
সম্পর্ক গভীর ও বিস্তৃত করার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অব স্টেট ডোনাল্ড লু’র সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ।
১৫ মে, বুধবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডোনাল্ড লুর সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে এ কথা বলেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন করতে ডোনাল্ড লুর এই সফর। তাই বৈঠকে দুই দেশের সম্পর্ক ঠিক রাখার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য সহযোগিতা চেয়েছি। যুক্তরাষ্ট্র পাশে থাকবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশের কর ব্যবস্থাকে আধুনিক করার পাশাপাশি কর ফাঁকি বন্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা করতে চায় বলে জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের দেশে ২৫ লাখ লোক কর দেয় কিন্তু এখানে কয়েক কোটি লোকের কর দেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে। কর ব্যবস্থাকে আধুনিক করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা করতে চায় এবং একই সঙ্গে কর ফাঁকি বন্ধের জন্য সহায়তা করতে চায়।
হাছান মাহমুদ বলেন, ২০২৬ সালে মধ্যম আয়ের দেশে উত্তরণ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ এবং আমরা এখন যে সুবিধা পাই, সেটি আর থাকবে না। এ বিষয়ে বাংলাদেশের যাত্রা যেন সমৃদ্ধ হয়, সেটির জন্য সহায়তা চেয়েছি। আমাদের বিজনেস বাস্কেটের ব্যাপ্তি বাড়ানোর জন্য আগে যে জিএসপি সুবিধা পেতাম এখন কিন্তু তা পাই না। সেটি তারাও ফিরিয়ে দিতে চায় এবং তারা প্রোগ্রাম যখন আবার শুরু করবে তখন এটি বাংলাদেশ পাবে। তবে এজন্য আমাদের শ্রমনীতি পুনঃপর্যালোচনা করতে হবে এবং এটি আমরা করছি। এটি নিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে সোমবার দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানোর জন্য এবং আর্থিক খাতকে শক্তিশালী করার জন্য তাদের(যুক্তরাষ্ট্র) ডেভেলপমেন্ট ফিন্যান্স করপোরেশন থেকে বাংলাদেশকে অর্থায়ন করতে চায়।
নির্বাচনের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লেখা এক চিঠিতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে ভিন্ন মাত্রায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছিলেন বলে জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, একক দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি বাজার এবং সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী। আমি অনুরোধ করেছি- আমরা যে ৪০টি আইটি ভিলেজ করার পরিকল্পনা করেছি, সেখানে কিছু মার্কিন বিনিয়োগ আছে এবং আরো যেন বিনিয়োগ বাড়ানো হয়। এছাড়া বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে যেন আরো মার্কিন বিনিয়োগ আসে।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। গাজায় শান্তি ফিরিয়ে আনার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে একমত হয়েছে। স্থায়ী যুদ্ধবিরতি তারাও চায়।
খুনি রাশেদ চৌধুরিকে ফেরতের প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটি তাদের বিচার বিভাগের অধীনে এবং সেখানে হোয়াইট হাউজ বা স্টেট ডিপার্টমেন্টের এখতিয়ার নেই। তবে তারা তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য সহায়তা করবে।
নির্বাচন বা মানবাধিকার নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে ইতিবাচক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। অতীতে কী ঘটেছে, সেটি আমরা দেখতে চাই না। আমরা ভবিষ্যতের দিকে তাকাতে চাই। র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়েও কোন আলাপ হয়নি বৈঠকে। নিষেধাজ্ঞা দেয়ার প্রক্রিয়া যেমন সময় সাপেক্ষ ছিল, উঠবেও সেভাবে।
হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশি ছাত্ররা যাতে যুক্তরাষ্ট্রের পড়াশোনার জন্য ব্যাপকভাবে সুযোগ পায় সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি (ডোনাল্ড লু) এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন। আমরা প্রস্তাব দিয়েছি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাথে এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম স্টাবলিশ করা যায় কিনা। বাংলাদেশের ৫৩ বছরের অভিযাত্রায় যুক্তরাষ্ট্র গঠনমূলক ভূমিকা রেখেছে।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]