আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব শিশুতোষ চলচ্চিত্র 'মাইক' নিয়ে উচ্ছ্বসিত দর্শক
প্রকাশ : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৯:৪৪
আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব শিশুতোষ চলচ্চিত্র 'মাইক' নিয়ে উচ্ছ্বসিত দর্শক
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসবে শিশুতোষ চলচ্চিত্র "মাইক" সিনেমা প্রদর্শিত হয়েছে। ১৬তম আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসবে সিনেমাটি দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছে। ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে উপজীব্য করে নির্মিত শিশুতোষ সিনেমাটি দেখে সব শ্রেণির দর্শকরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।


শনিবার, ৯ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২.৩০ মিনিটে শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালায় দেখানো হচ্ছে শিশুতোষ চলচ্চিত্র "মাইক"। স্বাধীনতার মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণকে উপজীব্য করে নির্মিত শিশুতোষ চলচ্চিত্র ‘মাইক’ সারাদেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় গত ১১ আগস্ট।


সিনেমা দেখতে পেয়ে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরোজ বিবার্তাকে বলেন, মাইক সিনেমাটি আমার খুব ভালো লেগেছে।


জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহেল মামুন বিবার্তাকে বলেন, আজ সারাদিনে অনেকগুলো শিশুতোষ সিনেমা দেখলাম। সকল সিমেনার থেকে একেবারেই ভিন্ন লেগেছে মাইক সিনেমাটি। শিশু-কিশোররা অসাধারণ অভিনয় করছে।


তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পর পচাঁত্তর পরবর্তী সময়ের প্রক্ষাপট নিয়ে তৈরি সিনেমা এটাই প্রথম। আমি মাইক সিনেমার কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই এমন একটি সিনেমা উপহার দেয়ার জন্য।


আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসবে এসে শিশুশিল্পী সানজিদ রহমান খান বিবার্তাকে বলেন, মাইক সিনেমাটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণকে উপজীব্য করে তৈরি করা হয়েছে। এই সিনেমায় অভিনয় করতে পেরে আমি খুব গর্বিত। আমি আশা করছি সিনেমাটি আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কার পাবে।


লেখক, কলামিস্ট ও সংগঠক ও সিনেমাটির পরিচালক এফ এম শাহিন বলেন, মাইক চলচ্চিত্রটি গত ১১ আগস্ট বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে। পচাঁত্তর পরবর্তী সময়ের প্রেক্ষাপট নিয়ে সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে।


তিনি বলেন, এবার তো মাইক সিনেমাটি ১৬তম আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসবে শিশুদের নির্মিত প্রতিযোগিতায় প্রদর্শিত হল। আমরা দেশের বাইরে যেসব ফেস্টিভেল আছে সেসব জায়গায় অংশগ্রহন করব। আমরা আমাদের সাধ্যমত চেষ্টা করব আন্তর্জাতিক সকল ফেস্টিভেলে সিনেমাটি পাঠানোর জন্য।


এফ এম শাহিন আরো বলেন, আপনারা জানেন আমাদের ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ সকল আন্দোলনে শিশু-কিশোরদের যে ভূমিকা দেখি ইতিহাসের পাটে পাটে। সেরকম ভাবেই সিনেমার গল্পটা সাজানো হয়েছে। এমন সময়ের ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে যখন বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বাজানো যেতো না। স্বাধীন দেশ যেন পরাধীন ছিল, সেই সময়কার একটি গল্প।


‘মাইক’ সিনেমায় অভিনয় করেছেন বিশিষ্ট অভিনেতা তারিক আনাম খান, চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ, অভিনেত্রী তানভীন সুইটি, অভিনেতা নাদের চৌধুরী, ঝুনা চৌধুরী, জয়িতা মহলানবিশ, সংগীতা চৌধুরী, রহিম সুমন, ইকবাল হোসাইন, শিশুশিল্পী সানজিদ রহমান খান, আলী আবদুল্লাহ দাইয়ান ভূঁইয়া, খোন্দকার মেঘদূত জলিল, মীর্জা ত্বাবীব ওয়াসিত প্রমুখ।


এদিকে, বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় শিল্পকলা একাডেমিতে চিলড্রেনস ফিল্ম সোসাইটি বাংলাদেশ আয়োজিত ১৬তম আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।


উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চিলড্রেনস ফিল্ম সোসাইটি বাংলাদেশের সভাপতি ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হুমায়ুর কবীর খোন্দকার, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকি এবং চিলড্রেনস ফিল্ম সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ও চলচ্চিত্র নির্মাতা মোরশেদুল ইসলাম ও প্রতিষ্ঠানের সাধারণ সম্পাদক মুনীরা মোরশেদ মুননী।


বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে তিনদিনব্যাপী এ অনুষ্ঠান শেষ হবে আজ। এবারের উৎসবের অন্যতম আকর্ষণীয় বিভাগ হিসেবে ছিল বাংলাদেশি শিশুদের নির্মিত প্রতিযোগিতা।


এ বিভাগে ১৭টি চলচ্চিত্র জমা পড়েছে, যার মধ্যে নির্বাচিত ৯টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। সেখান থেকে ৩টি চলচ্চিত্র পুরস্কার পাবে।


বিশেষ চলচ্চিত্র বিভাগে জমা পড়া ৫টি চলচ্চিত্রের মধ্যে নির্বাচিত ২টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। তরুণ বাংলাদেশি নির্মাতা বিভাগে ৩৫টি চলচ্চিত্র জমা পড়েছে। সেখান থেকে প্রদর্শিত হবে ১৫টি চলচ্চিত্র। আর পুরস্কার পাবে ২টি চলচ্চিত্র।


আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র নির্মাতা বিভাগে ২ হাজার ৭০০টির বেশি চলচ্চিত্র জমা পড়েছিল। সেখান থেকে প্রদর্শিত হবে ৭৫টি চলচ্চিত্র। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে প্রতিদিন বেলা ১১টা, দুপুর ২টা, ও সন্ধ্যা ৬টায়, মোট ৩টি করে প্রদর্শনী হয়েছে।


এবারের উৎসবে ঢাকায় ২টি ভেন্যু, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তন ও আলিয়ঁস ফ্রঁসেজে ৩৯টি দেশের ১০১টি শিশুতোষ চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। প্রতিটি প্রদর্শনীতে একাধিক শিশুতোষ চলচ্চিত্র দেখানো হবে।


প্রতিবছরের ন্যায় এবারও উৎসবের সব প্রদর্শনী অভিভাবক, শিশু-কিশোরসহ সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল। সিনেমা দেখার জন্য কোনো ধরনের প্রবেশমূল্য নেই। শিশু নির্মাতাদের চলচ্চিত্র বিচারকাজে জুরি বোর্ডের সবাই শিশু-কিশোর। অর্থাৎ ছোটদের নির্মিত শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রগুলো বাছাই করবে ছোটরাই।


বিবার্তা/রিয়াদ/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com