‘আ.লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশে ৭৪’র দুর্ভিক্ষ ফিরে আসবে’
প্রকাশ : ১১ মার্চ ২০২৩, ১৭:১৯
‘আ.লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশে ৭৪’র দুর্ভিক্ষ ফিরে আসবে’
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার নিজ দলের নেতাকর্মীদের জীবনমান উন্নত করছে, প্রশাসনের দলবাজ, দুর্বৃত্ত, ঘুষখোর কর্মকর্তাদের অবাধ লুন্ঠনের সুযোগ করে দিয়েছে। এই সরকার অব্যাহত থাকলে আবার ৭৪ এর দুর্ভিক্ষ ফিরে আসবে। তাই জাতির স্বার্থে এই সরকারকে বিদায় করে দিতে হবে।


১১ মার্চ, শনিবার বেলা এগারোটায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দেশব্যাপী অগ্নি বিস্ফোরণের সুষ্ঠ তদন্ত, আহত ও নিহতদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ এবং জননিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবীতে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নিয়ে বক্তারা এসব কথা বলেন।


দলের যুগ্ম আহবায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনারের সভাপতিত্বে ও যুব পার্টির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক এম ইলিয়াস আলীর পরিচালনায় এই বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম।


অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, রাষ্ট্রের দায়িত্ব হচ্ছে সকল নাগরিকের জীবন যাত্রা সহজ করা - সমৃদ্ধ করা। অথচ আমাদের রাষ্ট্র আমাদের নাগরিকদের জীবন কঠিন শুধু নয় বরং ক্রমাগত অসহনীয় করে তুলছে । এরা শুধুমাত্র আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের জীবনমান উন্নত করছে, প্রশাসনের দলবাজ, দূর্বৃত্ত, ঘুষখোর কর্মকর্তাদের অবাধ লুন্ঠনের সুযোগ করে দিয়েছে।


এই সরকার অব্যাহত থাকলে আবার ৭৪ এর দুর্ভিক্ষ ফিরে আসবে। তাই জাতির স্বার্থে এই সরকারকে বিদায় করে দিতে হবে। তারা হজ্বের খরচ বাড়িয়ে মুসলমানদের আজীবনের কাংখিত এক মহা ইবাদত পালন কে কঠিন করেছে- আবার রমজানের দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে সিয়াম সাধনা কে অসম্ভব করে দিতে চায় । এরা দেশে ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।এদের এই দেশ শাসনের কোন অধিকার নেই।


বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে বিশেষ করে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, গ্যাস কোম্পানি, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন, এসমস্ত প্রতিষ্ঠান থেকে সরকার জোরজবরদস্তি মূলক অতিরিক্ত অর্থ উত্তোলন করে উন্নয়নের নামে লুটপাট করেছে। এই প্রতিষ্ঠান গুলো আর্থিকভাবে চরম ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। ফলে মানুষকে যথাযথ সেবা পারছে না। বিশেষ করে রক্ষণাবেক্ষণের বিঘ্নিত হওয়ার কারণে এই দূর্ঘটনাগুলো সংগঠিত হচ্ছে।


কিছু অসৎ ও চাটুকার আমলা জড়িত থাকায় এই লুটপাট গুলো বেশি হচ্ছে। আহত নিহতদেরকে যে পরিমান ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে তা হলো মরুভূমিতে এক ফোটা পানি দেওয়ার সামিল। অপর্যাপ্ত, লোকদেখানো, হাস্যকর এবং মর্মবিদারক, নিহতদের পরিবার প্রতি পাঁচ কোটি টাকা দিতে হবে, যারা আহত হয়েছে তাদের দুই কোটি টাকা দিতে হবে। জননিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়ার মূল কারণ সরকার আমাদের জননিরাপত্তার সঙ্গে জড়িতদের নিজেদের দলীয় পকেটে পুরে রেখেছে, তাদেরকে স্বাধীন ভাবে কাজ করতে দিচ্ছে না।


দলের যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ২০১০ সালে আমরা দেখেছি যে, নিমতলীতে আগুন লেগে ১২৪ জন মারা গেছে, ২০১৯ সালে চকবাজারে ৭৮ জন প্রাণ হারিয়েছে কিন্তু গত কয়েক যুগ ধরে বাসযোগ্যহীন হয়ে পড়া পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিক পদার্থের গোডাউন ও বিপদজ্জনক প্লাস্টিকের কারখানা সরানোর কোন উদ্যোগ নেই। আর কত প্রাণ ঝরালে পরে হীরক রাজার দেশের সরকার মহাশয়ের ঘুম ভাঙবে। জবাবদিহিতাহীন ও সম্মতিবিহীন শাসনের ভোগান্তি আর কতদিন চলবে?


সভাপতির বক্তব্যে প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার বলেন, দুর্ঘটনা সব দেশেই ঘটে থাকে। যেমনটা আমাদের দেশেও ঘটেছে। বিবেচ্য বিষয় হচ্ছে দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য কর্তৃপক্ষের সতর্কতা কতটুকু ছিল এবং দুর্ঘটনা পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় কর্তৃপক্ষ বা সরকার কি ভূমিকা পালন করেছে! আমাদের দেশে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও দায়িত্বহীনতার কারণে এই সমস্ত দুর্ঘটনা ঘটে থাকে যা সহজেই এড়ানো যেত।



দুর্ঘটনা পরবর্তী সময়ে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সঠিক ভূমিকা না রাখার কারণে জান মালের ক্ষয়ক্ষতি অনেক বেশি হয়েছে যার উপর জনগণ আস্থা রাখতে পারছে না। সরকার তিতাস, রাজউক, সিটি কর্পোরেশন সহ বিভিন্ন স্বায়ত্তশাসিত উপর খবরদারি করে তাদের স্বাভাবিক কাজ বিঘ্নিত করছে, তারা স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে চাইলে তাদের হুমকি ধমকি, তাদের অন্যায়ভাবে বদলি করা, তাদের চাকুরিচ্যুত করার মত ভয় দেখিয়ে দাবিয়ে রাখা হয়।


তাদের স্বাভাবিক কাজ করতে পারলে জননিরাপত্তা এমন বিঘ্নিত হতো না। আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি সরকারের এই অন্যায় হস্তক্ষেপ অবিলম্বে বন্ধ করা হোক। এই দেশের মানুষ কোনো দিনই অন্যায় কারীদের ক্ষমা করবে না। তাদের বিচার এই দেশের মাটিতেই হবে। এক বছর পরে হোক, দশ বছর পরে হোক বা বিশ বছর পরে হোক।


বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন পার্টির সহকারী সদস্য সচিব এম আমজাদ খান, যুব পার্টির সদস্য সচিব শাহাদাতুল্লাহ টুটুল, গাজীপুর মহনগরীর আহবায়ক প্রকৌশলী আলমগীর হোসেন, ঢাকা মহনগরীর যুগ্ম আহবায়ক গাজী নাসির, মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব ফিরোজ কবির, যুবনেতা মাসুদ জমাদ্দার রানা, পরিবেশবিদ ইকবাল হোসেন, লুৎফুর রহমান, যুবনেত্রী সুলতানা রাজিয়া, শীলা আক্তার, রাশিদা আক্তার মিতু, ফেরদৌসী আক্তার অপি, আব্দুর রব জামিল, মাওলানা শফিকুল ইসলাম, শ্রমিক নেতা শহীদুল ইসলাম সহ কেন্দ্রীয়, মহানগর, যুব ও ছাত্র বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।


বিক্ষোভ সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন, দপ্তর সম্পাদক অ্যাড. আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, যুব পার্টির আহবায়ক এবিএম খালিদ হাসান, মহানগরী উত্তরের আহবায়ক আলতাফ হোসেন, শ্রমিক নেতা শাহ আব্দুর রহমান, নারায়নগঞ্জ জেলা সমন্বয়ক শাহজাহান ব্যাপারী, ছাত্র বিষয়ক সমন্বয়ক মোহাম্মদ প্রিন্স।


বিবার্তা/মিনহাজুল/এমএ


সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com