সব হার্টের রোগীর ইন্টারভেনশন (অপারেশন) প্রয়োজন নেই জানিয়ে বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ইদানিং একটা প্রবণতা দেখা যাচ্ছে যে, তাদের কাছে রোগী আসলেই অপারেশন (ইন্টারভেনশন) করা হচ্ছে।
৩০ সেপ্টেম্বর, শনিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) শহীদ ডা. মিলন হলে বিশ্ব হার্ট দিবস উপলক্ষে হৃদরোগ ও শিশু হৃদরোগ বিভাগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, আগে চোখের ক্যাটার্যাক্ট (ছানি) হলেই চিকিৎসকরা বলতেন, ক্যাটার্যাক্ট ম্যাচিউরড হলে ইন্টারভেনশ করো। ইম্যাচিউরড অবস্থায় করা যাবে না । কিন্তু এখন ইম্যাচির্উড অবস্থায়ও করা হচ্ছে। যেটা ইথিক্যালি ঠিক না। চিকিৎসা সেবা প্রদানে অবশ্যই চিকিৎসকদের ইথিকস মেনে চলতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বিএসএমএমইউ শিশু হৃদরোগের চিকিৎসা ও প্রতিরোধে কাজ করছে। ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু হৃদরোগ বিভাগে ৭ শতাধিক শিশুর হৃদরোগের অপারেশন করা হয়েছে। শিশুরা যাতে রোগে না ভোগেন, শিশুরা যাতে ত্রুটি নিয়ে জন্মগ্রহণ না করে সেজন্য মাতৃগর্ভে থাকতেই তা স্ক্রিনিং করে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেছে।
‘ভালোবাসা দিয়ে প্রতিটি হৃদয়ের যত্ন নিন’ প্রতিপাদ্য নিয়ে সেমিনারে জানানো হয়, প্রতি দেড় সেকেন্ডে ১ জন মানুষ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। বাংলাদেশে প্রতিবছর ৫ লাখ ৭২ হাজার ৬০০ জন মানুষ নন কমিউনিক্যাবল ডিজিজে মৃত্যুবরণ করেন। তার মধ্যে ৩০ শতাংশ মানুষ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।
বক্তারা বলেন, হার্ট ব্লক হলেই ইন্টারভেনশন করা যাবে না। অনেক হার্ট ব্লক আছে যেসব ওষুধের দ্বারা ভালো রাখা যায়। হৃদরোগ প্রতিকারের চেয়ে সবাই প্রতিরোধের দিকে অধিক গুরুত্বারোপ করতে হবে। এজন্য নিয়মিত ৩০ মিনিট হাটার পরামর্শ দেওয়া হয়। এছাড়াও নিয়মিত ঘুম, লবণ না খাওয়া, স্ট্রেসে না থাকা ও ধুমপান না করলে হৃদরোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়। বর্তমানে দেশের হৃদরোগীর ব্যাস্থাপনা খুব ভালো হওয়ায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের মৃত্যুর যেসব কারণ রয়েছে তার মধ্যে হৃদরোগ ১ নম্বর থেকে ৪ নম্বরে নেমেছে। হৃদরোগের প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হলো সঠিক নিয়মে দৈনন্দিন জীবনযাপন করা। হাসিখুশি থাকাও হৃদরোগে কার্যকর ভূমিকা রাখে। বর্তমানে জীবনে শান্তি কামনায় মেডিটেশন কাজ করে। শান্তিময় জীবন যাবনে আধুনিক বিশ্বে মেডিটেশনকে গুরুত্ব দেওয়া হয়।
এ সময় হৃদরোগের অন্যতম প্রধান কারণ ধুমপান নিরোধে আইন প্রয়োগ করার আহ্বান জানানো হয়।
সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের হৃদরোগ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. চৌধুরী মেশকাত আহমেদ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এসএম মোস্তফা জামান। এছাড়া এতে প্যানেল অব এক্সপার্ট হিসেবে মতামত প্রদান করেন ইউজিসি অধ্যাপক ডা. সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জী।
এর আগে কর্মসূচির শুরুতে অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডি-ব্লকের সামনে থেকে শুরু হয়ে সি-ব্লক অতিক্রম করে বেসিক সাইন্স ভবন, টিএসসি ও এ-ব্লক ঘুরে বি-ব্লকের সামনে শেখ রাসেল ফোয়ারায় গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হৃদরোগ বিভাগ ও শিশু হৃদরোগের বিভাগের শিক্ষক, চিকিৎসক, রেসিডেন্ট, কর্মকর্তা ও নার্সরা অংশগ্রহণ করেন।
বিবার্তা/রিয়াদ/এমজে
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]