
কক্সবাজার সদরের খুরুশকুলে পারিবারিক কলহের জেরে ‘বাবাকে পিটিয়ে হত্যার’ পর মরদেহ বস্তায় ভরে মাটি চাপা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ছেলেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে সদর উপজেলার দক্ষিণ ডেইলপাড়া কুরিমারিয়ারছড়া এলাকা থেকে স্থানীয়দের সহায়তায় ওই মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত মোহাম্মদ ছৈয়দ (৫০) একই এলাকার বাসিন্দা। গ্রেফতার মোহাম্মদ রফিক নিহত মোহাম্মদ ছৈয়দের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, বাবা মোহাম্মদ ছৈয়দের সঙ্গে স্ত্রী ও সন্তানদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক কলহ চলে আসছিল। তিনি কয়েক বছর আগে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে খুরুশকুলের কুমারিয়ারছড়া এলাকায় গিয়ে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। পুরো পরিবারটি রোহিঙ্গা নাগরিক।
নিহতের প্রতিবেশীরা জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মোহাম্মদ সৈয়দের বাড়ির আশপাশের দুর্গন্ধ ছড়ালে এলাকাবাসীর সন্দেহ হয়। এক পর্যায়ে কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে তার বাড়ির ধানক্ষেতের পাশে সদ্য মাটি চাপা দেয়া একটি শার্ট দেখতে পান। সেখান থেকে গন্ধ ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি ৯৯৯ নম্বরে কল দিয়ে পুলিশকে অবহিত করা হয়। পরে পুলিশের একটি দল সেখানে মাটি সরিয়ে বস্তাবন্দি অবস্থায় মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতার রফিকের স্ত্রী শারমিন আক্তার বলেন, ‘সোমবার ভোরে তার শ্বশুর মোহাম্মদ ছৈয়দ স্থানীয় মসজিদে নামাজ আদায় করতে যান। সকালে বাড়ি ফিরলে শাশুড়ির সঙ্গে তর্ক হয়। এক পর্যায়ে তার স্বামীও কলহে জড়িয়ে পড়েন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তার স্বামী রফিক বাবাকে লাঠি দিয়ে সজোরে আঘাত করেন। এতে শ্বশুর মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে মৃত্যু হলে মরদেহ বস্তাবন্দি করে ঘরে ফেলে রাখা হয়।’
ঘটনার ব্যাপারে কারও কাছে প্রকাশ করলে তার স্বামী ‘বাবার মত’ পরিণতি ভোগ করারও হুমকি দেয় বলে জানান অভিযুক্তের স্ত্রী।
এদিকে ঘটনা ধামাচাপা দিতে সৈয়দের স্ত্রী, দুই সন্তান রফিক ও সাহাবউদ্দিন জিয়া মিলে গত সোমবার রাত ১০টার দিকে বাড়ির পাশে ধানক্ষেতে মরদেহ পুঁতে রাখেন। মঙ্গলবার সকালে ছৈয়দের স্ত্রী ও সন্তানরা আত্মগোপনে যান।
‘পারিবারিক কলহের’ জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশের প্রাথমিক ধারণার কথা বলেন কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইলিয়াছ খান।
তিনি বলেন, ‘বিষয়টি শোনার পর পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় মাটি সরিয়ে বস্তাবন্দি মৃতদেহটি উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে নিহতের ছেলে মোহাম্মদ রফিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলা নথিভুক্ত হওয়ার পর জড়িত অন্যদের শনাক্ত করে গ্রেফতারে অভিযান চালানো হবে বলে জানান ইলিয়াছ খান।’
তিনি জানান, নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
বিবার্তা/ফরহাদ/এমবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]