তারুণ্যদীপ্ত দুর্বার গতিময় ভ্রমণকন্যা ডা. সাকিয়া হক
প্রকাশ : ১০ অক্টোবর ২০২৩, ১৩:৩৩
তারুণ্যদীপ্ত দুর্বার গতিময় ভ্রমণকন্যা ডা. সাকিয়া হক
সামিনা বিপাশা
প্রিন্ট অ-অ+

এক আশ্চর্য তারুণ্যদীপ্ত দুর্বার গতিময় তরুণী ডা. সাকিয়া হক। অসম্ভবকে সম্ভব করতে যিনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, যিনি ভাঙতে চান অচলায়তন, যিনি নিজ বিশ্বাসের সাথেই গড়তে পারেন সমাজের আরো দশটি মেয়ের বিশ্বাসের জায়গা। সাকিয়া নিজে তরুণ হয়েও তারুণ্যেরই প্রেরণা, যার গল্প ছাপিয়ে গিয়েছে গল্পকেও, হার মেনে নিতে বাধ্য যেকোনো বাধাই, সাকিয়ার উদ্যম, প্রেরণা ও আত্মবিশ্বাসের কাছে।


শৈশব বা কৈশোর নয়, তরুণ সাকিয়ার জীবনের বয়ানে শুরু করতে চাই আজকের গল্পটি। সাকিয়া তখন ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী। অধ্যয়নরত অবস্থাতেই প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশের নারীদের ভ্রমণ বিষয়ক সংগঠন ‘ট্রাভেলেটস অব বাংলাদেশ- ভ্রমণকন্যা’। সঙ্গে ছিলেন আরেক তরুণী তারই সহপাঠী মানসী সাহা। স্কুটিতে ভ্রমণ করেছেন বাংলাদেশের ৬৪টি জেলা।



স্কুলের ছাত্রীদের নারীর ক্ষমতায়ন, বয়ঃসন্ধিকালীন সমস্যাসহ নানা বিষয়ে সচেতন করে তোলার জন্য পরিচালনা করছেন ‘নারীর চোখে বাংলাদেশ’ নামক কর্মসূচি। ঘুরে বেরিয়েছেন অনেক দেশ। বর্তমানে কর্মরত আছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটে। এর আগে কর্মরত ছিলেন, মেডিকেল অফিসার ডিজিজ কন্ট্রোল হিসেবে, কক্সবাজার সিভিল সার্জন অফিসে।


ভ্রমণকন্যার অর্জনের ঝুলিতে আছে ২০২০ সালে প্রাপ্ত যুক্তরাজ্য ভিত্তিক দ্য ডায়ানা এওয়ার্ড, সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে ভূমিকা রাখায় তরুণদের এই পুরষ্কার দেয়া হয়। ২০২১ সালে পেয়েছেন এক্যুমেন ফেলোশিপ অ্যাওয়ার্ড, ২০১৯ সালে ইয়ুথ এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ও ২০১৮ সালে জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড।



খুলনার মেয়ে সাকিয়া ছোটোবেলায় ছিলেন ডানপিটে। ডানপিটে দুরন্তপনা যতই থাকুক মেধার কমতি ছিল না এই দুরন্ত মেয়েটির মধ্যেই। খুলনা বিভাগ থেকে ক্লাস এইটে বৃত্তি পান, বিভাগে ফার্স্ট হয়েছিলেন এবং তার নম্বরের রেকর্ড ভাঙতে পারেনি কেউই। তার টার্গেট ছিল ঢাকা মেডিকেলে পড়বেন। মেডিকেল এডমিশন টেস্টের আগ পর্যন্ত সাকিয়া কোনোদিকেই তাকাননি, দুরন্তপনা থাকলেও পড়াশোনার বাইরে জগত ছিল না তার। স্বপ্ন দেখতেন ঢাকা মেডিকেলে পড়বেন। কিন্তু এই স্বপ্ন পূরণ হবেই তেমন নয় বা সাকিয়া তেমনটা ভাবতেনও না।



সাকিয়া বলেন, আমার জন্ম হয়েছিল ঢাকা মেডিকেলে, তাই আমি ভেবে নিয়েছিলাম যেখানে জন্ম সেখানেই পড়ব। চান্স পেলাম, টার্গেট সেট হয়ে গেল, ডাক্তার হবো। মানুষের সেবা করবো সেই ব্রত অবশ্যই মনে রইল, সাথে জেগে উঠল মনের সুপ্ত ইচ্ছা। আমার সুপ্ত ইচ্ছা, এবার একটু দেখবো বাইরের পৃথিবীটাকে, যেটা এত বছর করিনি৷ অর্থাৎ ভ্রমণের সুপ্ত ইচ্ছাটা আমার মধ্যে পাকাপোক্ত হল। সাকিয়া হাসতে হাসতে বলেন, আউট নলেজ কম ছিল আমার, এখন একটু বেশি। মনে হচ্ছে, কারণ, ভ্রমণ আমার জ্ঞানকে বিস্তৃত করেছে।



খুলনা কলেজিয়েট স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এসএসসি পাশ করে খুলনা গভর্মেন্ট গার্লস কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। এরপর ঢাকা মেডিকেল এবং এমবিবিএস পাশ করা। পোস্ট গ্রেজুয়েশন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হেলথ ইকোনমিকস-এর উপর।



কর্মজীবনের শুরুতেই টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিকেল অফিসার ছিলেন। বিসিএস দিয়ে একজন সরকারি ডাক্তার হিসেবে কর্মে নিযুক্ত হন। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবায় কাজ করেছেন অনেকটা সময়। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাজ করেছেন, মহামারি কোভিড-১৯ এর সময়ে টেকনাফে কর্মরত ছিলেন। সেসময় সম্পর্কে ডা. সাকিয়া জানান, ৭০% ডাক্তারদের করোনা হল, তিনজন ডাক্তার রোস্টার করে ডিউটি করতাম। লাল পতাকা টানানো ছিল, কী যে সময় গেছে! তবে টেকনাফ খুব প্রিয় আমার, কাজের পর সমুদের পাড় কী ভালো লাগত, প্রায়ই জোছনা দেখতাম। সুন্দর সময় গেছে। টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সবাই খুব হেল্পফুল ছিল। এক বছরের মধ্যে কক্সবাজারে নিয়ে আসা হয় আমাকে। বর্তমান কর্মস্থল ঢাকা।'


ডা. সাকিয়া হক ও ডা. মানসী হক দুজনেরই বেড়ে ওঠা খুলনায়। একই স্কুল থেকে এসএসসি, কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এমবিবিএসে ভর্তি হন দুজনে। ডা. সাকিয়া হকের বাবা সামছুল হক ছিলেন পেশায় একজন ব্যাংকার। মা আক্তার শাহনাজ হক একজন গৃহিণী। বাবা মারা যাওয়ার পর মা-ই হয়ে ওঠে তার একমাত্র নির্ভরতা।


মেডিকেলে পড়াকালীন সময় সম্পর্কে সাকিয়া বলেন, আমার পড়ার স্টাইলটা একটু অন্যরকম ছিল। অন্যরা যখন আইটেম, কার্ড নিয়ে ব্যস্ত তখন আমি একটু অন্যরকম করে ভাবছি। কারণ, আমার বরাবরই অভ্যাস ছিল ক্লাসের পড়া ক্লাসেই শেষ করে নেওয়া, বাসায় গিয়ে আর পড়তাম না। ফলে, মাথার মধ্যে জেঁকে বসে ভ্রমণের নেশা। কিন্তু একা যেহেতু যেতে দিবে না বাসা থেকে তখন কীভাবে এই স্বপ্নপূরণ করা যায় ভাবতে শুরু করি। জানান ডা. সাকিয়া হক।


হঠাৎই দুয়ার খুলে গেল সাকিয়ার ভ্রমণের, তবে মজার গল্প দিয়ে শুরু সাকিয়ার এই যাত্রার। সাকিয়ার বয়ানেই শুনব সেই গল্প, মেডিকেলে থার্ড ইয়ারে থাকাকালীন কমিউনিটি মেডিসিন এর পরীক্ষায় আমাকে প্রশ্ন করা হল, ম্যালেরিয়া সাধারণত কোথায় হতে দেখা যায়? আমি উত্তর দিলাম, পার্বত্য অঞ্চলের দিকে। ম্যাডাম বললেন, জেলার নাম বলো। আমি বললাম, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি। ম্যাডাম প্রশ্ন করলেন, এটা বাংলাদেশের কোন দিকে? আমি বললাম, উত্তরে। এই নিয়ে বন্ধুরা এত হাসল। আমি তো খুবই লজ্জা পেলাম এবং চিন্তা করলাম বাসায় গিয়ে আগেই দেখতে হবে আসল উত্তরটা কী। তখন থেকেই মনস্থির করে নিলাম যে, বাংলাদেশের ৬৪টা জেলাতেই ঘুরতে হবে। এরপর থেকেই আস্তে আস্তে ভ্রমণের শুরু। এরপর ময়মনসিংহ মেডিকেলে আমার কয়েকজন ফ্রেন্ড পেলাম যাদের ভ্রমণে আগ্রহ রয়েছে। এরপর আমার বেস্ট ফ্রেন্ড মানসীকে এই ভ্রমণ ইচ্ছার পাশে পেলাম।



মজার গল্পে শুরু হলেও ভ্রমণের উদ্যোগে বাধার গল্পটাই প্রথমে সামনে এল সাকিয়ার। মাকে বললে মা বলত, বিয়ে করে যত ইচ্ছা ঘোরো। মনে হল, যেহেতু মেয়েদের সাথেই ঘুরতে হবে এবং শুধু মেয়েদের জন্য প্ল্যাটফর্ম তখন ছিল না, তখন কোনো গ্রুপ ছিল না, আমরা শুরু করলাম। ২৭ নভেম্বর ২০১৬ সালে। তখন আমাদের ফাইনাল ইয়ারের পরীক্ষা চলে। এর দুই বছর আগে থেকেই আমরা টুকটাক ভ্রমণ করতাম। আমাদের টার্গেট ছিল, বিশ বা তিরিশ জন হলেও চলবে, এখন বাহাত্তর হাজার মেয়ে।


বাংলাদেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটে মেয়েরা সাধারণত একা বা নারী সঙ্গীর সাথে ঘুরতে যাওয়ার অনুমতি পরিবার থেকে পায় না। সাকিয়ার ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু সাকিয়া তো দমে যাওয়ার পাত্রী নন। মেডিকেলে পড়াকালীন অবস্থাতেই শুরু হল ভ্রমণকন্যার কার্যক্রম।



‌‘ট্রাভেলেটস অব বাংলাদেশ’ বা সংক্ষেপে ‘ভ্রমণকন্যা’ নামের এ সংগঠনটি দেশের নারীদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় ও সর্ববৃহৎ ভ্রমণ সংগঠন। ভ্রমণসহ নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে তারা। ইতোমধ্যে নারীদের ক্ষমতায়নে বেশ কয়েকটি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে সংগঠনটি। ডা. সাকিয়া জানান, আমাদের একশ নিরানব্বইটা ইভেন্ট হয়েছে, প্রায় পাঁচ হাজার মেয়েকে ভ্রমণ করিয়েছি। আমাদের সাথে যুক্ত আছে প্রায় ৭২ হাজার মেয়ে।


‘এম্পায়ার উইমেন থ্রু ট্র্যাভেলিং’ স্লোগান ধারণ করে ২০১৬ সালে ডা. সাকিয়া হক ও ডা. মানসী সাহা’র হাত ধরে যাত্রা শুরু হয় ট্রাভেলেটস অব বাংলাদেশ-এর। শুরুর দিকে স্কুটি চড়ে দেশের ৬৪ জেলায় ‘নারীর চোখে বাংলাদেশ’ নামক ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে স্কুলে পড়ুয়া নারীদের স্বাস্থ্য সচেতনতা, মাসিক, প্রজনন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয় জানানোর কার্যক্রম চালান তারা।



ভ্রমণকন্যার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ডা. সাকিয়া হক বলেন, ‘ভ্রমণ নিয়ে বাংলাদেশের নারীদের অনেক প্রতিবন্ধকতার মধ্যে থাকতে হয়। আমি নিজেও ছোটবেলায় পরিবার থেকে সে প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়েছি। বর্তমানে আমরা এর থেকে অনেকটাই বেরিয়ে এসেছি। নারীদের ক্ষমতায়নে, অধিকার আদায়ে, কিংবা বয়ঃসন্ধিকালের স্বাস্থ্য সচেতনতায় কাজ করছি। আমাদের সাথে এখন সারাদেশের নারীরা যুক্ত হচ্ছে।’


ভ্রমণের পরিকল্পনা সম্পর্কে ডা. সাকিয়া হক বলেন, আমরা পরিকল্পনা করেছিলাম, স্কুটিতে চড়ে বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করব। ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া হয়ে আবার ঢাকা ফিরে আসি। এভাবে আমরা বিভিন্ন ধাপে যাত্রা করি। ভ্রমণের পাশাপাশি নারীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো, বাংলাদেশের মেয়েরা চাইলে ভ্রমণ করতে পারে, কিশোরীদের স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কিত তথ্য, মুক্তিযুদ্ধ ইত্যাদি বিষয়গুলো তুলে ধরতে চেয়েছিলাম।



বেহুলা দ্য হাউসবোট। ভাবছেন হঠাৎ কোথা থেকে এল বেহুলা? না লখিন্দর নয়, সাকিয়া হাত ধরে বেহুলা এসেছে টাঙ্গুয়ারে। ভ্রমণে ভ্রমণকন্যার আরেকটি উদ্যোগ এই বেহুলা। সাকিয়া বাংলার অকৃত্রিম অকৃপণ সৌন্দর্য টাঙ্গুয়ার হাওরের সৌন্দর্য উপভোগের জন্য ভাসিয়েছেন বেহুলা, হাউসবোট বেহুলার কো-উইনার তিনি। বিলাসবহুল হাউসবোট বেহুলা হাওরবিলাসে সাকিয়ার অনন্য এক উদ্যোগ। এই উদ্যোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণে শুধু ভেসে বেড়ানোই নয়, লাইফ জ্যাকেট, বিদ্যুৎ, বইসহ আরো অনেক সুবিধা রয়েছে এই হাউসবোটে যা খুবই সাশ্রয়ী একজন পর্যটকের জন্য। এটি নারীদের প্রথম বোট। যখন টাঙ্গুয়ার হাওরে প্রথম যাই ২০১৫ সালের দিকে, তখন হাউসবোট বলে কিছু ছিল না। যে বোটগুলো ছিল সেগুলোতে হামাগুড়ি দিয়ে নিচে যেতে হত এবং যে বাথরুম তা কোনোভাবেই মেয়েদের উপযোগী না। বসা যায়, মাথা সোজা করে দাঁড়ানো যায় না। এক বিদেশি বান্ধবীকে নিয়ে গিয়েছিলাম এবং এমন পরিস্থিতি যে গাছপালা খুঁজে টয়লেটের কাজ সারতে হয়। এরপর অনেকবার টাঙ্গুয়ার গিয়েছি। আমার খুব ভালো লাগে ওই জায়গাটা। এখন তো অনেক হাউসবোট। কিন্তু সেই সময় থেকে স্বপ্ন দেখে একটু একটু করে টাকা জমিয়ে ২০২২ এর সেপ্টেম্বরে হাউসবোট নামাই। ছেলেমেয়ে সবার জন্য উন্মুক্ত, তবে অংশীদার নারীরা।’



শুধু নৌকা নয়, ঘরেরও স্বপ্ন আছে ভ্রমণকন্যার। সেই ঘর ভ্রমণেরই নিমিত্তে। এই সম্পর্কে ডা. সাকিয়া বলেন, অনেকেই ঘুরতে বেরিয়ে থাকার জায়গা খুঁজে পান না। পান না সেইফ হোটেল। মেয়েদের অবস্থা তো আরো বিব্রতকর, সেইফ হোটেল খুঁজলে তাদের শুনতে হয় নানা কথা, জিজ্ঞেস করে সাথে কে আছে, পুরুষ আছে কি না, নানা প্রশ্ন। এই জন্য আমাদের উদ্যোগ ভ্রমণকন্যা ঘর। ভ্রমণকন্যার ঘর করতে চাই সারা বাংলাদেশে, স্বল্প পরিসরে শুরুও করেছি আমরা। ঢাকায় ভ্রমণকন্যার চারটি ডর্ম আছে, দুটি লালমাটিয়ায়, একটি শুক্রাবাদে, আরেকটি উত্তরায়। এছাড়াও পঞ্চগড়, নরসিংদী ও কক্সবাজারে ভ্রমণকন্যার ডর্ম আছে। সারা বাংলাদেশে ডর্ম করতে চাই। এক রাতের জন্য ৩৫০ টাকা নেওয়া হয়। সাতটি ডর্ম হয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব ৬৪ জেলাতেই এই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে চাই।


এছাড়াও ভ্রমণকন্যার আরেকটি উদ্যোগ ‘শিক্ষণ’। শেখানো হয়, সাঁতার, মোটরসাইকেল ও স্কুটি এবং ঢাকার সাতটি পয়েন্টে এই কার্যক্রম চলে। ভ্রমণকন্যার কমিটিতে আছে ৩১ জন। প্রতিষ্ঠাতা ডা. সাকিয়া ও ডা. মানসী তবে, এখন কাজ করেন সকলে মিলেই। দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া। সবাই সবার ব্যক্তিগত কাজ সেরে ভ্রমণকন্যার দায়িত্ব পালন করে।



নারীদের কাছে ডা. সাকিয়া হক এমন বার্তা পৌঁছে দিতে চান, যারা আপনাকে খারাপ কথা বলবে বা আপনার ভালো উদ্যোগকে খারাপ ভাবে নেবে তাদের কথা শুনবেন না। যখন দেখবেন আপনি সফল হচ্ছেন, তখন আপনার পেছনের হাজার হাজার মানুষ। ভালো কাজ কিন্তু নারীরা চাইলেই করতে পারেন। শুধু আপনার একটা ভালো পদক্ষেপের অপেক্ষা। নারী সচেতনতা ও স্বাধীনতার জন্য নারীরা যদি এগিয়ে না আসেন তাহলে কিছুই হবে না। এজন্য সবাইকে এগিয়ে আসতেই হবে। সেই সঙ্গে পুরুষদেরও এগিয়ে আসতে হবে। কারণ পুরুষদের সহযোগিতা ছাড়া নারীর স্বাধীনতা অর্জন সম্ভব নয়।


সাকিয়া মনে করেন নারীর জন্য বিশেষভাবে জরুরি তার অর্থনৈতিক মুক্তি। নারীর সাবলম্বী হওয়াটা খুব জরুরি, সাবলম্বী হতে অর্থনৈতিক মুক্তির বিকল্প নেই। সাকিয়ার বিশ্বাস, ইকোনমিক ফ্রিডম স্বাধীনতার পথে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যায়। স্বাধীনতাটা নিজের চলাচলেরও উপর নির্ভর করে। কীভাবে চলতে স্বাচ্ছন্দ্য সেটা খুঁজে নিতে হবে। পাবলিক বাস স্বস্তিদায়ক ছিল না, তাই স্কুটিকে বাহন হিসেবে বেছে নেন সাকিয়া। তবে, এই পথটাও যে মসৃণ ছিল তেমন নয়। কিন্তু স্বপ্ন দেখলে তা সার্থক করতেই হবে এমন বিশ্বাস করেন সাকিয়া। তাই সাকিয়া বলেন, যে যেই স্বপ্নই দেখুক বাস্তবায়নের পথে এক পা অন্তত এগিয়ে যাক, তাহলে উপায় বেরিয়ে আসবেই।


বিবার্তা/এসবি/জবা

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com