হেয়ার স্কুলের ২০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে কলকাতার রাস্তায় শোভা পাচ্ছে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত জিয়াউর রহমানের ছবি।
রামমোহন রায়ের সহায়তায় ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে ১লা সেপ্টেম্বর ডেভিড হেয়ার প্রতিষ্ঠা করেন এই হেয়ার স্কুল। সেক্ষেত্রে ২০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে গত ১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ থেকে শুরু হয় বছরব্যাপী উদযাপন, যা চলবে আগামী ১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত। তারই অংশ হিসেবে স্কুলের আশেপাশের এলাকাগুলোতে স্কুলটির বিশিষ্ট প্রাক্তনীদের (নোটেবল এলামনি) ছবি টাঙানো হয়েছে, যার একজন হলেন জিয়াউর রহমান।
কলকাতার কলেজস্ট্রীটে একটি ত্রিফলা বাতির মাথায় টাঙানো জিয়ার ওই ছবিটি কারোই নজর এড়ায়নি। কলকাতার রাস্তায় জিয়ার ওই ছবিটিকে ঘিরে ইতোমধ্যেই সোরগোল পড়ে গেছে। এই স্কুলেরই সাবেক শিক্ষার্থী সংগঠন ‘হেয়ার স্কুল এলামনাই অ্যাসোসিয়েশন’ই তাদের স্কুলের সফল, স্বনামধন্য ও কৃতী ছাত্রদের নিয়ে বছরব্যাপী নানা আয়োজন রেখেছে। স্কুলটির ওয়েব পেজ (ডব্লুডব্লুডব্লু.হেয়ারস্কুলএলামনি.কম/এলামনি.পিএইচপি)-এও জিয়াউর রহমানসহ সাবেক ২৯ ছাত্রের নাম ও ছবি সাঁটানো রয়েছে।
এশিয়ার প্রাচীনতম পাশ্চাত্য শৈলীর বিদ্যালয় হিসাবে হেয়ার স্কুল সম্মানিত। ব্রিটিশ স্থাপত্যশৈলীতে তৈরী এই স্কুলেই একসময় শিক্ষালাভ করেছেন আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু, আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়, মেঘনাদ সাহা’র মতো মহান বিজ্ঞানীরা, যারা বিজ্ঞান জগতে ভারতকে স্থান শীর্ষে নিয়ে গেছেন। এই স্কুলেরই শিক্ষার্থী গণিতজ্ঞ রাধানাথ শিকদার, যিনি প্রথম মাউন্ট এভারেস্টের উচ্চতা নির্ণয় করেন।
এই স্কুলের মাঠেই ১৮৭৭ সালে প্রথম ফুটবল খেলার প্রচলন করেন এই স্কুলের শিক্ষার্থী নগেন্দ্রপ্রসাদ সর্বাধিকারী, যাঁকে ভারতীয় ফুটবলের জনক বলা হয়। এই স্কুলে পড়েই বাংলা সাহিত্যভান্ডারকে সমৃদ্ধ করেছেন রাজনারায়ণ বসু, অক্ষয়কুমার বড়াল, রামতনু লাহিড়ী, দীনবন্ধু মিত্র, পিয়ারীচরণ সরকারের মত মানুষরা। নাট্যকার গিরিশচন্দ্র ঘোষ, অভিনেতা গুরু দত্ত, পরিচালক ও অভিনেতা প্রমথেশ বড়ুয়া, কলকাতার প্রথম শেরিফ দিগম্বর মিত্র, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য স্যার গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, দাবাড়– গ্র্যান্ডমাস্টার দিব্যেন্দু বড়–য়া-এরা প্রত্যেকেই এই স্কুলেরই সাবেক শিক্ষার্থী। ঠিক তেমনি এই স্কুলেই প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেছিলেন জিয়াউর রহমান।
১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারী বগুড়া জেলার বাগবাড়ীতে তার জন্ম হলেও শৈশবের বেশকিছুটা সময় অতিবাহিত হয় কলকাতা শহরে। এই কলকাতা শহরেই এক সরকারি দফতরে রসায়নবিদ হিসাবে কর্মরত ছিলেন জিয়ার পিতা মনসুর রহমান। যদিও ভারত ভাগের পর তাঁর পিতা করাচি শহরে চলে যান। তখনই কলকাতার হেয়ার স্কুলে ত্যাগ জিয়াও চলে যান করাচিতে।
বিবার্তা/ইমদাদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]