টাঙ্গাইলে ঘোড়ার গাড়িতে ধান বহন
প্রকাশ : ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ২২:৪৭
টাঙ্গাইলে ঘোড়ার গাড়িতে ধান বহন
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার পুর্বে এক তৃতীয়াংশ জুড়ে রয়েছে বিশাল পাহাড়ি অঞ্চল। এ অঞ্চলে মৌসুমে লাগে ধান কাটার উৎসব। গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের ঘোড়ার গাড়িতে করে এসব ধান, খেত থেকে ঘরে তোলেন কৃষকেরা। এ যেন এক অন্যরকম দৃশ্য।


সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নের শিবেরপাড়া-বারইপাড়া গ্রামের বিলের ধানের ফসল নিচ্ছে কৃষক ঘোড়ার গাড়ি দিয়ে।


এলাকায় শ্রমিক সংকট থাকার কারণে ও মুল্য বেশি হওয়ায় ঘোড়ার গাড়ি দিয়ে ধান বাহন করছে প্রায় কৃষকরা। শুধু ধান বাহনের ক্ষেত্রে নয় পাহাড়ি এলাকা গুলোতে পণ্যও পরিবহন করছে ওই ঘোড়ার গাড়ি দিয়ে। এবার বি-২৮ ধানের সাথে বি-২৯ সহ হাইব্রিড ধানের ভালো ফলন হয়েছে। সোনার ফসল ঘরে উঠাতে পেরে কৃষক আনন্দিত ও উৎফুল্ল।


উৎসবমুখর পরিবেশে কৃষক-কৃষাণী ব্যস্ত সময় পাড় করছে ধান উঠানোর কাজে। তবে দীর্ঘদিন গৌপোচা বিলের খাল খনন না হওয়ায় কৃষক অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।


স্থানীয় কৃষক মো. আসাদুজ্জামান খান জানান, আমরা মুলত এই ধানের জমির উপর নির্ভরশীল। বর্ষায় খাল দিয়ে পানি বের না হওয়ায় নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় আমাদের । আগাম বৃষ্টি হলেই ধান তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে । অতীতে আমরা দেখেছি পুর্ব পুরুষরা গরুর গাড়ি, মহিষের গাড়ি দিয়ে এসব ধান পরিবহন করতো। কিন্তু বর্তমানে এই ঘোড়ার গাড়ি কৃষিপণ্যসহ সকল ধরনের মালামাল বহন করা হয় পাহাড়ি এলাকায়। তাই গরুর গাড়ী ও মহিষের গাড়ি কালের বিবর্তনে প্রায় বিলুপ্তির পথে।


কৃষক জমির উদ্দিন বলেন, সাশ্রয় হওয়ায় আমরা ঘোড়ার গাড়ি দিয়ে ধান আনি। একজন শ্রমিক পঞ্চাশ আটি ধানে বোঝা আনতে পারে আর ঘোড়ার গাড়ি ৪'শ আটি ধান আনতে পারে।


স্থানীয় ঘোড়ার গাড়ি চালক সবুর মিয়া ও আক্তার আলী জানায়, পাহাড়ি এলাকা ও বিলাঞ্চলের মানুষের মালামাল পরিবহনসহ ব্যবসায়ীদের পণ্য আনা নেওয়ার জন্য অন্যতম মাধ্যম ঘোড়ার গাড়ি। বৃষ্টির কারণে বিলাঞ্চলের আবাদী জমির পাকা ধান পানিতে তলিয়ে যাওয়ার সম্ভবনা দেখা দিলে শ্রমিক সংকটও দেখা দেয়।


এ সময় ঘোড়ার গাড়ি দিয়ে ধান বাহন করা হয়। তাই ঘোড়ার গাড়ির চাহিদাও আছে। এ ঘোড়ার গাড়িতে ৩'শ থেকে ৪'শ পর্যন্ত ধানের আটি পরিবহন করা যায়। সারাদিনে আয় হয় পনের থেকে দুই হাজার টাকা। তা দিয়ে সংসারের খরচ বহন করেন তারা।


তারা আরও জানায় ধানের মৌসুম ছাড়া মালামাল টেনে তেমন কামাই হয় না। তার উপর ঘোড়ার খাবার তো রয়েছে। বাপ-দাদায় ঘোড়া পালতো, এজন্য আমরাও পালি।


এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিলশাদ জাহান জানান, ঘোড়ার গাড়ি দিয়ে ধান বহন করা এটা পুরানো ঐতিহ্য বহন করে। এ ঐতিহ্য রক্ষায় ঘোড়ার গাড়ি চালকদের সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।


বিবার্তা/ইমরুল/এসএস

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com