
ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের ঘটনা, যা জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। বনে চলতে গিয়ে ডানচোখের নিচে লেগেছে আঘাত। এতে সেখানে তৈরি হয়েছে বড় একটি ক্ষত। বনে থাকা ঔষধি গাছ দিয়ে নিজের সেই ক্ষতের চিকিৎসা করিয়েছে একটি ওরাংওটাং। এরপর এক মাসের মাথায় সেই ক্ষত সেরেও গেছে।
সুমাত্রার ওই ওরাংওটাংয়ের নাম রাকুস। রাকুসের বয়স ৩২ বছর। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এত দিন ধারণা করা হতো, শুধু মানুষেরই নিজেদের ক্ষত সারানোর সক্ষমতা আছে। কিন্তু এই প্রথম কোনো বন্য প্রাণীকে ঔষধি গাছ ব্যবহার করে নিজের ক্ষত সারাতে দেখা গেল।
ইন্দোনেশিয়ার গুনুং লিউজার ন্যাশনাল পার্কের একদল গবেষক বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করেছেন। তাঁরা বলছেন, ২০২২ সালের জুনে রাকুসের মুখে বড় একটি ক্ষত দেখতে পান তাঁরা। তাঁদের ধারণা, বনে চলার পথে, নয়তো অন্য ওরাংওটাংয়ের সঙ্গে লড়তে গিয়ে রাকুস আঘাত পেয়েছিল।
গবেষকেরা বলছেন, বনে রয়েছে আকার কুনিং নামে একটি গাছ। এই গাছের পাতার রস ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে। পাশাপাশি ম্যালেরিয়া ও ডায়াবেটিসের মতো রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রেও এই ঔষধি গাছ ব্যবহার করা হয়।
আঘাত পাওয়ার পর এই গাছের পাতা চিবাতে দেখা যায় রাকুসকে। সেই পাতার রস ও এরপর চিবানো পাতাগুলো রাকুস দেয় সেই ক্ষততে। এর এক মাস পর দেখা যায়, ওরাংওটাংটির সেই ক্ষত পুরোপুরি সেরে গেছে।
গবেষকেরা জানিয়েছেন, প্রায় সাত মিনিট ধরে পাতার রস ক্ষততে দেয় রাকুস। এরপর পুরো ক্ষত ঢেকে না যাওয়া পর্যন্ত চিবানো পাতা ক্ষততে দেয়। এ ঘটনার পাঁচ দিনের মধ্যে ক্ষত সেরে ওঠার বিষয়ে উন্নতি হওয়ার বিষয়টি লক্ষ করেন গবেষকেরা।
তারা আরও জানান, এভাবে গাছের পাতার রস ও চিবানো পাতা দেওয়ার পর ওই ক্ষত থেকে নতুন করে কোনো সংক্রমণ না ছড়ানোর বিষয়টিও লক্ষ করেন তাঁরা।
গবেষক দলের প্রধান ও জার্মানির ম্যাক্স প্লাঙ্ক ইনস্টিটিউটের জীববিজ্ঞানী ইসাবেলা লাউমার বলেন, ‘ওরাংওটাংয়ের সঙ্গে যে মানুষের শারীরিক গঠনগত মিল রয়েছে, এর মধ্য দিয়ে আবার সেটাই প্রমাণিত হলো।’ তাঁর মতে, মানুষের সঙ্গে ওরাংওটাংয়ের পার্থক্যের চেয়ে সাদৃশ্যই বেশি।
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]