অর্থনৈতিক দুর্দশার মধ্যে ভুটানে জাতীয় নির্বাচন মঙ্গলবার
প্রকাশ : ০৮ জানুয়ারি ২০২৪, ১৮:০০
অর্থনৈতিক দুর্দশার মধ্যে ভুটানে জাতীয় নির্বাচন মঙ্গলবার
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

ভয়াবহ অর্থনৈতিক দুরবস্থার মধ্যেই হিমালয়ের দেশ ভুটানে হতে যাচ্ছে জাতীয় নির্বাচন। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে দেশটিতে।


ভুটান বরাবরই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চেয়ে দেশের সুখকে অগ্রাধিকার দেয়। কিন্তু বর্তমান অর্থনৈতিক সংকট দেশটির দীর্ঘ দিনের এ নীতিকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।


জানা গেছে, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে মধ্য বামপন্থি পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিপি) ও ভুটান টেনড্রেল পার্টি। দুটি দলই দেশটির সংবিধানে নিহিত মানুষের সুখ ও কল্যাণ নিশ্চিতে সরকার গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।


প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর ৪৬ হাজার ৫০০ বর্গকিলোমিটারের দেশ ভুটান মূলত পাহাড়বেষ্টিত। বিচ্ছিন্ন জনবসতি হওয়ায় ভোটগ্রহণে কয়েক দিন সময় লাগতে পারে বলে ধারণা করছেন দেশটির অনেকেই।


কিনলে ওয়াংচুক (৪৬) নামক এক কৃষক বলেন, আমরা নতুন রাস্তা বা সেতু চাই না। আমাদের যে জিনিসটা সবচেয়ে বেশি দরকার সেটি হলো, তরুণদের পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান। বর্তমানে আমাদের দেশে বেকার তরুণ-তরুণীর সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে।


বিশ্বব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভুটানে তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার বেড়ে ২৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। আবার গত ৫ বছরে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আটকে আছে গড়ে ১ দশমিক ৭ শতাংশের মধ্যে।


গত কয়েক বছরে উচ্চশিক্ষা ও আর্থিক সুবিধার সন্ধানে ভুটানের রেকর্ডসংখ্যক তরুণ জনগোষ্ঠী বিদেশে চলে গেছে। বিশেষ করে, অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমিয়েছেন দেশটির বিপুল সংখ্যক তরুণ-তরুণী।


স্থানীয় গণমাধ্যমের তথ্য মতে, গত বছরের জুলাই পর্যন্ত অন্তত ১৫ হাজার ভুটানি নাগরিকের ভিসা ইস্যু করা হয়, যা গত ছয় বছরের সম্মিলিত হিসাবের চেয়েও বেশি ও এটি দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ২ শতাংশ। ফলে এবারের নির্বাচনে উভয় দলের কাছে এ সমস্যা সমাধানের বিষয়টিও বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে।


অন্যদিকে, পিডিপির প্রধান শেরিং তোবগেও একই মনোভাব প্রকাশ করে বলেছেন, সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে গেছে যে প্রতি ৮ জনের ১ জন খাদ্য ও মৌলিক চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে। আর তার মধ্যেই গণহারে দেশত্যাগ ভুটানের জন্য আরও ভয়াবহ সংকট সৃষ্টি করতে পারে।


এদিকে ভুটানের পর্যটন খাত এখনো করোনার আঘাত থেকে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। ২০২২ সালে দেশটিতে বিদেশি পর্যটকের আগমন বাড়ানোর উদ্দেশ্যে ফি অনেক কমালেও, তেমন কোনো কাজ হয়নি। জানা গেছে, চার বছর আগে ভুটানে বিদেশি পর্যটক এসেছিল ৩ লাখ ১৬ হাজার, যার এক-তৃতীয়াংশই এসেছিল গত বছর।


এদিকে, গত অক্টোবরে একটি ‘সহযোগিতা চুক্তি’ সই করেছে ভুটান ও চীন। এই চুক্তি স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগ বাড়িয়েছে ভারতের। নরেন্দ্র মোদীর দেশটি দীর্ঘদিন ধরে ভুটানকে ‘বাফার স্টেট’ (প্রভাবশালী দুই রাষ্ট্রের মাঝে দুর্বল রাষ্ট্র) হিসেবে দেখে আসছে। দেশটিকে নিজেদের প্রভাববলয়ে রাখার চেষ্টা চালায় উভয় পরাশক্তিই।


বিবার্তা/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com