
কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশের উপ-দূতাবাসের সামনে ফের বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে। সম্প্রতি ময়মনসিংহে দীপু দাশ নামে হিন্দু যুবককে হত্যার প্রতিবাদে শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে এই বিক্ষোভ হয়। এ সময় উপ-দূতাবাস ও আশেপাশের এলাকা কঠোর পুলিশি নিরাপত্তায় ঘিরে রাখা হয়।
কলকাতার শিয়ালদহ স্টেশন চত্বর থেকে গেরুয়া কাপড় পরা সাধু-সন্তদের নিয়ে একটি মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি বাংলাদেশের উপ-দূতাবাসের দিকে অগ্রসর হলে বেহালা বাগান মোড়ে কলকাতা পুলিশ সেটি আটকে দেয়। তবে এদিনের মিছিল শান্তিপূর্ণ ছিল বলে জানানো হয়।
এরপর বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীসহ চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। প্রায় ৩০ মিনিট ডেপুটি হাইকমিশনের কার্যালয়ে বৈঠকের পর শুভেন্দু অধিকারী ও প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বাইরে বেরিয়ে আসেন।
বৈঠক শেষে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, সোমবার (২২ ডিসেম্বর) থেকে বিভিন্ন হিন্দু সংগঠন, সাধু-সন্ত সমাজ এবং ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) এমপি ও বিধায়করা বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের কাছে তাদের আপত্তি, প্রতিবাদ ও দাবি ডেপুটি হাইকমিশনের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি তার পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে হিন্দুদের ওপর বেপরোয়া লাঠিচার্জ করিয়েছেন। শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) পুলিশের লাঠিচার্জে ১০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। কারও মাথা ফেটেছে, কারও নাক ভেঙেছে, এমনকি সাধুদেরও মারধর করা হয়েছে।
তিনি জানান, এ ঘটনায় ১৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে আগে ৭ জন নারী জামিন পেয়েছেন ও শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) ১২ জনকে আদালতে তোলা হয়েছে।
শুভেন্দু অধিকারী আরও বলেন, তারা ডেপুটি হাইকমিশনারকে জানিয়েছিলেন, দেখা না হলে ১০ হাজার মানুষ নিয়ে সেখানে অবস্থান কর্মসূচি করবেন। পরে ডেপুটি হাইকমিশনার জানান, সরকারের অনুমতি নিয়ে তিনি তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। শুভেন্দু অধিকারীর ভাষ্য অনুযায়ী, তারা জানতে চেয়েছিলেন দীপু চন্দ্র দাশের অপরাধ কী ছিল। জবাবে জানানো হয়, গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত জামিন দেওয়া হবে না। ক্ষতিপূরণ প্রসঙ্গে ডেপুটি হাইকমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, নিহতের পরিবারের পুরো দায়িত্ব রাষ্ট্র নিয়েছে।
এ সময় হুঁশিয়ারির সুরে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, কপিলমুনির আশ্রমে অনুষ্ঠিত গঙ্গাসাগর মেলায় কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত সাধু-সন্তরা আসেন। তিনি দাবি করেন, প্রয়োজনে পাঁচ লাখ সাধু নিয়ে আবারও উপ-দূতাবাসের সামনে আসবেন ও আন্দোলন জোরদার করবেন।
বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের যুবক দীপু দাশের হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। গত কয়েক দিন ধরে দফায় দফায় কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশের উপ-দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করছে ভারতের বিভিন্ন হিন্দু সংগঠন। শুক্রবার ২৬ জানুয়ারি সাধু-সন্তদের নেতৃত্বে নতুন করে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
বিবার্তা/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]