ফৌজদারি মানহানির মামলায় ‘মোদী উপাধি’ মন্তব্যের জন্য কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে গুজরাটের সুরাত আদালত দোষী সাব্যস্ত করে যে রায় দিয়েছিল তা স্থগিত করেছেন সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি আরএস গাভাই ও বিচারপতি পিকে মিশ্রের বেঞ্চ শুক্রবার রাহুলের দুই বছরের জেলের সাজার ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন।
রায়ে সুপ্রিম কোর্ট বলেছেন, কোনো সন্দেহ নেই যে উচ্চারণগুলো ভালো রুচির নয়। প্রকাশ্য জনসভায় বক্তৃতা করার সময় সতর্কতা অবলম্বন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
আদালত পর্যবেক্ষণে বলেছেন যে, রাহুল গান্ধীর এ বিষয়ে আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল।
বিচারপতি আরএস গাভাই ও বিচারপতি পিকে মিশ্রের বেঞ্চ রাহুলের দুই বছরের কারাদণ্ডের সাজার ওপর স্থগিতাদেশ দেন এবং আদালত অবমাননার আবেদনে তার হলফনামা গ্রহণ করেন।
সুপ্রিম কোর্ট আরও বলেছেন যে, বিচারিক আদালত রাহুল গান্ধীকে সর্বোচ্চ সাজা দেওয়ার কোনো কারণ জানাননি। তাকে দোষী সাব্যস্ত করার আদেশ চূড়ান্ত রায়ের জন্য স্থগিত করা প্রয়োজন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে কটূক্তির জেরে মানহানির এ মামলায় সুরাত আদালত ২৩ মার্চ তাকে দোষী সাব্যস্ত করে। গুজরাট হাইকোর্টও তাঁর দোষী সাব্যস্ততা স্থগিত করেননি। ফলে এই বছরের শুরুতে লোকসভার সংসদ সদস্য হিসেবে তাঁকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়।
পরে তিনি জুলাইয়ের মাসের মাঝামাঝিতে সুপ্রিম কোর্টের দারস্ত হন। আদালতে তিনি একটি পিটিশন দাখিল করেন। এ মামলায় সুরাত আদালতের দেওয়া রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দিলেন সুপ্রিম কোর্ট।
সুপ্রিম কোর্টের এ আদেশের ফলে সুরাত আদালতের রায় আপাতত কার্যকর হচ্ছে না। সেই সঙ্গে সংসদ সদস্য পদ ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনাও তৈরি হলো। তিনি নির্বাচনেও লড়তে পারবেন।
২০১৯ সালে কর্ণাটকে এক নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্যে ‘কীভাবে সব চোরের সাধারণ উপাধি মোদি হয়’ এমন মন্তব্য করেন কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুল। রাহুল প্রশ্ন তুলে বলেছিলেন, `সব চোরের পদবি ‘মোদি’ হয় কেন?' আইপিএল কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত ললিত মোদি, ব্যাঙ্ক-ঋণ মামলায় ‘পলাতক’ নীরব মোদির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তুলনা টেনেছিলেন তিনি।
এর পর এই নিয়ে ক্ষুব্ধ হন বিজেপি নেতাকর্মীরা। পরে বিজেপির এক নেতা তার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন।
রাহুল মনে করেন, স্থগিত করা লোকসভা সংসদ সদস্য হিসেবে তার পুনর্বহালের পথ তৈরি হবে। তাই তিনি সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দিয়েছেন।
এর আগে হাইকোর্ট তার আবেদন খারিজ করে দেন। ওই সময় আদালতের মন্তব্য ছিল, রাজনীতিতে বিশুদ্ধতা থাকা এখন সময়ের প্রয়োজন। আদালত আরও বলেন, রাহুল গান্ধী একেবারে অস্তিত্বহীন কারণে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার ওপর স্থগিতাদেশ চেয়েছেন।
ভারতের জনপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী দুই বছর বা তার বেশি মেয়াদের কারাদণ্ড হলে সাংসদ-বিধায়কদের পদ খারিজ হতে পারে। ফলে রাহুলের সে আশঙ্কা রয়েছে।
বিবার্তা/রিয়াদ/সউদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]