ভেজাল খাবারের খারাপ দিক নিয়ে নতুন করে আর বলার কিছু নেই। অ্যালার্জি থেকে ক্যান্সার- সব ধরনের রোগের পেছনেই কোনো না কোনোভাবে প্রভাব ফেলে। ভেজাল জিনিসপত্র এমনভাবে বাজারে ছেড়ে গেছে, এখন আর আলাদা করে বোঝার উপায় থাকে না কোনটা খাঁটি আর কোনটা ভেজাল মিশ্রিত। ভেজালের ভিড়ে খাঁটি জিনিস খুঁজে পাওয়াই দায়।
প্রতিদিনের খাবারে যে জিনিসগুলো ব্যবহার হয়ে থাকে তার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের মসলা। ভেজালের হাত থেকে নিস্তার পায়নি খাদ্যের এ উপাদানগুলোও। বিশেষ করে মসলা থেকে নির্যাস বের করে নিয়ে শুকনো, গুণহীন মসলা খোলাবাজারে বিক্রি করা হয়। মসলার নির্যাস দিয়ে তৈরি হয় ওষুধ, পারফিউম, এসেনশিয়াল অয়েল ইত্যাদি।
বিভিন্ন ধরনের মসলা থেকে কৌশলে নির্যাস বের করে নিয়ে ফেলনা মসলাকে আবার বিশেষভাবে প্রক্রিয়াজাত করে তারপর বাজারে বিক্রি করা হয়। ক্রেতাদের স্বাস্থ্যহানি হলেও বিক্রেতারারা লাভবান হন দুদিক থেকেই। আবার কিছু কিছু মসলায় মিশিয়ে দেয়া হয় ক্ষতিকর উপাদান। তাই জেনে নিন এমন কিছু কৌশল যাতে আপনি সহজেই চিনে নিতে পারবেন খাঁটি মসলা।
দারুচিনি: দারুচিনির নির্যাস থেকে তৈরি হয় বেশ কিছু দামি ওষুধ ও সুগন্ধী। ভালো দারুচিনিতে থাকবে মিষ্টি একটা গন্ধ এবং এর স্বাদ হবে ঝাঁঝালো মিষ্টি। অনেক সময় অন্য গাছের ছাল রঙ করে এবং দারুচিনির নির্যাস স্প্রে করে সেটাকে দারুচিনি বলে চালিয়ে দেয় বিক্রেতা। দারুচিনি কিছুক্ষণ হাতে মুঠো করে ধরে রাখুন। হাত দিয়ে কচলে নাকের কাছে নিন। দারুচিনি ভেজাল হয়ে থাকলে গন্ধ খুব হালকা হয়ে যাবে। দারুচিনি পানিতে ভিজিয়ে আঙুল দিয়ে ঘষে দেখুন, রঙ কৃত্রিম কি না তা বুঝতে পারবেন। দারুচিনি আসল কি না সেটা বোঝার আরেকটি উপায় হলো এর স্বাদ পরখ করে দেখা। সামান্য দারুচিনি ভেঙ্গে নিয়ে মুখে দিয়ে চিবিয়ে দেখুন। দারুচিনি আসল হলে এর স্বাদ হবে ঝাঁঝালো মিষ্টি।
লবঙ্গ: নাকফুলের মতো দেখতে লবঙ্গ খুবই উপকারী মসলা। এর নির্যাস থেকে তৈরি হয় বেশ কয়েক ধরনের ওষুধ। লবঙ্গ ঠিকঠাক আছে কি না তা বোঝার জন্য একটা লবঙ্গে নখ দিয়ে চাপ দিন। যদি একটুও তেল বের না হয় তাহলে বুঝবেন, লবঙ্গ থেকে নির্যাস আগেই বের করে নেয়া হয়েছে। আরেকটি কাজ করতে পারেন, লবঙ্গ চাপ দিয়ে ভাঙ্গার চেষ্টা করুন। লবঙ্গ যদি মট করে ভাঙ্গা না যায় তাহলেও একই ব্যাপার বুঝে নেবেন।
সাদা ও কালো এলাচ: সাদা বা কালো এলাচ থেকে রস বা নির্যাস বের করে নেয়া হয়েছে কি না, তা বোঝার উপায় হলো এলাচের খোসা খুলে ফেলা। নির্যাস আগে থেকেই বের করা হলে এর দানাগুলো একেবারে শুকনো হয়ে যায় এবং সেগুলো খোসার সাথে একদম লেগে থাকে।
জিরা: রান্নাঘরের আরেকটি অন্যতম মসলা হলো জিরা। জিরাতে ভেজালের পরিমাণটা একটু বেশিই থাকে। এটি রোদে শুকিয়ে বিক্রি করা হয় বলে নির্যাস বের করে নিলেও বোঝা যায় না। এক্ষেত্রে পরখ করতে হয় জিরার স্বাদ ও গন্ধ। দু'একটি জিরা মুখে দিয়ে চিবিয়ে দেখুন। আসল জিরা হলে এর স্বাদ হবে ঝাঁঝালো ও গন্ধ হবে তীব্র।
মরিচ গুঁড়া: বিশেষ উপায়ে শুকিয়ে মরিচ গুঁড়া করা হয়। ভেজাল হিসেব এতে মেশানো হয় ইটের গুঁড়াসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর দ্রব্যাদি। মরিচের গুঁড়া ভালো হলে তা হবে একেবারে ঝরঝরে। যেকোনো ধরনের ভেজাল মেশালে এ ঝরঝরে ভাবটা আর থাকে না। ভিজে ভিজে লাগলে সে মরিচের গুঁড়া ব্যবহার না করাটাই ভালো।
বিবার্তা/জিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]