
ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলে সুমাত্রা প্রদেশে প্রবল বৃষ্টিতে হড়কা বান ও আগ্নেয়গিরির শীতল লাভার স্রোতে অন্তত ৪১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এখন পর্যন্ত অন্তত ৩৭ জনের লাশ উদ্ধার করেছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও নিখোঁজ রয়েছে অন্তত ১৭ জন। তাদের উদ্ধারে কাজ চলছে।
১৩ মে, সোমবার প্রাদেশিক উদ্ধার বাহিনী সূত্রে রয়টার্স এর প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার সন্ধ্যায় প্রবল বৃষ্টির কারণে প্রদেশের তিন জেলায় আকস্মিক বন্যা, ভূমিধস এবং শীতল লাভা প্রবাহের সৃষ্টি হয়।
প্রাদেশিক উদ্ধার বাহিনীর প্রধান আব্দুল মালিক বলেন, আগ্নেয়গিরির শীতল লাভা লাহার নামেও পরিচিত। আগ্নেয়গিরির প্রধান উপাদান যেমন ছাই, বালি এবং নুড়ি পাথর বৃষ্টির কারণে আগ্নেয়গিরির ঢালে নেমে আসে। তখন পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে ওঠে।
তিনি বলেন, এখনও ১৭ জন নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের উদ্ধারে কাজ চলছে। নিখোঁজদের মধ্যে আগাম জেলায় তিনজন এবং তানাহ দাতারে ১৪ জন। বন্যার সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ এই দুই এলাকায় কয়েক লাখ মানুষের বসবাস বলেও জানান তিনি।
আঞ্চলিক দুর্যোগ কর্মকর্তা বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেন, শনিবার রাতে মুষলধারে বৃষ্টির পর সুমাত্রা দ্বীপের সবচেয়ে সক্রিয় আগ্নেয়গিরি মাউন্ট মারাপির নিচের দিকে ছাই ও বড় বড় পাথর ভেসে আসার ঘটনায় অন্তত ১৭ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
পশ্চিম সুমাত্রার দুর্যোগ প্রশমন সংস্থার কর্মকর্তা ইলহাম ওহাব এএফপিকে বলেন, আগাম জেলায় তিনজন এবং তানাহ দাতারে ১৪ জন নিখোঁজ রয়েছেন। দুই জেলা-ই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যেখানে লাখ লাখ লোকের বাস।
নিখোঁজদের উদ্ধারে পুলিশ, সেনা, স্থানীয় উদ্ধারকারী দলের অন্তত ৪০০ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। আটটি এক্সকাভেটর ও ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে।
গেল ডিসেম্বরে মারাপি আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে ২০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে।
শীতল লাভা, লাহার নামেও পরিচিত। এটি বৃষ্টিতে আগ্নেয়গিরির ঢাল থেকে নেমে আসা এমন এক ধরনের উপাদান, যাতে ছাই, বালি ও নুড়ি পাথর মিশ্রিত থাকে।
বৃষ্টিতে পথঘাট কাদার নদীতে পরিণত হয়েছে, যানবাহন ভেসে গেছে, বাড়িঘরসহ বিভিন্ন ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে।
বর্ষাকালে ইন্দোনেশিয়া ভূমিধস ও বন্যার ঝুঁকিতে থাকে। ২০২২ সালে বন্যার কারণে সুমাত্রা থেকে ২৪ হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে নেয়া হয়েছিল। তখন দুই শিশুর প্রাণহানিও ঘটে।
মানুষের বিভিন্ন ধরনের তৎপরতার কারণেই অংশত বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঘটনা ঘটছে বলে পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। প্রাকৃতিক সম্পদের খোঁজে বন উজার ও পাহাড়-পর্বতে খোঁড়াখুড়ি বা ধ্বংস এবং এলোমেলো উন্নয়ন প্রকল্পের ফলে এ ধরনের দুর্যোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মত তাদের।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]