বঙ্গবন্ধুকে ডক্টর অব লজ ডিগ্রি প্রদানে প্রস্তুত ঢাবি
প্রকাশ : ২৮ অক্টোবর ২০২৩, ২০:২৩
বঙ্গবন্ধুকে ডক্টর অব লজ ডিগ্রি প্রদানে প্রস্তুত ঢাবি
মহিউদ্দিন রাসেল
প্রিন্ট অ-অ+

রাত পোহালেই ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে। ২৯ অক্টোবর, রবিবার সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে এই সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে এ উপলক্ষ্যে সকল প্রস্তুতিও সম্পন্ন হয়েছে। সমাবর্তনে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ডক্টর অব লজ (মরণোত্তর) ডিগ্রি প্রদান করা হবে। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আদেশ ১৯৭৩ আর্টিকেল ১০(১) অনুযায়ী এবং মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর-এর অনুমতিক্রমে সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।


২৮ অক্টোবর, শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশেষ সমাবর্তনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অ্যালামনাই, রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েটবৃন্দ এবং অতিথিবৃন্দসহ প্রায় ১৮ হাজার গণ্যমান্য ব্যক্তি অংশগ্রহণ করবেন। অতিথিদের মধ্যে থাকবেন বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যবৃন্দ, মাননীয় মন্ত্রীবর্গ ও সংসদ সদস্যবৃন্দ, ঢাকাস্থ বিদেশি দূতাবাস/হাইকমিশনের রাষ্ট্রদূত/হাইকমিশনার/চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যগণ, সিনেট, সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যবৃন্দ, সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ এবং সুধীজন।


এতে আরো বলা হয়, সিনেট, সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যবৃন্দ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ সকাল ১০টায় কার্জন হল প্রাঙ্গণে উপস্থিত হয়ে সমাবর্তন শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করবেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটবৃন্দ জিমনেসিয়াম সংলগ্ন গেইট দিয়ে সমাবর্তনস্থলে প্রবেশ করবেন। তাদের জন্য সকাল ৮টায় গেইট খোলা হবে এবং তারা সকাল ১০টার মধ্যে অবশ্যই সমাবর্তনস্থলে আসন গ্রহণ করবেন। অ্যালামনাইগণ, রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েটবৃন্দ এবং আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ সুইমিং পুল সংলগ্ন গেইট দিয়ে সমাবর্তনস্থলে প্রবেশ করবেন। তাদের জন্য সকাল ৯টায় গেইট খোলা হবে এবং তারা সকাল ১০টার মধ্যে অবশ্যই সমাবর্তনস্থলে আসন গ্রহণ করবেন।



সমাবর্তনের দিন ভিআইপি অতিথিবৃন্দের গাড়ি কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ভবন (কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার সংলগ্ন সায়েন্স এনেক্স ভবন) মাঠে ও মোকারকম ভবন চত্বরে (কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের উত্তর পাশে) পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া, অন্যান্য আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দের গাড়ি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল খেলার মাঠে পার্কিং করতে হবে।


সমাবর্তনের দিন সকাল ৭টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত শাহবাগ ক্রসিং থেকে দোয়েল চত্বর, হাইকোর্ট থেকে দোয়েল চত্বর, ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে দোয়েল চত্বর, পলাশী থেকে দোয়েল চত্বর এবং নীলক্ষেত থেকে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত রাস্তায় গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকবে। সমাবর্তনে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণপত্র এবং জাতীয় পরিচয়পত্র/প্রতিষ্ঠান কর্তৃক আইডি/পাসপোর্ট সাথে আনতে হবে। আমন্ত্রণপত্র হস্তান্তরযোগ্য নয়। সমাবর্তনস্থলে মোবাইল ফোন, হাতব্যাগ, ব্রিফকেস, ক্যামেরা, ইলেকট্রনিক ডিভাইস, ছাতা ও পানির বোতল নিয়ে প্রবেশ করা যাবে না।


এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনের সভাপতি, মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মো. সাহাবুদ্দিন অনুষ্ঠানে থাকার কথা ছিল। তবে চিকিৎসার জন্য বর্তমানে দেশের বাইরে অবস্থান করায় সমাবর্তনে তিনি উপস্থিত থাকবেন না বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। ২৬ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে সমাবর্তন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান তিনি।


উপাচার্য বলেন, মহামান্য রাষ্ট্রপতি চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আদেশ ১৯৭৩ আর্টিকেল ১০(১) অনুযায়ী এবং মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলরের সদয় অনুমতিক্রমে এ সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। তবে রাষ্ট্রপতি না থাকলেও সমাবর্তন বক্তা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থাকবেন বলেও নিশ্চিত করেন তিনি।


তথ্য বিশ্লেষণে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২০ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ জাতীয় কমিটি ও জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির যৌথ সভায় বঙ্গবন্ধুকে মরণোত্তর সম্মানসূচক ডিগ্রি দেয়ার প্রস্তাব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ। একই বছর ১০ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত সভায়ও বঙ্গবন্ধুকে জন্মশতবর্ষে মরণোত্তর সম্মানসূচক ডিগ্রি প্রদানের প্রস্তাব পুনরায় উত্থাপন করা হয়। সেই প্রস্তাব ২০২০ সালের ২৭ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল ও ২৮ জানুয়ারি সিন্ডিকেট সভায় সর্বসম্মতভাবে অনুমোদন হয়। পরে চলতি বছরের ১৬ জুলাই ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় বিশেষ এই সমাবর্তনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।


ঢাবিতে বহিষ্কার হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু:
সূর্যসন্তানের সূতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হলেও তাদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিঃসন্দেহে সর্বশ্রেষ্ঠ। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুজ্জ্বল ইতিহাসের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে আছে বঙ্গবন্ধুর নাম। কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ থেকে বিএ পাস করে ১৯৪৭ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন বঙ্গবন্ধু। তিনি সংযুক্ত ছিলেন স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে। কিন্তু সলিমুল্লাহ হলের ছাত্র হলেও তিনি বেশির ভাগ সময় আড্ডা দিতেন ফজলুল হক মুসলিম হলে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার আগেই শেখ মুজিবুর রহমান যুব আন্দোলনে সম্পৃক্ত ছিলেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে তিনি ছাত্র-আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্র নেতাদের নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলে পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ গঠন করেন।


১৯৪৮ সালে ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন শেখ মুজিবুর রহমান। এ কারণে তাঁকে কারাবরণও করতে হয়। কারাগার থেকে বের হয়ে শেখ মুজিবুর রহমানসহ তরুণ নেতৃবৃন্দ পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলেন। গড়ে ওঠে আন্দোলন।


শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৪৯ সালে আইন বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীদের মধ্যে দাবি-দাওয়া নিয়ে অসন্তোষ চলছিল। কর্মচারীদের মাসিক বেতন ছিল নগণ্য। তাদের থাকার জন্য কোনো বাসস্থান ছিল না। বিষয়টি ভাবালো বঙ্গবন্ধুকে। ফলে এই সময় শুধু ছাত্র আন্দোলনই নয়, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনেও নেতৃত্ব দিতে থাকেন তিনি। আর তাতেই রোষানলে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। ১৯৪৯ সালের ২৬ মার্চ চতুর্থ শ্রেণির আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয় তরুণ ছাত্রনেতা শেখ মুজিবকে। ওইসময় আরো চার নেতাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়। শর্ত ছিল ১৫ টাকা জরিমানা দিয়ে অভিভাবক এসে মুচলেকা দিলে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হবে। শেখ মুজিব বাদে বাকি চারজন শর্ত মেনে ছাত্রত্ব ফিরে পান।


কিন্তু পরাজয় যাকে কখনো স্পর্শ করতে পারেনি, সেই মানুষটি জরিমানা-মুচলেকা দিয়ে ছাত্রত্ব ফিরে পাবেন, তা কি হয়! মাথা উঁচু করেই ক্যাম্পাস ছেড়েছেন শেখ মুজিব। ছাত্রত্ব ফিরে পেতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কোনো দেনদরবারও করেননি তিনি। বহিষ্কৃত ক্যাম্পাসে শেখ মুজিব সংবর্ধিত হওয়ার কথা ছিল ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ক্যাম্পাসের মঞ্চও ছিল প্রস্তুত। কিন্তু ঘাতকেরা ক্যাম্পাসের রঙিন মঞ্চে ওঠার আর সুযোগ দেয়নি। ওই দিন বিপথগামী সেনাকর্মকর্তারা রাতের আঁধারে কাপুরুষোচিত হামলায় রক্তাক্ত মঞ্চ তৈরি করেছিল বঙ্গবন্ধুর প্রিয় ধানমণ্ডির সেই ৩২ নম্বরের বাড়িটি। তবে ২০১০ সালে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব বাতিলের আদেশ প্রত্যাহার করেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।


বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারে বলা হয়, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তিকৃত ছাত্র শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীদের আন্দোলনে সমর্থন ও নেতৃত্বদান ছিল তার অসাধারণ দূরদর্শী ও জ্ঞানদীপ্ত গণতান্ত্রিক চেতনার বহিঃপ্রকাশ। অধিকন্তু এটি ছিল ওই সময়ের সাহসী ন্যায়ভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে একটি সাহসী পদক্ষেপ। কর্মচারীদের ন্যায়সংগত আন্দোলনে তার অংশগ্রহণ ছিল যথার্থ। তাকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক, অনৈতিক, ন্যায়বিচার এবং বিধি পরিপন্থি ছিল।’


বিশেষ সমাবর্তন নিয়ে কী বলছে ঢাবি প্রশাসন?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদুর রহমান বিবার্তাকে বলেন, বিশেষ সমাবর্তন ঘিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তুতি খুবই সন্তোষজনক। সার্বিক প্রস্তুতি সম্পূর্ণ হয়েছে বলা যায়। প্যান্ডেল, গ্রাউন্ড, সাজসজ্জাসহ প্রায় কাজ ইতোমধ্যে শেষ। শনিবার বিকেলে ট্রায়ালের কাজও হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সম্মানসূচক ‘ডক্টর অব লজ’ (মরণোত্তর) ডিগ্রি প্রদানে পুরোপুরি প্রস্তুত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।


তিনি বলেন, আমাদের নিরাপত্তার বিষয়টিও জোরদার রয়েছে। ডিজিএফআই, পুলিশসহ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করবেন। মোটকথা, আমরা সার্বিকভাবে প্রস্তুত রয়েছি। তবে আয়োজন সফল করতে সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বিবার্তাকে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই দেশের মুক্তি সংগ্রাম ও অর্থনৈতিক সংগ্রামের জন্য তাঁর জীবনকে উৎসর্গ করেছেন। তিনি শুধু এই অঞ্চলের নয়, পৃথিবীর নির্যাতিত মানুষের নেতা ছিলেন। তাঁর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ জাতিসংঘের ইউনেস্কো কর্তৃক মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্তকরণ হয়েছে। এই ভাষণ মানুষের মুক্তির সনদ হিসেবে স্বীকৃত। বঙ্গবন্ধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন আন্দোলন-সংগ্রামে তৎপর ছিলেন। শুধু তাই নয়, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের অধিকার রক্ষা করতে গিয়ে তিনি বহিষ্কৃতও হয়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাঁর ছাত্রত্ব কেড়ে নেওয়া হলেও স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁর সাথে ছিল এবং ওনার অবদানকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে। কাজেই বঙ্গবন্ধুকে বিশেষ সমাবর্তনের মাধ্যমে ডক্টর অব লজ (মরণোত্তর) ডিগ্রি প্রদান করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং একইসাথে পুরো জাতির জন্য অহংকারের বিষয়। আর এর মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধুকে বহিষ্কারের ঘটনায় কিছুটা হলেও দায়মুক্ত হবে।


তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে, সেই বঙ্গবন্ধুকে আমরা রক্ষা করতে পারিনি। আজকে তাঁরই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক মুক্তি সংগ্রামে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বাংলাদেশের উন্নয়নের রূপকার। বঙ্গবন্ধুকন্যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বিশেষ সমাবর্তনে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। আর তাঁর সামনে আমরা বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম নিয়ে কিছু আলোচনার করার সুযোগ পাবো এবং একইসাথে বঙ্গবন্ধুকে ডক্টর অব লজ (মরণোত্তর) ডিগ্রি প্রদান করবো। পুরো আয়োজনের সাথে জড়িত একজন হতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত এবং গৌরবান্বিত।



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বিবার্তাকে বলেন, আমাদের প্রস্তুতি সার্বিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। আশা করি ছাত্র-শিক্ষক, ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠন, রাজনৈতিক সংগঠন, অতিথি, গণমাধ্যমসহ সবার সর্বাত্মক সহযোগিতায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে আয়োজিত বিশেষ সমাবর্তন সফল ও সার্থক হবে।


তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গর্বিত শিক্ষার্থী ছিলেন। কাজেই দলমত নির্বিশেষে জাতির পিতাকে নিয়ে এটা মর্যাদার ও গৌরবময় আয়োজন। একইসাথে এটা বিনম্র শ্রদ্ধার প্রয়াস বলে আমি মনে করি।


বিবার্তা/ রাসেল-ছাব্বির/রোমেল/সউদ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com