নাশকতার অভিযোগে ঢাকার কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় দায়ের করা পৃথক দুই মামলায় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমানসহ ২১৩ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। এর মধ্য দিয়ে মামলা দুটির বিচার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো।

২০ ডিসেম্বর, বুধবার দুপুরে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম রকিবুল হাসানের আদালত আসামিদের অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন। সেইসঙ্গে এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী বছর ২ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত।

কারাগারে থাকা আমানকে শুনানি উপলক্ষে এদিন আদালতে হাজির করা হয়। জামিনে থাকা অন্য আসামিরাও আদালতে হাজিরা দেন। এ সময় আসামিপক্ষের আইনজীবীরা অব্যাহতির (ডিসচার্জ) আবেদন করেন। সেই আবেদন নামঞ্জুর করে আদালত অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন।

দুটি মামলার একটিতে আসামি সংখ্যা ১৭৯ জন এবং অপরটিতে ৩৪ জন।

চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আনোয়ারুল কবীর বাবুল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এক মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২ জুন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কেরানীগঞ্জের হজরতপুর সাকিনস্থ মেঘু মিয়া মাতুব্বর হাফেজিয়া মাদ্রাসা এবং আমান জামে মসজিদে গোপনে ইফতারের আয়োজন করে বিএনপির নেতাকর্মীরা। সেখানে আমান উল্লাহ আমান উপস্থিত হলে আয়োজন নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।

বিষয়টি জেনে সেখান চেয়ারম্যান আয়নালসহ আওয়ালী লীগের ৩০/৪০ জন উপস্থিত হন। এ সময় বিএনপির ৩০০/৪০০ নেতাকর্মী পিস্তল, রিভলবার, ককটেল বোমা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা করে। ককটেল বিস্ফোরণে চেয়ারম্যানসহ কয়েকজন আহত হন।

এ ঘটনায় হজরতপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহের আলী ৪ জুন মামলাটি দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০১৮ সালের ১৮ নভেম্বর আমান উল্লাহ আমানসহ ১৮১ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন কলাতিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক শাহ আলম। পরে দুই আসামি মারা যাওয়ায় ১৭৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করা হয়।

আরেক মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১৩ সালের ২৭ নভেম্বর ১৮ দলের ডাকা সড়ক, রেল, নৌপথ অবরোধের অংশ হিসেবে নেতাকর্মীরা কেরানীগঞ্জের ঘাটারচর এলাকায় যানবাহনের গতিরোধ করে। গাড়িতে ভাঙচুর করে। একটি ট্রাকে আগুন ধরিয়ে দেয়। পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়ে বাঁধা দিলে বিএনপির নেতাকর্মীরা তাদের ওপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে।

এ ঘটনায় কেরানীগঞ্জ মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কেরামত আলী ২৮ নভেম্বর মামলাটি করেন। পরে ২০১৪ সালের ১৭ জুলাই মামলাটি তদন্ত করে একই থানার উপপরিদর্শক অশোক কুমার ৩৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

বিবার্তা/লিমন