বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন,আমরা দেখেছি একটি দেশবিরোধী অপশক্তি সংসদীয় ব্যবস্থাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নির্বাচনকে বানচাল করার চেষ্টা করছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের যে জয়যাত্রা চলছে সেটিকে বাধা দেয়ার কোন সুযোগ নেই। আমরা বাংলাদেশে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এই অপশক্তির সকল ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করে চলেছি। নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত আমরা মাঠে আছি। রাজপথে ছাত্রলীগের সামনে কোন অপশক্তির দাঁড়ানোর সুযোগ নেই।

১৭ ডিসেম্বর, রবিবার সকাল সাড়ে এগারোটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ছাত্রলীগ আয়োজিত বিশেষ বর্ধিত সভায় ইনান এসব কথা বলেন।

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করার লক্ষ্যে ছাত্রসমাজের শপথ বাস্তবায়ন করতে চায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। সেই লক্ষ্যে ১৬ ডিসেম্বর, শনিবার একটি বিশেষ বর্ধিত সভা করার ঘোষণা দেয় সংগঠনটি।

সভায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান ছাত্রসমাজের উদ্দেশে বলেন, আগামী নির্বাচনটি আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমরা অনলাইনের সকল ক্ষেত্রে আমাদের জয়যাত্রা অব্যাহত রাখবো। আওয়ামী লীগের উন্নয়নের গান ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভরা থাকবে। ভোট যার যার উৎসব সবার। আমাদের দেশে প্রতিবছর ঈদসহ বিভিন্ন উৎসব পালন করি। সেভাবে প্রতি পাঁচ বছর পর পর ভোটের মাধ্যমে আমাদের উৎসব পালিত হয়। আমরা এবারও সেই উৎসব পালন করবো। দেশের প্রতিটি জেলা, উপজেলায় আমরা পরিবেশ বান্ধব সাইকেল র‍্যালি আয়োজন করতে যাচ্ছি। ইনশাআল্লাহ আমাদের নৌকার বিজয় হবে।

সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি কল্যাণধর্মী রাষ্ট্রের জন্য কাজ করছেন এবং সে কারণে আমরা সবাই নিয়ম-কানুন মেনে চলবো। ছাত্রলীগ সব সময় ফেয়ার প্লেয়ার। আমাদের ফাউল খেলার অভ্যাস নেই। আমাদের পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসার অভ্যাস নেই। সামরিক ক্যু করে মধ্যরাতে ক্ষমতায় আসার অভ্যাস নেই। সে কারণে সবার প্রতি আহ্বান থাকবে যাতে আমরা আচরণবিধি মেনে চলি। দেশের ও নির্বাচনের যে আইনকানুন রয়েছে সেগুলো মেনে চলবেন। অতিউৎসাহী হয়ে কোন ধরনের কর্মকাণ্ড যাতে না করা হয় সেজন্য নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, শেখ হাসিনা ও জাতির পিতার নৌকা মার্কা সব সময়ই বিজয়ী হয়েছে। শত প্রতিকূল পরিস্থিতি আমরা মোকাবেলা করে এসেছি। আমরা বিশ্বাস করি ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে যে নির্বাচন রয়েছে- আমরা সবাই মিলে এক হয়ে বঙ্গবন্ধুর রেখে যাওয়া আমানত শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আবারো নৌকা মার্কার ব্যালট বিপ্লব নিশ্চিত করবো। এসময় তিনি নৌকাকে জেতাতে নেতা-কর্মীদের নিরলসভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।

ছাত্রলীগের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, নির্বাচন উপলক্ষ্যে ১০টি বিভাগীয় সমন্বয়ক টিম, ৭৯টি জেলাভিত্তিক সমন্বয়ক টিম গঠন করা হয়েছে। আসন ভিত্তিক ৩০০টি টিম গঠনের কাজ শেষ হয়েছে যা আগামী ১৯ ডিসেম্বর প্রকাশ করা হবে। সারাদেশে সর্বমোট ৪২ হাজার ১০৩টি ভোটকেন্দ্রের প্রতিটিতে ছাত্রলীগের ২০ জন সদস্যের সমন্বয়ে কেন্দ্রভিত্তিক টিম গঠন করেছে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম এ সংগঠনটি। কেন্দ্রভিত্তিক এসব টিমে বিভিন্ন পর্যায়ের ৮ লাখ ৪২ হাজার ৬০ নেতা-কর্মীকে নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে সার্বক্ষণিক উপস্থিত ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে দায়িত্বরত রাখা হবে।

এছাড়া, আগামীকাল সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) হতে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত ছাত্রসমাবেশের আদলে বিভাগীয় ছাত্রসমাবেশ আয়োজন করা হবে। এছাড়া, নির্বাচনি প্রচারণায় সাইকেল র‍্যালি ও পরিচ্ছন্নতা অভিযানেরও আয়োজন করার কথা জানান সাদ্দাম হোসেন।

সভায় ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতা-কর্মীরা তাদের নিজ নিজ এলাকায় কিভাবে নৌকার পক্ষে কাজ করছেন, কি ধরনের সহযোগিতা সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির কাছ থেকে প্রয়োজন প্রভৃতি বিষয় নিয়ে জেলা ও মহানগর ইউনিট, কলেজ ইউনিটের শীর্ষ নেতারা বক্তব্য রাখেন।

এছাড়াও আরো বক্তব্য রাখেন ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি রিয়াজ মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক সাগর আহমেদ শামীম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি রাজিবুল ইসলাম বাপ্পী, সাধারণ সম্পাদক সজল কুণ্ডু, কেন্দ্রীয় কমিটির ১নং সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকা বিনতে হোসাইন, ১নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ হীল বারী, ১নং সহ-সভাপতি রাকিবুল হাসান রাকিব প্রমুখ।

বিবার্তা/ছাব্বির/জবা