
ব্যাংকের অভ্যন্তরে সংবাদকর্মীদের প্রবেশ ও তথ্য সংগ্রহের বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তিমূলক তথ্য পরিবেশিত হচ্ছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
১৫ মে, বুধবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যোগাযোগ ও প্রকাশনা (ডিসিপি) বিভাগের পরিচালক ও সহকারী মুখপাত্র সাঈদা খানম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, বাংলাদেশ ব্যাংকের অভ্যন্তরে সংবাদকর্মীদের প্রবেশ ও তথ্য সংগ্রহের বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তিমূলক তথ্য পরিবেশিত হচ্ছে।
বিষয়টি স্পষ্টীকরণের নিমিত্তে এ মর্মে সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, গণমাধ্যম কর্মীদের প্রদানযোগ্য সকল তথ্য সংগ্রহ ও পরিবেশনের জন্য নিম্নবর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে-
১) বাংলাদেশ ব্যাংক সম্পর্কিত গণমাধ্যমে প্রদানযোগ্য তথ্য প্রদান, তার ব্যাখ্যা ও সম্পূরক তথ্যাদি প্রদানের জন্য নির্বাহী পরিচালক পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা মুখপাত্র হিসেবে এবং পরিচালক পর্যায়ের দুইজন কর্মকর্তা সহকারী মুখপাত্র হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন। যে কোনো সংবাদকর্মী অফিস চলাকালীন সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মূল ভবনে প্রবেশ করে উল্লেখিত কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগপূর্বক তথ্য সংগ্রহ ও বক্তব্য গ্রহণ করতে পারেন।
২) কোনো বিশেষ প্রয়োজনে কোনো নির্দিষ্ট কর্মকর্তার নিকট থেকে প্রবেশ পাশ গ্রহণপূর্বক উক্ত কর্মকর্তার নিকট সংবাদকর্মীরা প্রয়োজনীয় তথ্যাদির ব্যাখ্যা গ্রহণ করতে পারেন।
৩) বাংলাদেশ ব্যাংক সময়ে সময়ে প্রেস কনফারেন্স, প্রেস রিলিজ ও অন্যান্য মাধ্যমে সংবাদকর্মীদের প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করছে।
৪) এছাড়াও অবাধ তথ্য প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিতকরণের নিমিত্তে বাংলাদেশ ব্যাংক তার নিকট সংরক্ষিত সকল অর্থনৈতিক তথ্য ও উপাত্ত ইহার ওয়েবসাইটে নিয়মিতভাবে প্রকাশ করে আসছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক গণমাধ্যমকর্মীদের মাধ্যমে দেশের জনসাধারণের কাছে সব প্রদানযোগ্য তথ্য দেয়ার জন্য বদ্ধপরিকর উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সে আলোকে বাংলাদেশ ব্যাংক বর্ণিত পদ্ধতিতে তথ্য সরবরাহ ও তার ব্যাখ্যা প্রদান করছে। জাতীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের জনগণের কাছে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহের বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে।
এর আগে গত ২৫ এপ্রিল বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এখন থেকে সাংবাদিকরা ব্যাংকের নির্দিষ্ট অনুমতিপত্র (প্রবেশ পাস) নিয়েই কেবল মুখপাত্রের কাছে যেতে পারবেন। আর কোনো কর্মকর্তা যদি সাংবাদিকদের পাস দেন, সে ক্ষেত্রে তারা শুধু সেই কর্মকর্তার কাছে যেতে পারবেন। তবে আগের মতো তারা অবাধে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো বিভাগে প্রবেশ করতে পারবেন না।
এরপর গত বুধবার (৮ মে) দুপুর আড়াইটায় বাংলাদেশ ব্যাংকের মূল ভবনের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে আইএমএফের ঋণের তৃতীয় কিস্তির ছাড় বিষয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে বিবি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে প্রোগ্রামটি বয়কট করেন শতাধিক সংবাদকর্মী।
সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ড. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, সাংবাদিকদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। এজন্য তাদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সপ্তাহে এক দিন করে বসবে।
তবে তার এ বক্তব্যের বিরোধিতা করে ওইদিন সংবাদ সম্মেলন বয়কট করেন সাংবাদিকরা। তারা জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই সিদ্ধান্ত মেনে নেয়া যায় না। এরপরই কনফারেন্স রুম ছেড়ে বাইরে অবস্থান করেন সম্মেলনে আগত সাংবাদিকরা।
এ প্রসঙ্গে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম বলেন, এই সিদ্ধান্তের মেনে নেয়া হবে না। সাংবাদিকদের আশ্বস্ত করেছিলেন গভর্নর। আমরা চিঠি দেয়ার পরও কোনো সিদ্ধান্ত তারা নেননি। এর প্রতিবাদে আমরা শতাধিক সাংবাদিক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংবাদ সম্মেলন বয়কট করেছি। সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার না পাওয়া পর্যন্ত বয়কটের সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।
ইআরএফের পক্ষ থেকে চিঠি দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে কাশেম আরও বলেন, সাংবাদিকরা সেনসিটিভ ইস্যু নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে বসতে চেয়েছে। সাংবাদিকরাই এই খাতের দুর্বলতা তুলে ধরেন। আমরা মনে করি, বাংলাদেশ ব্যাংকের শুভবুদ্ধির উদয় হবে এবং শিগগির সাংবাদিকরা প্রবেশাধিকার ফেরত পাবেন।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]