দেশবাসী কোন বিদেশি হস্তক্ষেপ বরদাশত করবে না: বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোট
প্রকাশ : ২৪ জুন ২০২৩, ১৪:১০
দেশবাসী কোন বিদেশি হস্তক্ষেপ বরদাশত করবে না: বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোট
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

শতাব্দীব্যাপী পৃথিবীর বহু দেশে হস্তক্ষেপ করে এই পরাশক্তিরা মানুষের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার কথা বলে দেশগুলিকে ধ্বংস করেছে। বাংলাদেশে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ক্ষমতায় আজ্ঞাবহ সরকার প্রতিষ্ঠা করতে নানামুখী ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। তথাকথিত ভিসা নীতি, স্যাংশন ইত্যাদির ভয় দেখাচ্ছে। অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমির বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। কিন্তু দেশবাসী কোন বিদেশি হস্তক্ষেপ বরদাশত করবে না।


২৪ জুন, শনিবার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে দেশের বিরুদ্ধে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র, সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে পরিকল্পিত অপপ্রচার, ধর্মের ছদ্মবরণে উগ্রবাদ ও নাশকতার চেষ্টাসহ মিথ্যাচার ও ভ্রষ্টাচারের প্রতিবাদে বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোট আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরী এসব কথা বলেন।


সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, দেশীয় ষড়যন্ত্রকারীরা ২০০৪ সাল থেকে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করার নানামুখী ষড়যন্ত্র করে আসছিল। ২০০৮ এর নির্বাচন বানচাল, পরবর্তীতে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার নানামুখী ষড়যন্ত্র করে আসছিল। এ দেশের শাসনভার গ্রহণ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সরকার দ্রুততম সময়ে দেশের নজিরবিহীন উন্নতি করে চলছে। ব্রিজ, কালভার্ট, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মাদ্রাসা, কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়- কলেজ সহ নানান অবকাঠামো টেকসই উন্নয়নের জোয়ার দেখে বিশ্ববাসী অবাক বিস্ময়ে বাংলাদেশকে লক্ষ্য করছে। পদ্মার মত দুরন্ত নদীর বুকে নিজ অর্থায়নে সেতু নির্মাণ, মেট্রোরেল, পাতাল রেল ইত্যাদি নির্মাণ করে দেখিয়ে দিয়েছেন আমরা ও পারি।


মিছবাহুর রহমান চৌধুরী বলেন, যারা ধাক্কা দিয়ে সরকার ফেলে দেয়ার স্বপ্নে বিভোর ছিলেন, তারা হতাশ হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ, বয়কট, আংশিক অংশগ্রহণ প্রতিরোধ ইত্যাদি নাটক করে, কোন কুল কিনারা করতে না পেরে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছেন।


সাম্রাজ্যবাদীরা ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে তাদের কাঁধে ভর করে বাংলাদেশকে তাদের তাবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করার চক্রান্ত শুরু করেছে। বাংলাদেশ এর স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া এজেন্টদের মাধ্যমে সরকারকে দুর্বল করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। ভৌগলিক কারণে বাংলাদেশে সাম্রাজ্যবাদীরা চায় তাদের আজ্ঞাবহ সরকার প্রতিষ্ঠা করতে। এ লক্ষ্যে তাদের দেশীয় এজেন্টদেরকে লেলিয়ে দিয়েছে।


তিনি বলেন, বাংলাদেশে কিছু ধর্মান্ধ উগ্রবাদী ও ক্ষমতা লোভীদের দেশের বিরুদ্ধে মাঠে নামিয়েছে। ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের মাধ্যমে বাংলাদেশে নানান অপতৎপরতা চালিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার বহুমুখী কার্যক্রম শুরু করেছে। একশ্রেণীর তথাকথিত আল্লামা, পীর নামধারী ব্যক্তিরা মিথ্যা বক্তব্য দিয়ে কিংবা কার্যক্রম চালিয়ে ধর্মের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করছে। দেশের ক্রান্তিলগ্নে বাংলাদেশ ইসলামি ঐক্য জোট কখনো নিরব ভূমিকা পালন করেনি।


বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোট চেয়ারম্যান বলেন, দেশপ্রেমিক স্বাধীনতার সপক্ষে সমমনা রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ওলামা মাশায়েখ তরিকত পন্থীদের কে নিয়ে আমরা একটি জোট গঠনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। শীঘ্রই জোটের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হবে ইনশাআল্লাহ। বাংলাদেশ ইসলামিক ঐক্যজোট মনে করে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলির মতামতের ভিত্তিতে বাংলাদেশের নির্বাচন হবে। দেশবাসী কোন বিদেশি হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করবে না। সকল রাজনৈতিক দল আলাপ আলোচনা করে সংবিধান রক্ষা করে একটি নিরপেক্ষ অংশগ্রহণমূলক সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সক্ষম হবে।


দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীরা দেশের সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে, দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের গৌরব আমাদের প্রিয় সেনাবাহিনী যখন সারা বিশ্বে পেশাদারিত্ব দায়িত্ব পালন করে দেশের গৌরব বয়ে আনছে তখন দেশের ভিতরে বসবাসকারী ষড়যন্ত্রকারীরা বিভিন্ন এনজিও গোষ্ঠীর মাধ্যমে দেশের সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে তাদের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। সরকারের ভিতরে ঘাপটি মারা এক শ্রেণীর লোক এদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছে। ষড়যন্ত্রকারীরা ঈদুল আযহার পর দেশব্যাপী নাশকতা শুরু করার পরিকল্পনা করছে। হত্যা, রাহাজানি, আগুন সন্ত্রাস করে দেশকে অস্থিতিশীল করার পরিকল্পনা করছে।


সরকারের একটি অংশ এদের মাস্টারমাইন্ড দেরকে জানা সত্ত্বেও এদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। শোকের মাস আগস্টে এরা এদের কর্মসূচি জোরদার করবে- বলেন তিনি।


এসময় তিনি ষড়যন্ত্রকারী মিথ্যাচারী, ধর্মের অপব্যাখ্যা কারীদের বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে নানা কর্মসূচির ঘোষণা করেন। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আগামী ১৫ জুলাই বাইতুল মোকাররম উত্তর গেইট থেকে বিক্ষোভ মিছিল, ১৭ জুলাই থেকে ২৮ জুলাই পর্যন্ত ঢাকা মহানগরের সব কয়টি থানায় জনসভা পথসভা ও কর্মী সমাবেশ, ২৯ জুলাই ঢাকার গুলিস্তান বশির অডিটরিয়াম-এ সুধী সমাবেশ, ১ আগস্ট থেকে পুরা মাস বঙ্গবন্ধু সহ ১৫ আগস্ট এর শহীদদের স্মরণে নানান কর্মসূচি পালন করা হবে এবং ৭ অক্টোবর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ।


বিবার্তা/সোহেল/জবা

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com