
দশদিন আগে নীরবেই পেরিয়ে গেলো চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীর মৃত্যুর দুই দশক। তাঁর মৃত্যুবার্ষিকীতে এফডিসির কোথাও কোনো ধরনের দোয়া মাহফিল বা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়নি।
১৯৯৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী আততায়ীর গুলিতে নিহত হন। সোহেল চৌধুরী ভালোবেসে ১৯৮৬ সালে বিয়ে করেছিলেন চিত্রনায়িকা দিতিকে।
১৯৮৫ সালে সোহেল চৌধুরী ও দিতি জুটিবদ্ধ হয়ে অভিনয় করেছিলেন সদ্য প্রয়াত আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘হীরামতি’ সিনেমায়। এই সিনেমায় অভিনয় করতে গিয়েই দু’জন দু’জনের প্রেমে পড়েন। কিন্তু এই সিনেমা ছিলো বিয়োগাত্বক প্রেম কাহিনীর সিনেমা।
‘হীরামতি’ সিনেমার শূটিং শেষে ঢাকায় ফিরে বাড়ি থেকে পালিয়ে দিতি সোহেল চৌধুরীকে বিয়ে করেছিলেন। কালের বিবর্তনে এই পৃথিবীতে আজ নেই তারা দু’জন। কিন্তু রেখে গেছেন অনেক কালজয়ী সিনেমা। রেখে গেছেন তাদের দুই সন্তান লামিয়া ও দীপ্তকে। চলচ্চিত্র পরিবার ভুলে গেলেও ভোলেনি এদেশের সিনেমাপ্রেমী দর্শক ভক্ত তাদের প্রিয় সোহেল চৌধুরী ও দিতিকে। দর্শক ঠিকই তাদের বিভিন্ন সময় মনে করেন শ্রদ্ধার সাথে।
সোহেল চৌধুরীর জন্ম ১৯৬৩ সালে। সোহেল চৌধুরী অভিজাত ধনী পরিবারের সন্তান ছিলেন। তিনি গিটার বাজাতে ও গান গাইতে ভালোবাসতেন। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থার উদ্যোগে প্রথমবারের মতো ১৯৮৪ সালে ‘নতুন মুখের সন্ধানে নামে’ একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে চলচ্চিত্রজগতে আসেন সোহেল চৌধুরী ও পারভীন সুলতানা দিতি।
নারায়ণগঞ্জের সোনার গাঁওয়ের এক মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে দিতি। এক সঙ্গে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ ও বিজয়ী হওয়ার ফলে দুজনের মধ্যে শুরু থেকেই বেশ বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। এফ কবীর চৌধুরী সোহেল চৌধুরীকে নায়ক এবং দিতিকে নায়িকা করে ‘পর্বত’ নামে একটি সিনেমা নির্মাণ করেন। এটি মুক্তি পাওয়ার পর মোটামুটি ব্যবসা করে এবং দুজনের অভিনয়ই প্রশংসিত হয়।
তাদের বন্ধুত্বের গুঞ্জনও শোনা যায় তখনই। এরপর তারা দু’জন ‘হীরামতি’ সিনেমায় অভিনয় করেন। ১৯৮৭ সালে জন্ম হয় দিতি-সোহেল দম্পতির প্রথম সন্তান লামিয়া চৌধুরীর। ১৯৮৯ সালে এ দম্পতির ছেলে দীপ্ত চৌধুরীর জন্ম হয়। নব্বই দশকের মাঝামাঝি সময়ে সোহেল ও দিতির বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। তবে দু’জনই সন্তানদের দেখ ভাল করতেন ঠিকই। কিন্তু হঠাৎ করেই ১৯৯৮ সালে খুন হন সোহেল চৌধুরী।
১৯৮৭ সালে ‘স্বামী স্ত্রী’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য দিতি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন। ২০১৬ সালের ২০ মার্চ মৃত্যু বরণ করেন দিতি। সোহেল চৌধুরী দিতি আর আমাদের মাঝে নেই ঠিকই, কিন্তু তারপরও তারা দু’জন বেঁচে থাকবেন যুগের পর যুগ তাদের অভিনীত সিনেমার মাধ্যমে।
এখনো কোথাও কোথাও কোনো কোনো আড্ডাতে ঠিকই প্রসঙ্গক্রমে চলে আসে সোহেল চৌধুরীর দিতির জীবনের নানান কথা। বড় অসময়েই তারা দু’জন চলে গেলেন এই পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে। পরপারে দু’জন ভালো থাকুন তার শুভাকাঙ্ক্ষীরা এই কামনাই করেন।
বিবার্তা/অভি/কামরুল
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]