কিউলেক্স মশার যন্ত্রনায় অতিষ্ঠ নগরবাসীর জন্য আরো দু:সংবাদ বয়ে আনছে এডিস মশা। এপ্রিল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হলে এডিস মশা বংশবৃদ্ধি শুরু করবে। আসছে বর্ষা মৌসুম এডিসের বংশ বৃদ্ধির উপযুক্ত সময়। এডিস মশার ডিমগুলো শুকনো অবস্থায় প্রায় ৯ মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত সুপ্ত অবস্থায় থাকতে পারে, যা পরে পানির সংস্পর্শে এলে ডিম থেকে লার্ভাতে পরিণত হতে পারে।
কিউলেক্স এবং এডিসের প্রজনন আচরণ ভিন্ন। কিউলেক্স ময়লা পানিতে বিশেষ করে ড্রেনের নোংরা পরিবেশে ডিম পাড়ে অন্যদিকে এডিস মশা কনটেইনার, নারকেলের খোসা, ফুলের টব, ফুলদানিতে জমাটবদ্ধ পানি, পরিত্যক্ত টায়ার প্রভৃতিতে বংশ বৃদ্ধি করে। পূর্ণাঙ্গ এডিস মশা দিনের বেলায় বাইরের হোস্ট থেকে রক্তপান করে মানে এক্সফিলিক এবং সন্ধ্যায় ঘরে আশ্রয় নেয় মানে এনডোফিকিক (ভিতরে হোস্টের রক্ত পান করে)।
সম্প্রতি সিটি কর্পোরেশন কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণে যেভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করছে সেভাবে এডিস নিয়ন্ত্রণে অভিযানের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা জরুরি। গবেষণায় দেখা গেছে ফগিং, লার্ভিসাইডিং পদ্ধতিগুলোর মধ্যে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান কিউলেক্স এর পাশাপাশি এডিস নিয়ন্ত্রনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে প্রজাতি নির্দিষ্ট নিয়ন্ত্রণ প্রোগামে কিউলেক্স এবং এডিস মশার প্রজনন স্থান গুলো জানা আবশ্যক এবং ভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা আবশ্যক।
এডিস নিয়ন্ত্রণে অর্গানোক্লোরাইনস, অর্গানোফসফেটস,কার্বামেটস গেস এবং ডেল্টেমথ্রিন সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। এডিস মশার ক্ষেত্রে বহিরে স্প্রে করা এবং ভিতরে স্প্রে করা
খুব গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া সামাজিক ব্যবস্থার মাধ্যমে যেমন নগরবাসীর অংশগ্রহণ, বাসা বাড়ি পরিদর্শন, সভা সেমিনারের মাধ্যমে এডিস নির্মূল সম্ভব।
সংক্ষিপ্তসারে কীটনাশক ব্যবহার করার পরে এটা প্রকৃতিতে বিরুপ প্রতিক্রিয়া হলো কিনা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন করা উচিত। সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মী যারা মাঠ পর্যায়ে নিয়োজিত আছে তাদেরকে এডিস মশার প্রজনন আবাস্থল সম্পর্কে সঠিক ধারণা দেয়া প্রয়োজন। সর্বোপরি প্রত্যেক বাড়ির অভ্যন্তরে ও বাইরে মশার লার্ভার প্রজনন আবাস ধ্বংস করতে হবে এবং পানি যাতে জমতে না পারে সে ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক. প্রাণিবিদ্যা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
বিবার্তা/জাই
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]