শিরোনাম
‘ছন্দে-জীবনান্দে’র মধ্যমণি লায়লা হাসান
প্রকাশ : ১৯ নভেম্বর ২০১৭, ১৫:৪৯
‘ছন্দে-জীবনান্দে’র মধ্যমণি লায়লা হাসান
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত, আবৃত্তি ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী লায়লা হাসানের ৭০তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হলো বর্ণাঢ্য আয়োজনে।


শনিবার (১৮ নভেম্বর) শিল্পকলা একাডেমি বিকেল পাঁচটায় আয়োজন করা হয় ‘ছন্দে-জীবনানন্দে ৭১-এ পা’ শীর্ষক আনন্দ অনুষ্ঠান।


নজরুল কবিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতেই নৃত্যের ছন্দে ছন্দে লায়লা হাসানকে মঞ্চে নিয়ে আসেন নৃত্যশিল্পীরা। এই পর্বটি পরিচালনা করেন শর্মিলা বন্দোপাধ্যায়। এরপর মঞ্চে আসেন অনুষ্ঠানের সভাপতি কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরের চেয়ারপার্সন ড. মাহফুজা খানম ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম।


এরপর শংসাবচন পাঠ করেন নাসিরউদ্দিন ইউসুফ। উত্তরীয় পরিয়ে দেন বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি অধ্যাপক ড. সফিউদ্দিন আহমদ, নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, নৃত্যগুরু আমানুল হক।


এছাড়া শিল্পী আব্দুল মান্নানের তৈরি করা লায়লা হাসানের প্রতিকৃতি তুলে দেন লায়লা হাসানের ৭০তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে গঠিত জাতীয় কমিটির দুই সদস্য সচিব জামসেদ আনোয়ার তপন ও জহিরুল ইসলাম।


লায়লা হাসানকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ নৃত্যশিল্পী সংস্থার সভাপতি মিনু হক। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিল্প-সংস্কৃতি অঙ্গনের বিশিষ্টজনেরা।


অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন ডালিয়া নওশিন, আব্দুল ওয়াদুদ ও অনিমা মুক্তি গোমেজ। আবৃত্তি পরিবেশন করেন কাজী মদিনা ও হাসান আরিফ। এছাড়া দলীয় সঙ্গীত নিয়ে মঞ্চে আসেন উদীচীর শিল্পীরা।


অনুষ্ঠানে লায়লা হাসানের কর্মময় সংগ্রামী জীবন নিয়ে আলোচনা, নাচ, গান, আবৃত্তিসহ সাংস্কৃতিক নানা পরিবেশনা ছিল। ছিল বিশিষ্ট ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন পর্ব।


লায়লা হাসান বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব। তার বাবা এম এ আওয়াল ও মা লতিফা আওয়াল চাকরীজীবী হলেও সংস্কৃতি চর্চায় আগ্রহী ছিলেন। জন্মের পর নানা তৎকালীন এমএলএ আলী আহমেদ খানের বন্ধু সঙ্গীতশিল্পী আব্বাসউদ্দীন আহমদ তার নাম রাখেন রোজী।


মামা অধ্যাপক খান সারওয়ার মুরশিদ, মামী নূরজাহান মুরশিদ। পরিবারে রাজনীতি ও সংস্কৃতির মেলবন্ধন থাকায় খুব ছোটবেলাতেই শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, সৈয়দ আজিজুল হক, বেগম সুফিয়া কামাল, তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া, হামিদুল হক চৌধুরীর মতো গুণী ব্যক্তিদের সান্নিধ্য পান লায়লা হাসান। ছোটবেলায় ওস্তাদ ম্রী মনিবর্ধনের কাছে হাতেখড়ি হয় নৃত্যশিক্ষার।


এরপর সাজেদুর রহমানের কাছে কিছুদিন নাচ শেখার পর বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে নৃত্যের তালিম নেন। ১৯৬১ সালে রবীন্দ্র জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ, অসহযোগ আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ তার জীবনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা।


নারী শিক্ষা মন্দিরে শিক্ষাজীবন শুরুর পর কামরুন্নেসা স্কুল, ইডেন কলেজ, সেন্ট্রাল উইমেন কলেজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষালাভ করেছেন লায়লা হাসান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে অধ্যয়ন করা লায়লা হাসান ছাত্রজীবনে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন ছাত্র ইউনিয়নের সাথে।


সেসময় রোকেয়া হল ছাত্র ইউনিয়নের সংস্কৃতি সম্পাদক ছিলেন তিনি। কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন সেসময় চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেতা সৈয়দ হাসান ইমামের সঙ্গে। বিয়ের পরও পুরোমাত্রায় সক্রিয় ছিলেন সাংস্কৃতিক আন্দোলনে।


শৈশব থেকেই নানা ধরনের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন লায়লা হাসান। বর্তমানে কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং সেক্টর কমাণ্ডারস ফোরাম মুক্তিযুদ্ধ-৭১’র নারী সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর উপদেষ্টামণ্ডলীরও অন্যতম সদস্য লায়লা হাসান।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের সাবেক সদস্য এবং বাংলাদেশ নৃত্যশিল্পী সংস্থার সাবেক সভাপতি লায়লা হাসান। এছাড়া এশিয়াটিক সোসাইটির সঙ্গেও যুক্ত আছেন সদস্য হিসেবে। তার তিন সন্তানও সক্রিয়ভাবে যুক্ত আছেন সংস্কৃতি চর্চার সঙ্গে।


বিবার্তা/শারমিন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com