১৯৯৯ সনের কথা। তখন মোবাইল ফোনের ব্যবহার প্রায় ছিলো না বললেই চলে। চিঠিপত্রই ছিলো যোগাযোগের প্রচলিত মাধ্যম। সদ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে চাকরীসূত্রে সুনামগঞ্জ চলে যেতে হয়। বুকের মধ্যে তখনও কেবল ঢাকারই হাওয়া। তাকে মিস করার কষ্ট। তার সমস্ত আচার অনুষ্ঠানের ব্যাকুলতা। তাকে নিয়ে লেখা এই কবিতা:
শুক্লা,
তুমি আদর নিও।
আর মাসিমাকে সালাম,
বহুদিন পর আজ,
তোমার চিঠি পেলাম।
হুঁ, আগামীকাল পহেলা বৈশাখ।
থেকে থেকে বুকের মাঝে
বাজছে তারই শাঁখ।
ভীষণ ইচ্ছে করছে আমার
ঢাকাতে যাই ছুটে,
যদিও জানি,
বাস্তবতার শিকলাবদ্ধ পায়ে
সম্ভব নয় এ মোটে।
তবুও যেনো
কেন জানি মানছে না এ মন,
চেতনাতে চলছে বেজে
তারই অনুরণন।
মন পাপিয়া মুখর হলো
বটমূলের গানে,
কেউ জানে না বোশেখ আমায়
কেমন করে টানে।
তার সাথে যে বেঁধেছি প্রাণ
প্রাণেরই বন্ধনে,
তাই পরাণ আজি গুমরে উঠে
নিঃশব্দ ক্রন্দনে।
সাদি-বন্যা-পাপিয়াদের
কেমন করে ভুলি!
যাদের নামে লেকের জলে
দিয়েছি অঞ্জলি।
আজ স্পষ্ট যেনো
দেখতে পাচ্ছি ওই,
লেকের জলে ভাসছে কত
কিংশুক আর জুই।
রাতের আঁধার সরিয়ে দিয়ে
হাসছে পূর্বাচল,
ওরে বটমূলে যাবি কে কে
ত্বরা করে চল।
ওরে ঘরে থাকবার দিন নয় এ
দ্যাখ চেয়ে ওই দ্যাখ,
বাঁধনহারা প্রাণোচ্ছ্বাসে
উপচে পড়ছে লেক।
যুগল প্রেমিক, ছেলে বুড়ো
যুবা-কিশোর-কিশোরী,
প্রাণের মেলায় মিলেছে আজ
নিত্য-কর্ম বিস্মরি।
সরছে আঁধার শুরু হচ্ছে (বর্ষবরণ)
ভূবনজয়ী গান,
‘নব আনন্দে জাগো আজি
নব রবি কিরণে...
আকাশ-বাতাসব্যাপী এ যে
কাঁপিয়ে যায় প্রাণ,
হায় ছুঁয়ে ছুঁয়ে যায় প্রাণ,
এ যে জাগিয়ে যায় প্রাণ,
এ যে মাতিয়ে যায় প্রাণ,
বল, জানবে কি সে, যে করেনি
এমন সুধা পান !
তুমি যেয়ো। আমায় হয়ে
তুমি যেয়ো বটমূলে;
সদ্য ফোটা এক অঞ্জলি বেলী
আমার নামে তোমার হাতে, ভাসিয়ে দিও
লেকের জলে।
তাতেই তোমার চোখে
দেখা হবে আমার
তোমার কানে হবে আমার শোনা,
আমি না হয় টিভির সামনে
বসেই রবো অষ্টপ্রহর
না হয় বৃথাই যাবে আমার প্রহর গোণা।
বিবার্তা/বিপ্লব/মৌসুমী
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]