দেশের চলমান বন্যার কারণে গত ১৫ দিনে বিভিন্ন জেলায় মারা গেছে অন্তত ১০১ জন। পাশাপাশি প্রায় সাড়ে ১১ হাজার মানুষ ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। বিবার্তাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম।
প্রতিষ্ঠানটির তথ্য মতে মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি জামালপুর জেলায়। এ জেলায় বন্যার কারণে এ পর্যন্ত মারা গেছে ৩৩ জন। এর পর রয়েছে গাইবান্ধা, সেখানে মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের।
এছাড়া নেত্রকোনা জেলায় ১৬ জন, টাঙ্গাইলে ৭ জন, সুনামগঞ্জে ৫ জন, বগুড়ায় ৪ জন, লালমনিরহাটে ৪ জন, কুড়িগ্রামে ৪ জন, নীলফামারীতে ২ জন, শেরপুরে ২ জন, বাহ্মণবাড়িয়ায় ২ জন, সিরাজগঞ্জে ২ জন, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও ফরিদপুরে একজন করে মৃত্যু হয়েছে।
এসব জেলায় সব থেকে বেশি মৃত্যু হয়েছে পানিতে ডুবে। ১০ জুলাই থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত ৮৩ জন শুধু পানিতে ডুবে মারা যায়। এছাড়া ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে সাপের কামড়ে, ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বজ্রপাতে, আর.টি.আই'য়ে আরো একজনের মৃত্যু হয়।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী টানা বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় ২৮ জেলার ৩০ লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য মতে, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, জামালপুর, শেরপুর, চাঁদপুরসহ মোট ২৭টি জেলায় বন্যার প্রকোপ দেখা দেয়।
এই ২৭ জেলার মোট ২২৪টি উপজেলার মধ্যে ৭৬টি উপজেলা বন্যায় আক্রান্ত হয়। ৭৬টি উপজেলায় ৩১৭টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। দুই হাজার ৪১৫টি মেডিকেল টিম সেখানে কাজ করছে।
বুধবার প্রবল বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি বেড়েছে। ফলে গাইবান্ধার আবারো বন্যার অবনতি ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার সকালে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ফুলছড়ি পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার ও ঘাঘট নদীর পানি গাইবান্ধা শহর পয়েন্টে ২৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমা বরাবর প্রবাহিত হচ্ছে। গত দুই দিনে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় ১১২ মিলিমিটার।
লালমনিরহাটের পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারি প্রকৌশলী এ টি এম ফজলে করিম বিবার্তাকে জানান, লালমনিরহাটের বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হচ্ছে। গত কয়েকদিন তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেও আজ থেকে হ্রাস পাচ্ছে। শুক্রবার বেলা ১২টার সময থেকে তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার নিচে প্রবাহিত হয়েছে।
এদিকে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।ফলে বন্যার পানি নেমে যেতে না যেতেই কুড়িগ্রামে ফেন বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া বিবার্তাকে বলে, গতকাল পর্যন্ত বেশ কয়েকিটি নদীর পানি বৃদ্ধি পায়।যার ফলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়। আজ থেকে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে যাচ্ছে।
বিবার্তা/আকরাম/তাওহীদ/জাই
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]