জাতীয়
মিনিকেট চাল অবৈধ ঘোষণা করে সংসদে বিল পাস
প্রকাশ : ০৬ জুলাই ২০২৩, ১৫:৪৬
মিনিকেট চাল অবৈধ ঘোষণা করে সংসদে বিল পাস
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

যাবজ্জীবন বা সর্বোচ্চ ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডের বিধান রেখে জাতীয় সংসদে ‘খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন (ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) বিল-২০২৩’ পাস করা হয়েছে। আইনটি কার্যকর হলে পলিশিং ও কাটিংয়ের মাধ্যমে তৈরি করা মিনিকেট চাল বিক্রি ও সরবরাহ আইনগতভাবে অবৈধ হবে।


৫ জুলাই, বুধবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে এসব বিধান রেখে ‘খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন (ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) বিল, ২০২৩’ পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। পরে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে, বিরোধী দলের সদস্যদের আনা জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি করেন স্পিকার।


বিলে বলা হয়েছে, কোনো অনুমোদিত জাতের খাদ্যশস্য থেকে উৎপাদিত খাদ্যদ্রব্যকে ওই রূপ জাতের উপজাত পণ্য হিসেবে উল্লেখ না করে ভিন্ন বা কাল্পনিক নামে বিপণন করলে বা খাদ্যদ্রব্যের স্বাভাবিক উপাদানকে সম্পূর্ণ বা আংশিক পরিবর্তন করে উৎপাদন বা বিপণন করলে সেটি অপরাধ হবে।


কোনো ব্যক্তি পুরাতন খাদ্যদ্রব্য পলিশিং বা অন্য কোনো খাদ্যদ্রব্যের সঙ্গে মিশ্রণ করে; আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে খাদ্যদ্রব্যের পরিমাণগত বা গুণগত পরিবর্তন করে বা অন্য কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে সরকারি গুদামে সরবরাহ করলে তা হবে অপরাধ। এর সাজা হবে সর্বোচ্চ ২ বছর কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ড।


বিলের এসব বিধান অনুযায়ী পলিশিং ও কাটিংয়ের মাধ্যমে তৈরি মিনিকেট চাল বিক্রি ও সরবরাহ আইনগত অবৈধ হবে। এছাড়া খাদ্যদ্রব্যের সঙ্গে মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কৃত্রিম উপাদান মিশ্রণ করে উৎপাদন ও বিপণন করাও হবে অপরাধ। লাইসেন্স ছাড়া বা মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্স দিয়ে ব্যবসা চললেও তা অপরাধ হবে।


বিলে খাদ্যদ্রব্যের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে যেকোনো প্রকার দানাদার খাদ্যদ্রব্য, যথা চাল, ধান, গম, আটা, ভুট্টা ইত্যাদি। কোনো ব্যক্তি সরকার নির্ধারিত পরিমাণের বেশি পরিমাণ খাদ্যদ্রব্য মজুত করলে বা মজুত-সংক্রান্ত সরকারের কোনো নির্দেশনা অমান্য করলে তা হবে অপরাধ। এর শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড। তবে এ ধরনের অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি প্রমাণ করতে পারেন যে তিনি আর্থিক বা অন্য কোনো প্রকার লাভের উদ্দেশ্য ছাড়া মজুত করেছিলেন, তাহলে তিনি সর্বোচ্চ তিন মাস কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এ অপরাধ হবে জামিন অযোগ্য।


আইন পাসের আগে ব্যবসায়ি সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে গণফোরামের মোকাব্বির খান বলেন, খাদ্যমন্ত্রী নিজেও একজন ব্যবসায়ি। ব্যবসায়ি সিন্ডিকেটের কারণে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ফসলের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। তাই মজুতের সঙ্গে জড়িত সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।


জবাবে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, মজুতদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনটি পাসের প্রস্তাব করা হয়েছে। আইনটি কার্যকর হলে খাদ্যদ্রব্য মজুতের সুযোগ থাকবে না বরং খাদ্য ও খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।


বিলে বলা হয়েছে, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণে প্রয়োজনীয় সংখ্যক আদালত থাকবে। এই আদালত ‘খাদ্যদ্রব্য বিশেষ আদালত’ নামে অভিহিত হবেন।


বিবার্তা/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com