ভালোবাসা একটি মানবিক অনুভূতি এবং আবেগকেন্দ্রিক একটি অভিজ্ঞতা। বিশেষ কোন মানুষের জন্য স্নেহের শক্তিশালী বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে ভালোবাসা। ভালোবাসা আসলে সমস্ত শুভ ও সৃষ্টির শক্তি। এটা শুধুমাত্র জৈবিক বা শারীরিক ব্যাপার নয়। আবার শুধুমাত্র মানসিক বিষয়ও নয়।
বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন, ‘আনন্দকে ভাগ করলে দুটি জিনিস পাওয়া যায়; একটি হচ্ছে জ্ঞান এবং অপরটি হচ্ছে প্রেম’।
ভালোবাসাকে নিয়ে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল বলেছিলেন, ‘তুমি আমায় ভালবাস তাই তো আমি কবি আমার এ রূপ সে যে তোমার ভালবাসার ছবি’।
ভালোবাসা নিয়ে অনেকেই অনেক মতবাদ আছে। এই ধরুন আমি যদি বলি গানের ভাষায়, সূর্য যেমন ভালোবাসে ঐ রোদের আলো... মেঘ যেমন ভালোবাসে ঐ বাড়ীধারা... দক্ষিণা বাতাস যেমন ছুয়ে যায় বস্ন্ত... তার চেয়েও বেশি ভালোবাসি... ভালোবাসি তোমায় হয়তোবা এর চেয়ে বেশি ভালোবাসি অনেক বেশি।
ভালোবাসলে এর মাঝে ব্যস্ততা বলে কোনো বাহানা কি হানা দিতে পারে? ব্যস্ততা সবার সাথে দেখানো যায়না, কিছু স্পেশাল মানুষ থাকে যাদের সাথে আমরা, ব্যস্ত থাকলেও ব্যস্ততা দেখানো যায় না, ঠিক যেনো ভালোবাসার অতল গভীর সমুদ্রে আর তখন মনে হয় যেনো ভালবাসা যেন উঁকি মারে পাথরের ফাঁকে ফাঁকে। আর যখন থাকে না? তখন...
ভালোবাসা ছাড়া আর আছে কী... ভালোবাসা হলো নিঃশ্বাস এ দেহে ... নিঃশ্বাস বিনা মানুষ কখনো বাঁচে কি'... —বিয়ের আগে এমনই মধুরতম গানে ভালোবাসা বিনিময় করেন প্রেমিক-প্রেমিকারা। কিন্তু বিয়ের পর?
সম্পর্ক হচ্ছে একটি সুতোর মতো। যদি দুইপক্ষ থেকেই টানটান করে ধরে রাখা হয় তবেই এটি ঠিক থাকে। যেকোনো একপক্ষ একটু শিথিল করলেই সম্পর্ক আর আগের অবস্থায় থাকে না। যখন আমরা কারো সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্কে সম্পর্কিত হই, সেখানে আলাদা কোনো চুক্তিপত্র থাকে না। থাকে কিছু প্রত্যাশা। সে আমাকে বুঝবে, সে আমাকে চাইবে, সে আমাকে ভাববে- এমন চাওয়া না থাকলে সেই সম্পর্ক প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে না। ঝামেলা বাঁধে যখন প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তি ঠিক মেলে না। তখনই সেই কমন অভিযোগ উঠে আসে- তুমি আমাকে আগের মতো বোঝো না!
যে কোনো আরাধ্য বস্তু পেয়ে গেলে তা আর আগের মতো আমাদের কাছে গুরুত্ব বহন করে না। সম্পর্কের ক্ষেত্রেও কি এমন হয়? আর একারণেই কি সম্পর্কের শুরুতে ছেলেদের আগ্রহ বেশি থাকে আর সম্পর্কের পরে সেটি কমে যায়?
বিশেষজ্ঞরা হয়তো সেভাবে ব্যাখ্যা করবেন না। তারা হয়তো এভাবেই বলবেন যে ছেলেদের ব্যস্ততা তুলনামূলক বেশি থাকে। আর একারণেই এই দূরত্ব। কিন্তু মেয়েরা সেটি মানতে নারাজ। তাদের একটাই কথা- ব্যস্ততা কি আমাদেরও নেই?
যতদিন সম্পর্ক, ততদিনই এই মান-অভিমান-অভিযোগ চলতে থাকবে। ডিম আগে না মুরগি আগে সেই রহস্যের মতোই কে কাকে বেশি ভালোবাসে বা কে কাকে এড়িয়ে চলছে- এই বিতর্কও চলতেই থাকবে। আর এরই মাঝে বেঁচে থাকবে ভালোবাসাও। কারণ মান-অভিমান যতোই হোক, দিনশেষে তো ভালোবাসাই সত্যি! ব্যস্ততা হচ্ছে জীবনের জন্য আর জীবন হচ্ছে ভালোবাসার জন্য। তাই এক্ষেত্রে আমরা ভালোবাসাকেই জয়ী ঘোষণা করতে পারি।
বিবার্তা/শারমিন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]