বিজয়ের মাসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে অনেক কাজ হয়। কিছু গতানুগতিক, কিছু অন্যরকম। কিছু কাজ থাকে সাময়িক সময়ের জন্য, অল্প কিছু প্রভাব রেখে চলে যায়। আবার কিছু কাজ থেকে যায় স্থান, কাল, পাত্রের ঊর্ধ্বে। বহুদিন পর ঠিক এরকম একটি কাজ দেখে দেশের অনেক মানুষের চোখে পানি চলে এসেছে।
২০১৮ সালে ঢাকা শহরের রাস্তায় একাত্তরের পাতা থেকে উঠে এসেছে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা, যারা নিশ্চুপ হয়ে দেখছে ইট, কাঠ, পাথরের এ শহরের প্রতিদিনের নানা অসঙ্গতি, অবহেলা! কিন্তু ফিরে চলে যাবার পর, তাদের রেখে যাওয়া দেশাত্মবোধ এবং চেতনার প্রতীক হিসেবে পড়ে থাকতে দেখি জাতীয় পতাকা, যা দেখে আমাদের অবচেতন স্বত্বায় প্রচণ্ড নাড়া দেয়। জাতি হিসেবে আমরা দেশের গল্প বলতে ভালবাসি।
চায়ের আড্ডা কিংবা খাবারের টেবিলে হুটহাট দেশপ্রেম মুক্তিযুদ্ধ বা স্বাধীনতার চেতনা টেনে আনা আমাদের খুব প্রিয় একটি কাজ। এতে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু সমস্যা হয় তখনই, যখন আমরা অনেক বড় একটা চিত্রকে বিশ্লেষণ করার গভীর চেষ্টায়, খুব কাছ থেকে অনেক ছোট কিন্তু গভীর বিষয়গুলোকে এড়িয়ে যাই। গানটি আমাদের ব্যক্তিসত্তার এই করুণ জায়গাটিকেই কয়েক মিনিটের ক্ষুদ্র একটি ফ্রেমে এত বিশাল ব্যাপ্তিতে বন্দী করেছে, যা অদ্ভুত! অসাধারণ!
অন্যের দিকে আঙ্গুল তোলার আগে, দেশ ও জাতীয় চেতনার বড় সমস্যাগুলোকে খোঁজার আগে, আমরা কি নিজের দিকে কখনো আঙ্গুল তুলেছি? এই গল্পটি বারবার আমাদের সেই প্রশ্নটিই অদৃশ্যভাবে ছুঁড়ে দেয়। যখন আমরা একসাথে দাঁড়িয়ে জাতীয় সঙ্গীতে সুর মিলাই, খেলার সময় বারান্দার গ্রিলে পতাকাটা বেঁধে রাখি, আমাদের সমগ্র সত্তার সাথেই কি ওরা মিশে নেই? আমরা কি আসলেই সচেতন মনে এভাবে ভেবে দেখি? শুধু রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে নয়, সাধারণ ব্যক্তিসত্তা হিসেবে তাদের সেই ঋণ কি আমরা শোধ করতে পারি না? নিজ বিচরণের ছোট্ট গণ্ডির মধ্যে থেকেও?
শুধু বিবেকের কাছে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েই কিন্তু গল্পটি থেমে যায়নি, কোনো জায়গাটি থেকে চিন্তা শুরু করতে পারি তাও যেন বলে দিচ্ছে। এখানেই গল্পকার আরেকবার মুগ্ধ করেছে! গানের কথায় আমাদের টেনে নিয়ে গিয়েছে ঠিক সেখানটাতে; “হোঁচট খেয়েছ যদি ফিরে তাকিয়ো, সেই লাল সবুজের পতাকায়... ‘বাংলাদেশের ৪৮তম বিজয় দিবস উপলক্ষে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের পরিবেশনায় অপূর্ব এই গানটির গীতিকার এবং গল্পের রূপকার আসিফ পিয়াস (ডিরেক্টর, ক্রিয়েটিভ অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজি, পিংক ক্রিয়েটিভ লিমিটেড)।
গানটি চিত্রায়ন করেছেন ওয়াহিদ তারেক (ফ্রিফল স্টুডিওস লিমিটেড এবং ক্রসওয়ার্ড পিকচার্স) গানটির সুর ও অ্যারেঞ্জমেন্ট করেছেন ফুয়াদ রাব্বী। গানটি গেয়েছেন বদরুল আলম রূপম এবং এলিটা করিম। এই কাজটির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত তৌফিকুল আলম তমাল (সি.ও.ও. পিংক ক্রিয়েটিভ লিমিটেড), বলেন, ‘কাজটি খুব সহজ ছিল না, কিন্তু তবুও ধন্যবাদ অলিম্পিককে, বিশেষ করে মাহবুবুল আমিন (জি.এম, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড) কে, যার সহযোগিতায় এ কাজটি আমরা করতে পেরেছি। দেশের জন্য এরকম অসাধারণ কাজ আরো বেশি বেশি হোক সেই প্রত্যাশাই থাকল।
বিবার্তা/অভি/জহির
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]