বোন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তাওহিদা জাহান বিবার্তাকে জানান, প্রতীক আত্মহত্যার কোনো আলমত নেই।তাকে হত্যা করা হয়েছে। তার একটি পা ও হাতের দুটি আঙ্গুল ভাঙা পাওয়া গেছে।


তিনি আরো জানান, প্রতীককে হত্যা করে আত্মহত্যার নাটক সাজানো হয়েছে।শুধু তাই নয়, এটাকে ধামাচাপা নিতে যত ধরণের কৌশল অবলম্বনকরা প্রয়োজন পুলিশ ও সংশ্লিষ্টরা তা করেছেন।


তিনি বলেন, ‘পা ভাঙা অবস্থায় প্রতীকের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। আমরা পোস্টমর্টেম রিপোর্টের অপেক্ষায় ছিলাম।তবে দীর্ঘ চারমাস পর সেটা দেয়া হয়।কিন্তু সেই প্রতিবেদন দেখে আমরা অবাক হই। পা ভাঙা কেন লেখা নেই। তারপর পুলিশকে চাপ প্রয়োগ করে কয়েকটি ছবি সংগ্রহ করেন আমার বাবা।কিন্তু ওই ছবি দেখে পরিষ্কার হয়ে গেছে আমার ভাই সুইসাইড করে নাই।তাকে হত্যা করা হয়েছে।


বাকরুদ্ধ কণ্ঠে শান্তা তাওহিদা বলেন, প্রতীকের মৃত্যুর পর তার বিষয়টিকেধামাচাপা দেবার জন্য ফেসবুকসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রতীকের নামে নানা রিউমার ছড়ানো হয়েছে।একজন মৃত মানুষের নামে অপবাদ ছড়ানোর বিচার সৃষ্টিকর্তা নিশ্চয়ই করবেন।


পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে জানিয়ে প্রতীকের বাবা মো. তৌহিদুজ্জামান বিবার্তাকে বলেন, ‘আমার ছেলেকে পরিকল্পীতভাবে হত্যা করা হয়েছে।অনেক কষ্টে আমি ময়না তদন্তের প্রতিবেন সংগ্রহ করেছি।কিন্তু সেখানে হত্যার আলামতের কোনো তথ্য দেয়া হয় নাই।তাই এখন আমি মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।খুব শিগগিরই আমার ছেলে হত্যার বিচারের দাবিতে একটি মামলা দায়ের করব।’


এদিকে, লাশ উদ্ধার হওয়ার আগেপ্রতীক ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় কয়েকটি ছবি বিবার্তার কাছেও এসেছে।ছবিগুলোতে দেখা যাচ্ছে গলায় লাল ও নীল কাপড় দ্বারা ফাঁস লাগানো।ফ্যানের সাথে ঝুলে থাকা লাশের কানে এয়ারফোন লাগানো।গলার সঙ্গে দুই হাত বাঁধা। মুখ দিয়ে রক্ত পড়ছিল।ডান পা লম্বা-লম্বি সোজা, বাম পা একটা চেয়ারের উপর রাখা।


তবে এ ব্যাপারে জানতে সিলেট কোতোয়ালী থানার এসআই ও লাশ উদ্ধারে নেতৃত্ব দেয়া পুলিশ কর্মকর্তা আকবর হোসাইন ভূঁইয়া বিবার্তাকে বলেন, ‘আমি একটু ঝামেলায় আছি।এ ব্যাপারে কথা বলতে হলে রাত আটটার পর ফোন দিবেন।’


উল্লেখ্য, চলতি বছর ১৪ জানুয়ারি সিলেট নগরের পশ্চিম কাজলশাহ এলাকা ১১৭ নম্বর বাসা থেকে প্রতীকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।সে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের ছাত্র ছিল।


বিবার্তা/খলিল/জাই

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com