সংসদ নির্বাচন: স্মার্ট বাংলাদেশের রূপরেখা দিবে আওয়ামী লীগ
প্রকাশ : ০৮ অক্টোবর ২০২৩, ১৮:০৬
সংসদ নির্বাচন: স্মার্ট বাংলাদেশের রূপরেখা দিবে আওয়ামী লীগ
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার ইশতেহার দিয়েছিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এরপর ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইশতেহার ছিল ‘শান্তি গণতন্ত্র উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ’। আর সর্বশেষ ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ শীর্ষক ইশতেহার ঘোষণা করেছিল দলটি।


দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি আর মাত্র তিন মাস। আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনি ইশতেহারে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার হয়েছে। দেশ ডিজিটাল হওয়ার মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য, লেন-দেন, কৃষি, চিকিৎসা, গণমাধ্যম, মহাকাশ ও সমুদ্র গবেষণাসহ সব ক্ষেত্রেই লেগেছে প্রযুক্তির ছোঁয়া। বিশ্বায়নের সঙ্গে তালমিলিয়ে প্রযুক্তি ক্ষেত্রে দেশকে আরো এগিয়ে নেয়ার চিন্তা-ভাবনা করছে দলটি। আর তাই এবারের নির্বাচনের ইশতেহারে ডিজিটাল বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরের রূপরেখা দেয়া হবে।


ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বলছেন, স্মার্ট বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রযুক্তি সমৃদ্ধ ও স্বচ্ছ একটা রাষ্ট্র গড়ার পরিকল্পনা আওয়ামী লীগের। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার ভিত্তি চারটি, এগুলো হচ্ছে- স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট সোসাইটি। যেখানে ভোগান্তি ছাড়াই প্রত্যেক নাগরিক সেবা পাবে, থাকবে সুশাসন। সরকারের কার্যক্রমের দায়বদ্ধতা ও স্বচ্ছতা থাকবে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে মানুষের জীবনযাপন এবং কাজের পদ্ধতিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসবে বলে মনে করছেন তারা।


দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন সামনে রেখে সময়োপযোগী ইশতেহার তৈরিতে মনোযোগী হয়েছে আওয়ামী লীগ। ইতোমধ্যে নির্বাচনি ইশতেহারের জন্য জনমত চেয়ে গণবিজ্ঞপ্তিও দেয়া হয়েছে। গত ৩ অক্টোবর জনমত চেয়ে আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং ইশতেহার প্রণয়ন উপ-কমিটির সদস্য সচিব ড. সেলিম মাহমুদ স্বাক্ষরিত একটি গণবিজ্ঞপ্তি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।


চিঠিতে ইশতেহারে কী কী বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে এবং আবারও সরকার গঠন করলে আওয়ামী লীগ কী কী নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে? জনমতে দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ও কমিউনিটি লিডারদের কাছে এসব বিষয়ে মতামত চেয়েছে দলটি। গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গণমানুষের দল আওয়ামী লীগের ইশতেহার কেবলমাত্র একটি দলীয় ইশতেহার নয়, এটি প্রকৃত অর্থে গোটা জাতির ইশতেহার। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের কাছ থেকে কী প্রত্যাশা করে সেটি গুরুত্বপূর্ণ।


গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে দলের নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন উপ-কমিটির প্রথম সভা হয়। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশের জন্য, বাংলাদেশের জনগণের জন্য শেখ হাসিনা আল্লাহর রহমতের দান। ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়ে গেছে এখন স্মার্ট বাংলাদেশ। স্মার্টনেস কিভাবে আসবে, কিভাবে এর বিকাশ ঘটবে। এই বিষয়গুলো আমাদের চিন্তা করতে হবে। ইশতেহার তৈরিতে ২০৪১ সাল মাথায় রাখতে হবে।


জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বিবার্তাকে বলেন, গত নির্বাচনের আগে যে ইশতেহার ছিল তা পূরণ হয়েছে। নাগরিকদের স্মার্টলি সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে স্মার্ট নেতৃত্ব দরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মতো স্মার্ট নেতৃত্বে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে দেশকে উন্নয়ন-অগ্রগতির চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাবো।


তিনি বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার লক্ষ্যে নতুন রূপকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। সরকার ও সমাজকে স্মার্ট করে গড়ে তুলতে ইতিমধ্যেই বিশাল কর্মযজ্ঞ সম্পাদিত হয়েছে। স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে যারা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সারথি হবেন, তাদের চিন্তা-চেতনা, শিক্ষা-দীক্ষাসহ সব ক্ষেত্রে স্মার্ট হতে হবে।


এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী বিবার্তাকে বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের পরবর্তী ধাপ স্মার্ট বাংলাদেশ। ২০৪১ সালের টার্গেটে আওয়ামী লীগ জাতির সামনে স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্য নিয়ে এসেছে। সেই স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমরা এগিয়ে যাব। ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপরেখা যখন আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে দেয়া হয়েছিল তখন অনেকেই কটাক্ষ করেছিল। যারা অপরাজনীতি, প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে তারাই কটাক্ষ করেছে। অথচ আজ তারাই সুবিধা ভোগ করছে।


তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার স্মার্ট নেতৃত্বেই স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ হবে। তিনি বাংলাদেশকে উন্নত, সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করছেন। আওয়ামী লীগের নীতি-আদর্শই হচ্ছে জনগণের কল্যাণ সাধন করা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ধারণ করে তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করে যাচ্ছেন।


সুজিত রায় নন্দী বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ হবে তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর। প্রতিটি নাগরিককে তথ্য-প্রযুক্তিতে দক্ষ করে গড়ে তোলা হবে। স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকনোমি, স্মার্ট সোসাইটি গড়ার লক্ষ্যেই আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে।


আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. আব্দুস সবুর বিবার্তাকে বলেন, ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলেছিল। ডিজিটাল বাংলাদেশের ঘোষণার ১৪ বছর পার হয়েছে। বাংলাদেশ আজ আইটি নির্ভর দেশ হিসেবে স্বীকৃত। সারা দেশের মানুষ প্রযুক্তি ব্যবহারে উপকার পাচ্ছে।


তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধ্যুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে চাই। ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশে সবকিছু হবে প্রযুক্তি নির্ভর। নাগরিকরা প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ হবে, প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশের সমগ্র অর্থনীতি পরিচালিত হবে। আমরা বঙ্গবন্ধ্যুকন্যার নেতৃত্বে সেই লক্ষ্য অর্জনেই কাজ করছি।


বিবার্তা/সোহেল/রোমেল

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com