তত্ত্বাবধায়ক কিংবা জাতিসংঘের অধীনে নির্বাচন সম্ভব নয়: আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক দল
প্রকাশ : ২০ আগস্ট ২০২৩, ১৯:৫৭
তত্ত্বাবধায়ক কিংবা জাতিসংঘের অধীনে নির্বাচন সম্ভব নয়: আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক দল
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

‘বাংলাদেশের আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিংবা জাতিসংঘের অধীনে নির্বাচন সম্ভব নয়’ বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ইলেকশন অবজারভেশন মিশন (আইইওআর)।


সংস্থাটি বলেছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন সম্ভব নয়। এটা হবে অসাংবিধানিক ও আইনবিরোধী। এর কোন আইনি ভিত্তি নেই। জাতিসংঘের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ারও তেমন কোন সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ইলেকশন অবজারভেশন মিশন। কোন দেশে নির্বাচন পরিচালনার নজির জাতিসংঘের নেই বললেই চলে।


বাংলাদেশে চলতি বছরের ডিসেম্বর বা আগামী বছরের জানুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন। নির্বাচন আয়োজনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল করার দাবিতে আন্দোলন করছে বিরোধী দলগুলো। জাতিসংঘের অধীনে নির্বাচনের দাবিও তুলেছেন কেউ কেউ।
এমন পরিস্থিতিতে ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবেদ আলীর আমন্ত্রণে সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরে আসে একটি আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক দল। মূলত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন, জাতিসংঘের অধীনে নির্বাচন ও বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন-এই তিনটি বিষয় খতিয়ে দেখেছে দলটি। শুক্রবার (১৮ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো প্রতিবেদনে পর্যবেক্ষণের ফলাফল তুলে ধরা হয়েছে।


তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, এটা হবে অসাংবিধানিক ও আইনবিরোধী কেননা, তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন, নিয়োগ ও অনুমোদন বিষয়ে আইনি কোনো কাঠামো নেই। এছাড়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কর্তৃত্ব আদালতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। জাতিসংঘের অধীনে নির্বাচন নিয়ে পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের পক্ষ থেকে কোনো দেশের নির্বাচন পরিচালনা করার ঘটনা খুবই বিরল। তারা যে বাংলাদেশে এমনটা করবে এমন সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। যদি জাতিসংঘের অধীনে নির্বাচন করতে হয়, সেজন্য বাংলাদেশ সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করতে হবে। এরপর এ ব্যাপারে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ বা সাধারণ পরিষদে একটি প্রস্তাব পাস হতে হবে। নির্বাচনের নির্ধারিত সময়ের আগে পুরো বিষয়টি সম্পন্ন করার মতো সময় হাতে নেই।
সবশেষ বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশনের অধীনে নির্বাচনের ব্যাপারে বলা হয়েছে, সমগ্র নির্বাচনী প্রক্রিয়া তদারকির লক্ষ্যে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গঠিত নির্বাচন প্রশাসন অত্যন্ত কেন্দ্রীভূত। বাংলাদেশের সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির অনুমতিক্রমে একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কয়েকজন সহযোগী কমিশনারের সমন্বয়ে এই কমিশন গঠিত হয়।


পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমান নির্বাচন কমিশন (ইসি) সাংবিধানিকভাবে অনুমোদিত এবং স্বাধীন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। কমিশনের কাছে নির্বাচন স্থগিত করার ক্ষমতা রয়েছে। যদি তারা নির্বাচনে কোন কারচুপি হয়েছে বলে মনে করে তাহলে সেই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে এবং অতীতে কোন দলের আপত্তির প্রেক্ষিতে তারা সেটা করেছে। নির্বাচন কমিশনের একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন আয়োজন করার আইনি ভিত্তি ও কাঠামো রয়েছে এবং সেটা করার ক্ষেত্রে এটিই অনুমোদিত একমাত্র সংস্থা।
পর্যবেক্ষণের প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন এই পর্যবেক্ষক মিশনকে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এখন শুধু সময়ই বলবে নির্বাচন কমিশন তার স্বাধীন ক্ষমতা ও সাংবিধানিক কর্তৃত্ব সঠিকভাবে ব্যবহার করবে কিনা। তবে আমাদের আশা, তারা সেটা করবে। এক্ষেত্রে যেকোনো ব্যর্থতা বাংলাদেশের উন্নয়ন ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা তৈরি হতে পারে। বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সব পক্ষের কাছে বৈধ হিসেবে গ্রহণযোগ্য হওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ।


বিবার্তা/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com