মিথ্যাচারের মর্মান্তিক শাস্তি
প্রকাশ : ০৫ মে ২০২৫, ১২:২২
মিথ্যাচারের মর্মান্তিক শাস্তি
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

মিথ্যা সাময়িক সুবিধা ও লাভজনক মনে হলেও এর অভ্যন্তরীণ ক্ষতি অনেক বেশি। মিথ্যা খুব সহজ একটি গুনাহ। ছোট একটি মিথ্যা ধসিয়ে দিতে পারে সারা জীবনের অর্জন করা সম্মান। সমাজ ও রাষ্ট্রে অশান্তি ও বিশৃঙ্খলার পেছনেও থাকে কোনো না কোনো মিথ্যা। পারিবারিক কলহ, খুন-খারাবি, দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়নসহ হাজারো অপকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এ জঘন্য পাপ।


ব্যবসায়ীরা সাধারণত ব্যবসায় লাভবান হওয়ার জন্য অনেক ক্ষেত্রে মিথ্যার আশ্রয় নেয়, এতে বাহ্যত পণ্যের কাটতি বাড়লেও ব্যাবসায়িক মুনাফার বরকত কমে যায়।


রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা ক্রয়-বিক্রয়ে মিথ্যা কসম করা থেকে বিরত থেকো। কেননা এর কারণে (সাময়িক) পণ্য বেশি বিক্রি হলেও বরকত কমে যায়।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৫৬০)


মিথ্যাবাদীর মর্মান্তিক শাস্তি : সামুরাহ বিন জুনদুব (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) একদিন (ফজর নামাজ শেষে) আমাদের জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের কেউ আজ কোনো স্বপ্ন দেখেছ কি? আমরা বললাম, না। তিনি বলেন, কিন্তু আমি দেখেছি যে দুজন ব্যক্তি আমার কাছে এলো। অতঃপর তারা আমাকে পবিত্র ভূমির (শাম বা বায়তুল মুকাদ্দাসের) দিকে নিয়ে গেল। হঠাৎ দেখতে পেলাম, এক ব্যক্তি বসে আছে আর এক ব্যক্তি লোহার আঁকড়া হাতে দাঁড়িয়ে। দাঁড়ানো ব্যক্তি বসে থাকা ব্যক্তির (এক পাশের) চোয়ালটা এমনভাবে আঁকড়াবিদ্ধ করছিল যে, তা (চোয়াল বিদীর্ণ করে) মস্তকের পেছনের দিক পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছিল। অতঃপর অপর চোয়ালটিও আগের মতো বিদীর্ণ করল। ততক্ষণে প্রথম চোয়ালটা জোড়া লেগে যাচ্ছিল। আঁকড়াধারী ব্যক্তি পুনরায় সেরূপ করছিল।


...অতঃপর তারা আমাকে ব্যাখ্যা বলে দিল যে আপনি যে ব্যক্তির চোয়াল বিদীর্ণ করার দৃশ্য দেখলেন সে মিথ্যাবাদী; মিথ্যা কথা বলে বেড়াত, তার বিবৃত মিথ্যা বর্ণনা ক্রমাগত বর্ণিত হয়ে দূর-দূরান্তে পৌঁছে যেত। ফলে তার সঙ্গে কিয়ামত পর্যন্ত (কবরে) এরূপ আচরণ করা হবে। (বুখারি, হাদিস : ১৩৮৬)


যেসব ক্ষেত্রে মিথ্যা বলা যায় : শরিয়তে মিথ্যা বলা সর্বসম্মতভাবে হারাম হলেও বিশেষ কিছু অবস্থা ও সময়ে মিথ্যা বলার অবকাশ রয়েছে। কোনো সৎ উদ্দেশ্যে অন্যের ক্ষতি ছাড়া এমন কোনো বৈধ বিষয়, যা মিথ্যা ছাড়া সমাধান সম্ভব নয়, তাহলে সেখানে কৌশলে মিথ্যা বলা যায়। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি মানুষের মধ্যে আপস-মীমাংসা করে দেয় সে মিথ্যাবাদী নয়। সে ভালো কথা বলে এবং উত্তম কথাই আদান-প্রদান করে।’ (বুখারি, হাদিস : ২৬৯২)


অন্যত্র রাসুল (সা.) তিনটি ক্ষেত্রে চতুরতা অবলম্বনের নির্দেশ দিয়েছেন। (১) যুদ্ধে কৌশল অবলম্বনের ব্যাপারে (২) লোকের বিবাদ মিটিয়ে সন্ধি স্থাপনে (৩) স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক (প্রেমময়) কথোপকথনে। (মুসলিম, হাদিস : ২৬০৫)


বিবার্তা/এমবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com