গবাদিপশুর খাদ্যের দাম বেড়েছে তিন গুণ, চাহিদা মেটাচ্ছে কলার ঘাউর
প্রকাশ : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫:০৯
গবাদিপশুর খাদ্যের দাম বেড়েছে তিন গুণ, চাহিদা মেটাচ্ছে কলার ঘাউর
গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে গবাদিপশুর বিকল্প খাবার হিসাবে খাওয়ানো হচ্ছে কলার ঘাউর। দানাদার খাদ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়া এবং বোরো মৌসুমে অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে খামারিরা পর্যাপ্ত খড় শুকাতে পারেননি। ফলে বর্তমানে খড়ের দাম স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় তিন গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অবস্থায় মধ্যম ও স্বল্প আয়ের খামারিরা বাধ্য হয়ে গবাদিপশুকে আঁশ জাতীয় খাদ্য হিসাবে কলার ঘাউর খাওয়াচ্ছেন।


বিশেষত গরু-মহিষের খাদ্য চাহিদা মেটাতে বিকল্প হিসেবে স্থানীয় হাট থেকে সংগ্রহ করা কলার ঘাউরের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছেন তারা। অর্থ সাশ্রয়ের জন্যও অনেকেই অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি এখন গবাদি পশুকে খাওয়াচ্ছেন এই কলার ঘাউর। যা গবাদি পশুর স্বাস্থ্য রক্ষায় অত্যন্ত সহায়ক। এতে করে পশুর পুষ্টি চাহিদা মেটার পাশাপাশি সাশ্রয় হচ্ছে অর্থ। সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, এটি প্রাকৃতিক খাদ্য হওয়ায় গবাদি পশুর জন্য কৃত্রিম খাদ্যের মতো কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।


এই নতুন খাদ্যের মাধ্যমে খরচ কমিয়ে গবাদি পশু পালনের কার্যক্রমকে আরও লাভজনক করতে সক্ষম হচ্ছেন পশু পালনকারীরা। বিশেষ করে শীতকালে, যখন প্রাকৃতিক খাবারের সংকট দেখা দেয়, তখন এই পুষ্টিকর গো-খাদ্য একটি কার্যকর বিকল্প হিসেবে ব্যবহারযোগ্য হয়ে উঠেছে। ফলে গবাদি পশু পালনকারীরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন এবং দেশের নিরাপদ মাংস ও দুগ্ধ উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন।


উপজেলার কামারদহ ইউনিয়নের পূর্ব মাস্তা (নয়াপাড়া) গ্রামের খামারি আব্দুল বারী বলেন, ভোরে ফজরের নামাজের পর ফাঁসিতলা গিয়ে অন্যান্য খামারিদের সাথে কলার ঘাউর সংগ্রহ করি। চারিদিকে ঘাসে সংকট, মাঠে ঘাস নেই। বাড়িতে খড় নেই, বৃষ্টিতে সব খড় পচে গেছে। যার কারনে হাট থেকে কলার সংগ্রহ করে ভ্যানে করে বাড়িতে এনে কেটে গরুকে খাওয়াতে হচ্ছে। গরুগুলো সুস্থ ও তরতাজা আছে। এতে বাড়তি খাদ্য ও অর্থ সাশ্রয়ের পাশাপাশি লাভবান হয়েছি।


উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুস সামাদ বলেন, গোখাদ্যের জন্য দুই ধরনের খাবার প্রয়োজন। একটি হচ্ছে আঁশযুক্ত খাবার এবং অন্যটি দানাদার খাবার। আঁশযুক্ত খাবারের মধ্যে ঘাস ও খড় রয়েছে। এই অংশে কলার ঘাউর অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। এই কলার ঘাউরের মধ্যে সাধারণত কার্বোহাইড্রেট থাকে। প্রোটিন খুব কম পরিমাণে থাকে। কলার ঘাউরে কিছু ভিটামিন ও খনিজ লবণ থাকে।


এটি শক্ত ও উচ্চ শক্তি সম্পন্ন একটি আঁশযুক্ত খাবার। গরু খাওয়ার সময় কলার ঘাউর ছোট ছোট করে কেটে সঠিকভাবে পরিবেশন করা না হয়, তবে গলায় আটকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বড় সাইজের কলার ঘাউর খেলে হজম প্রক্রিয়ার ব্যাঘাত ঘটতে পারে। এটি অধিক পরিমাণে খাওয়ালে কার্বোহাইড্রেট এনগর্জমেন্ট বা কার্বোহাইড্রেট ডিজিস হতে পারে। আপদকালীন সময়ে আমরা এটি আঁশ জাতীয় খাবার হিসাবে ব্যবহার করতে পারি। যখন প্রাকৃতিকভাবে গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিবে। তবে অত্যন্ত সতর্কতা ও সাবধানতার সাথে পরিমাণমত এটি যেন গরুকে খাওয়ানোর হয়।


বিবার্তা/নূরআলম/এমবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com