চিকিৎসকদের সম্পর্কে রোগীদের অভিযোগের শেষ নেই। এ ধরনের অভিযোগের বিষয়গুলো এক চিকিৎসক নিজেই তুলে ধরেছেন। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে হাফিংটন পোস্ট।
চিকিৎসক ও লেখক ক্যারেন এম. ওয়াইয়েট এ প্রসঙ্গে লিখেছেন, ‘আমার চিকিৎসক জীবনে আমি বহু রোগীর কাছে অন্য চিকিৎসকদের সম্পর্কে অভিযোগ পেয়েছি, যার অধিকাংশই সত্য। আমি জানি চিকিৎসকরা বিজ্ঞান শিক্ষায় শিক্ষিত এবং যোগাযোগের বিষয়ে তাদের প্রশিক্ষণ অতি সামান্য। কিন্তু এটা খুবই উদ্বেগজনক যে, ২১ শতকেও চিকিৎসকরা ডাক্তার-রোগী সম্পর্ক বিষয়টিকে স্বীকার করেন না।’
চিকিৎসকদের প্রধান পাঁচটি ভুল হলো-
তারা শুনেন না: এ অভিযোগটি চিকিৎসকদের বিষয়ে সবচেয়ে বেশি করা হয়। বিভিন্ন গবেষণাতেও এটা প্রমাণিত হয়েছে, প্রতি ভিজিটেই গড়ে ১৮ সেকেন্ডের বেশি রোগীরা প্রথমে কথা বলতে পারেন না। এ সময়ের মধ্যেই চিকিৎসক তাকে বাধা দেন। এরপর চিকিৎসক তার কথা পুরোপুরি না শুনেই নানা প্রশ্ন শুরু করেন। যদিও এতে বহু গুরুত্বপূর্ণ কথা রোগী আর চিকিৎসককে জানাতে পারেন না, জানান ড. ওয়াইয়েট।
তারা সম্পর্ক গড়তে পারেন না: বহু চিকিৎসকেরই রোগীর সঙ্গে যোগাযোগে সমস্যা থাকে। তারা রোগীদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে মোটেই উৎসাহী হন না এবং তার বদলে রোগীকে ভিন্ন কোনো দৃষ্টিতে দেখেন। ফলে আদতে রোগীও বিষয়টি সেভাবেই দেখতে অভ্যস্ত হয়ে যায়। এর ফলাফল হয় রোগীর কম সন্তুষ্টির মধ্যে।
রোগীদের ব্যক্তি হিসেবে গণ্য করেন না: বহু চিকিৎসকই রোগীর শারীরিক লক্ষণগুলো বিবেচনা করেন এবং রোগীর মানসিক অসুস্থতা ও প্রভাব সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে যান বলে জানান ড. ওয়াইয়েট। তিনি আরও জানান, বহু রোগেরই মূল ভিত্তি মনে। তাই এ বিষয়টিতে গুরুত্ব না দেওয়া চিকিৎসকদের একটি বড় দুর্বলতা।
মরণাপন্ন রোগীর তথ্য: চিকিৎসক কোনো রোগীর জীবন শেষ পর্যায়ে কি না, তা অনেক সময় বুঝতে পারেন। কিন্তু তারা সঠিক সময়ে তা রোগীদের বা তাদের আত্মীয়-স্বজনদের জানান না। যখন রোগীর মৃত্যু কাছাকাছি, তখন এ বিষয়ে সময় নষ্ট করাটা কোনো রোগী বা সংশ্লিষ্টদের কাম্য নয়, মত ড. ওয়াইয়েটের।
জ্ঞানের তুলনায় ভয়ের ওপর গুরুত্ব, ল্যাবের মাধ্যমে রোগ নির্ণয়: বহু চিকিৎসকই তাদের দীর্ঘদিনের প্রশিক্ষণ, পড়াশোনা ও অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভর করেন না। তার বদলে তারা প্রয়োজনীয় ও অপ্রয়োজনীয় বহু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রোগ নির্ণয় করেন। রোগী যেন কোনো আইনগত পদক্ষেপ নিতে না পারেন সেজন্য মূলত চিকিৎসক টেস্টের ওপর গুরুত্ব দেন। এক্ষেত্রে তার অর্জিত জ্ঞান তিনি কাজে লাগান না বলে জানান ড. ওয়াইয়েট।
বিবার্তা/জিয়া