মানবতা বিরোধী অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত এক আসামি গ্রেফতার
প্রকাশ : ০১ মার্চ ২০২৩, ২০:৩০
মানবতা বিরোধী অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত এক আসামি গ্রেফতার
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানবতা বিরোধী অপরাধে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের এন্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)।


মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১০ টার দিকে এটিইউ’র একটি দল রাজধানীর খিলগাঁও থানার দক্ষিণ গোড়ান এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতের নাম মো. ফখরুজ্জামান (৬৬)। সে ময়মনসিংহ জেলার কোতয়ালী থানার ৩-ক/১, কলেজ রোডের মৃত আব্দুল ওয়াহেদের পুত্র।


এটিইউ’র পুলিশ সুপার (মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস উইং) মোহাম্মদ আসলাম খান বাসসকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আসলাম খান জানান, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ফখরুজ্জামান ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশালের কালির বাজার ও কানিহারী এলাকায় শতাধিক গণহত্যা, কয়েক কোটি টাকার সম্পদ লুণ্ঠন, ধর্ষণ, নির্যাতন ও অগ্নিসংযোগের সঙ্গে জড়িত ছিল।


পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান, ২০১৫ সালের ১৯ মে ত্রিশালের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রহমানের স্ত্রী রহিমা খাতুন ময়মনসিংহের ১ নম্বর আমলি আদালতে একটি মামলা করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তৎকালীন শান্তি কমিটির ময়মনসিংহ শহর শাখার আহ্বায়ক এম এ হান্নানের নির্দেশে পাক হানাদার বাহিনী এবং তাদের দোসররা ত্রিশালের কালির বাজার ও কানিহারী এলাকায় শতাধিক গণহত্যা, কয়েক কোটি টাকার সম্পদ লুণ্ঠন, ধর্ষণ, নির্যাতন ও অগ্নিসংযোগ করে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়। এ মামলায় জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য এম এ হান্নান, তার ছেলে ও মো. ফখরুজ্জামানকে আসামি করা হয়। বিচারক মামলার এজাহারটি গ্রহণ করে সেটি ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে পাঠানোর আদেশ দেন।


এটিইউ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১০ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে হান্নানকে গুলশানের বাড়ি এবং তার ছেলে রফিক সাজ্জাদকে গুলশান এলাকায় তার অফিস থেকে গ্রেফতার করা হয়।
এ মামলায় অপর আসামি মো. ফখরুজ্জামান ও ছাব্বির পলাতক ছিল। ২০১৬ সালের ১১ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের তদন্ত সংস্থা আসামিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।


এটিইউ পুলিশ বলছে, ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর ট্রাইবুনাল মো. হরমুজ আলী, মো. আব্দুস সাত্তার, খন্দকার গোলাম রাব্বানী, খন্দকার গোলাম সাব্বির আহমেদ ও মো: ফখরুজ্জামানসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। তার মধ্যে জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য এম এ হান্নান, তার ছেলে রফিক সাজ্জাত ও মিজানুর রহমান মিন্টু মৃত্যুবরণ করেছেন।


মোহাম্মদ আসলাম খান জানান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম সমন্বয়ে তিন সদস্যের বেঞ্চ চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি ফখরুজ্জমানসহ অপর অসামিদের যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেন।


একাত্তরে ময়মনসিংহের গোলকীবাড়ী বাইলেনের প্রখ্যাত ভাস্কর আব্দুর রশিদকে অপহরণের পর জিপ গাড়ির পেছনে রশি দিয়ে বেঁধে টেনে হিঁছড়ে নির্মমভাবে হত্যা ও লাশ গুমের অপরাধে মো: ফখরুজ্জমানকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ভিন্ন ভিন্ন অপরাধে অন্যান্য আসামিদের যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।


ফখরুজ্জামানকে ময়মনসিংহের কোতয়ালি মডেল থানায় হস্থান্তর করা হয়েছে।


সূত্র: বাসস


বিবার্তা/এসএ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com