ছাত্রলীগ শুনে ক্ষিপ্ত, মুখ থেঁতলে দাঁত ভাঙেন এডিসি হারুন
প্রকাশ : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:৫২
ছাত্রলীগ শুনে ক্ষিপ্ত, মুখ থেঁতলে দাঁত ভাঙেন এডিসি হারুন
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

রাজধানীর শাহবাগ থানায় পুলিশের হাতে মারধরের শিকার ছাত্রলীগ নেতা আনোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের কাছে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন।


তিনি জানান, শুধু পুলিশ সদস্যরা নয়, ডিএমপির রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদ নিজেই ছাত্রলীগ নেতাদের মারধর করেছেন।


ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।


শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতের নির্মম নির্যাতনের কথা বলতে গিয়ে বারবার গলা ভারী হয়ে উঠছিল ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হল শাখার সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাইমের।


সাংবাদিকদের কাছে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আনোয়ার হোসেন বলেন, রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিব আজিজুল হক তার এলাকার বড় ভাই। তাদের বাড়ি গাজীপুরে। আজিজুল শনিবার সন্ধ্যায় ফোন করে তাকে ঢাকার শাহবাগের হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে যেতে বলেন।


রাত আটটার দিকে তিনি সেখানে যান। বড় ভাই বারডেম জেনারেল হাসপাতালে আছেন জেনে সেখানে ছুটে যাই। হাসপাতালের চারতলায় গিয়ে দেখি রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিব আজিজুল হক ও পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার হারুন অর রশিদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হচ্ছে। আমিসহ ছাত্রলীগের আরও দুই নেতা মিলে তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করি।


এই ছাত্রলীগ নেতার ভাষ্য, এডিসি হারুন ঘটনার একপর্যায়ে শাহবাগ থানার ওসিকে (তদন্ত) ফোন করে হাসপাতালে ডেকে নেন। পুলিশ গিয়ে আজিজুল, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাহবুবুর রহমানকে মারধর করে। পরে হাসপাতাল থেকে পুলিশ জোর করে আজিজুলসহ তিন-চারজনকে গাড়িতে থানায় নিয়ে যায়।


আনোয়ার হোসেন বলেন, আমি ফোনে রমনা বিভাগের উপকমিশনারকে (মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন) মারধরের ঘটনাটি জানিয়ে শাহবাগ থানায় যাই। গিয়ে দেখি ওসি তদন্তের কক্ষে সবাইকে আটকে রেখে মারধর করা হচ্ছে। এডিসি হারুন ও ওসিও মারধর করছেন।


ওসির কক্ষের দরজা টেনে ভেতরে ঢুকতেই ১০ থেকে ১৫ জন আমার ওপর হামলা করেন। আমার মুখে কিলঘুষি মারেন। একপর্যায়ে আমাকে নিচে ফেলে পা দিয়ে লাথি মারেন। হারুন তার পিস্তলের বাট দিয়ে আমার মুখ থেঁতলে দেয়, এতে আমার দাঁত ভেঙে যায়।


এডিসি হারুন ও মামুনের মধ্যে কী নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়েছিল জানতে চাইলে ছাত্রলীগের এ নেতা বলেন, কী নিয়ে তাদের মধ্যে সমস্যা তা আমি জানি না। আমি মামুন ভাইয়ের ফোন পেয়ে সেখানে যাই এবং সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করি।


ছাত্রলীগ পরিচয় দেওয়ায় এডিসি হারুন আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন জানিয়ে নাইম বলেন, আমাকে যখন মারা হচ্ছিল তখন আমি এডিসি হারুনকে বলি, আমি ফজলুল হক হলের ছাত্রলীগের সভাপতি এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক। তখন সে আমাকে বলে, কীসের ছাত্রলীগ, আমি ছাত্রলীগ থেকে কোনো সুবিধা গ্রহণ করি না। ছাত্রলীগ পরিচয় পাওয়া পর আমার ওপর আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন তিনি। ছাত্রলীগকে গালাগাল করে আমাকে আরও মারতে থাকেন।


জানা যায়, বিসিএস ৩৩ ব্যাচের এক নারী পুলিশ কর্মকর্তা অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) চিকিৎসার জন্য শাহবাগে বারডেম হাসপাতালে আসছিলেন। সেখানে পুলিশের ৩১ ব্যাচের এডিসি হারুনও আসেন। তারা কথা বলেন হাসপাতালের চার তলায়। সেখানে ওই নারী কর্মকর্তার স্বামী ও রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিব আজিজুল হক ছাত্রলীগের নেতাদের ডেকে নিয়ে আসেন। হাসপাতালের ভেতরেই তাদের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। পরে হারুন ওয়্যারলেসে পুলিশ ফোর্স ডেকে এনে ছাত্রলীগের দুই নেতাকে শাহবাগ থানার পরিদর্শকের (তদন্ত) কক্ষে নিয়ে পেটান। ১০ থকে ১৫ জন পুলিশ সদস্য তাদের বেধড়ক পেটান। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ছাত্রলীগের নেতারা এসে তাদের উদ্ধার করেন।


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com