কক্সবাজার সৈকতে লাখো ভক্তের উপস্থিতিতে দেশের সর্ববৃহৎ প্রতিমা বিসর্জন
প্রকাশ : ০২ অক্টোবর ২০২৫, ২৩:৩৭
কক্সবাজার সৈকতে লাখো ভক্তের উপস্থিতিতে দেশের সর্ববৃহৎ প্রতিমা বিসর্জন
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

সবার আন্তরিকতায় কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে শারদীয় দুর্গোৎসব। চারদিনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে পঞ্চম দিনে মর্ত্যলোক থেকে বিদায় নেন দেবী দুর্গা। বাদ্য বাজনার তালে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও নানা আনন্দ আয়োজনের মধ্য দিয়ে দুর্গতিনাশিনী দুর্গাকে বিদায় দেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।


বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) মেঘাচ্ছন্ন বিকেলে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবণী পয়েন্টের উন্মুক্ত মঞ্চে দেশের সর্ববৃহৎ প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।


এ বছর পূজা পালনে প্রশাসনের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ সাধারণ মানুষের আন্তরিকতায় কক্সবাজারে স্বতঃস্ফূর্ত দুর্গোৎসব পালিত হয়েছে।


সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মতে মা দুর্গা এবার হাতি (গজ) বাহনে আগমন করছেন। এর মানে সমৃদ্ধি ও শান্তির বার্তা, তবে বন্যা-জলবিপদেরও আশঙ্কা থাকে। পরে বিদায়ের সময় দেবী দুর্গা দোলায় গেছেন। এর মানে রোগ-শোক থেকে মুক্তি, কল্যাণ এবং প্রশান্তির প্রতীক।


কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি উদয় শংকর পাল মিঠুর সভাপতিত্বে এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক স্বপন দাশের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, কক্সবাজার হচ্ছে দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির তীর্থ কেন্দ্র। যুগ যুগ ধরে প্রতি বছর কক্সবাজারের সব ধর্মের মানুষ শারদীয় দুর্গাপূজাকে উৎসব হিসেবে দেখে আসছে।


বক্তারা বলেন, আজ প্রতিমা বিসর্জনের দিন কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বিশাল বালিয়াড়ি সব ধর্মের মানুষে ভরে গেছে— এটাই সম্প্রীতি, এটিই উৎসব, এটিই আন্তঃধর্মীয় সৌন্দর্য। সবাই সম্মিলিতভাবে কক্সবাজারের সম্প্রীতির বহমান মেলবন্ধনকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে হবে।


অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মান্নান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন শাহীন, বিএনপি দলীয় সাবেক এমপি লুৎফর রহমান কাজল, সাবেক এমপি আলমগীর মুহাম্মদ মাহফুজুল্লাহ ফরিদ, কক্সবাজার জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. শামীম আরা স্বপ্না, কক্সবাজার শহর জামায়াতের আমির আবদুল্লাহ আল ফারুক, সাবেক পৌর মেয়র সরওয়ার কামাল প্রমুখ।


জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্র জানায়, এ বছর কক্সবাজার জেলার ৯টি উপজেলায় মোট ৩১৭টি মণ্ডপে পূজিত হয় দেবী দুর্গা। কক্সবাজার সদর ৩১টি, চকরিয়া উপজেলা ৬৯টি, কুতুবদিয়া ৪৫টিসহ অন্যান্য এলাকায় ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে ১ অক্টোবর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয় ১৫১টি প্রতিমা পূজা ও ১৬৬টি ঘটপূজা।


উৎসবকে ঘিরে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে ভরপুর ছিল আয়োজক ও ভক্তরা। পরে বিষাদের সুর জাগিয়ে উত্তাল সাগরে বিভিন্ন মণ্ডপ থেকে আনা দেবী দুর্গাদের বিসর্জন দেওয়া হয়।


কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক স্বপন দাশ বলেন, কক্সবাজারে ৩১৭টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। সার্বিক নিরাপত্তায় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করেছি। বড় ধরনের কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।


বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের জেলা নেতা দোলন ধর বলেন, সার্বিক নিরাপত্তা চাদরে এবার মণ্ডপগুলো ঢাকা ছিল। এবার আগের চেয়ে দ্বিগুণ উৎসাহ উদ্দীপনায় অনুষ্ঠিত হয় শারদীয় দুর্গোৎসব।


কক্সবাজার র‌্যাব-১৫ এর উপ-অধিনায়ক মেজর এহতেশামুল হক জানান, প্রতিটি মণ্ডপে কঠোর নিরাপত্তা নজরদারি ছিল। ঝুঁকিপূর্ণ মণ্ডপে বিশেষ নজরদারি করায় আনন্দঘন ও উৎসবমুখর পরিবেশে কক্সবাজারে দুর্গোৎসব পালন করা হয়, যা প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হয়।


বিবার্তা/ফরহাদ/এসএস

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com