হলি আর্টিজান হামলার ৯ বছর আজ
প্রকাশ : ০১ জুলাই ২০২৫, ০৯:২৩
হলি আর্টিজান হামলার ৯ বছর আজ
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলার ৯ বছর আজ। দেশের ইতিহাসে এটি সবচেয়ে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে বিবেচিত হয়। এ হামলায় বিদেশিসহ মোট ২২ জন নিহত হয়েছিলেন। নিহতদের মধ্যে ইতালি, জাপান, ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা ছিলেন। এছাড়া, হামলায় দুজন পুলিশ কর্মকর্তাও প্রাণ হারান এবং অনেকে আহত হন।


দিনটি ছিল ২০১৬ সালের ১ জুলাই (শুক্রবার)। রাত পৌনে ৯টার দিকে খবর পাওয়া যায় রাজধানীর গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কের হোলি আর্টিজান বেকারিতে ‘সন্ত্রাসীদের সঙ্গে’ পুলিশের গোলাগুলি হচ্ছে। নব্য জেএমবির পাঁচ সন্ত্রাসী বেকারিতে ঢুকে প্রথমে নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে ১৮ বিদেশি নাগরিকসহ ২২ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করে।


তাদের মধ্যে ৯ জন ইতালির, সাতজন জাপানের, এক ভারতীয় এবং তিনজন বাংলাদেশি নাগরিক ছিলেন। তিনজন বাংলাদেশির মধ্যে একজনের দ্বৈত নাগরিকত্ব ছিল। নারকীয় ওই হামলা প্রতিরোধ করতে গিয়ে প্রাণ হারান দুই পুলিশ কর্মকর্তা।


ওই দিন পুরো রাত স্পর্শকাতর বিবেচনায় কয়েকবার প্রস্তুতি নেওয়া সত্ত্বেও অভিযান চালানো থেকে বিরত থাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরে কমান্ডো অভিযানে নিহত হয় পাঁচ সন্ত্রাসী। আইএসের পক্ষ থেকে হামলাকারীদের মধ্যে পাঁচজনকে তাদের ‘সৈনিক’ বলে দাবি করে, হামলার দায় নেয় তারা।


২০১৬ সালের সে দিন সন্ধ্যারাতে হঠাৎ করে খবর আসে গুলশানে ‘সন্ত্রাসীদের সঙ্গে’ পুলিশের গোলাগুলি হচ্ছে। রাত সাড়ে ৯টার দিকে গোলাগুলিতে আহত হন বনানী থানার ওসি মোহাম্মদ সালাউদ্দীন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে।


রাত ১০টার দিকে পুলিশ, র‌্যাব এবং আধা সামরিক বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের কয়েকশ সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়ে অবস্থান নেন। গণমাধ্যমকর্মীরাও ৭৯ নম্বর রোডের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থান নেন।


রাত সোয়া ১১টার দিকে হাসপাতালে মারা যান বনানী থানার ওসি মোহাম্মদ সালাউদ্দীন। রাত ৪টা পর্যন্ত অস্ত্রধারীদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ স্থাপন করতে পারেননি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।


রাতভর হলি আর্টিজান বেকারি সংলগ্ন এলাকা ঘিরে রাখার পর যৌথ সেনা, নৌ, পুলিশ, র‌্যাব এবং বিজিবির সমন্বয়ে যৌথ কমান্ডো দল গুলশানে অভিযানের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেয়।


সকাল পৌনে ৮টায় কমান্ডো বাহিনী অভিযান শুরু করে। অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত দলের সদস্যরা রেস্টুরেন্টের ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময় গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়।


সকাল সোয়া ৮টায় বেকারি থেকে প্রথম দফায় নারী ও শিশুসহ ছয়জনকে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়। পাশের একটি ভবন থেকে একজন বিদেশি নাগরিক তার মোবাইল ফোনে সেটি ধারণ করেন।


৮টা ৫৫ মিনিটে ভবনের নিয়ন্ত্রণ নেয় অভিযানকারীরা। গোয়েন্দা দল ভবনের ভেতর বিস্ফোরকের জন্য তল্লাশি শুরু করে। কিছুক্ষণ পরই আলামত সংগ্রহের কাজ শুরু করে গোয়েন্দারা।


৯টা ১৫ মিনিটে অভিযান শেষ হয়। কমান্ডো অভিযানের মধ্য দিয়ে ঢাকার গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে প্রায় ১২ ঘণ্টার রক্তাক্ত জিম্মি সংকটের অবসান হয়।


‘থান্ডারবোল্ট’ নামে সেনাবাহিনীর কমান্ডোরা যে অভিযান চালান সেখানে জঙ্গি হামলায় সরাসরি অংশ নেওয়া পাঁচ তরুণের সবাই মারা পড়েন। তারা হলেন মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ ওরফে মামুন, নিবরাজ ইসলাম, খায়রুল ইসলাম পায়েল ও শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল।


সকাল ১০টায় চার বিদেশিসহ ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধারের খবর জানানো হয়। রেস্টুরেন্টের ভেতরে অজ্ঞাত পাঁচজনের লাশ পাওয়ার কথা পুলিশ জানায়।


১১টা ৫০ মিনিটে অভিযানে সন্ত্রাসীদের ছয়জন নিহত এবং একজন ধরা পড়েছে বলে নিশ্চিত করা হয়।


বিবার্তা/এমবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com