
অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান বলেছেন, ‘আমাদের পোশাকশিল্পকে সুরক্ষা দেওয়াই ছিল মূল অগ্রাধিকার, তবে মার্কিন কৃষিপণ্য কেনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, যা আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপ্রধান রাজ্যগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে সহায়ক হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে আলোচনা চালিয়েছি, যাতে আমাদের প্রতিশ্রুতিগুলো জাতীয় স্বার্থ ও সক্ষমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা সব পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ পর এ কথা বলেন তিনি।
শুক্রবার (১ আগস্ট) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমের পাঠানো এক প্রেস বিবৃতিতে এ তথ্য জানা গেছে।
এতে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আজ ৭০টি দেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর সর্বোচ্চ ৪১ শতাংশ পর্যন্ত নতুন শুল্কহার ঘোষণা করেছেন। এ ঘোষণাটি ১ আগস্ট দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যচুক্তি চূড়ান্তকরণের সময়সীমার ঠিক আগে এসেছে।
এ চুক্তিগুলো শুধু শুল্ক সংশোধনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় বরং এতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ নীতিগত সংস্কারও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, যা ট্রাম্প প্রশাসনের মতে বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতার অন্যতম কারণ। এছাড়া এসব চুক্তি অর্থনৈতিক ও জাতীয় নিরাপত্তাজনিত আরও বিস্তৃত ইস্যুগুলোও কভার করে। আলোচনার অংশ হিসেবে, দেশগুলোকে মার্কিন পণ্য ক্রয়ে সুস্পষ্ট প্রতিশ্রুতি দিতে হয়েছে, যাতে আমদানি-রপ্তানি ঘাটতি কমে যায়।
বিষয়গুলোর ব্যাপকতা বিবেচনায় নিয়ে, পুরো আলোচনা প্রক্রিয়াটি ছিল জটিল ও সময়সাপেক্ষ। শুল্কছাড় শুধু মার্কিন রপ্তানি পণ্যের ওপর শুল্ক কমানোর প্রতিশ্রুতির সঙ্গে নয়, বরং অ-শুল্ক বাধা, বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ দূর করতে সংশ্লিষ্ট দেশের সদিচ্ছার ওপরও নির্ভর করছিল।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, প্রতিটি দেশের জন্য নির্ধারিত শুল্কহার নির্ভর করবে তারা প্রতিটি ক্ষেত্রে কতটা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে তার ওপর।
বাংলাদেশ ২০ শতাংশ শুল্ক হার নিশ্চিত করেছে— যা তার প্রধান পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ যেমন শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান এবং ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে তুলনামূলক। এসব দেশও ১৯ থেকে ২০ শতাংশ শুল্কের মধ্যে সীমাবদ্ধ থেকেছে। এর ফলে বাংলাদেশ তার পোশাক খাতের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। বিপরীতে, ভারত একটি বিস্তৃত চুক্তি করতে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
খলিলুর রহমান বলেন, আমরা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে আলোচনা চালিয়েছি যাতে আমাদের প্রতিশ্রুতিগুলো জাতীয় স্বার্থ ও সক্ষমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। আমাদের পোশাকশিল্পকে সুরক্ষা দেওয়াই ছিল মূল অগ্রাধিকার। তবে আমরা মার্কিন কৃষিপণ্য কেনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, যা আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপ্রধান রাজ্যগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে সহায়ক হবে।’
‘আজ আমরা ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্কের সম্ভাবনা থেকে মুক্ত থাকতে পেরেছি। এটি আমাদের পোশাকখাত এবং এর সঙ্গে যুক্ত লাখো মানুষের জন্য বড় সুখবর। একই সঙ্গে আমরা আমাদের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা ধরে রেখেছি এবং বিশ্বের বৃহত্তম ভোক্তা বাজারে প্রবেশের নতুন সুযোগ সৃষ্টি করেছি।-যোগ করেন ড. রহমান।
বিবার্তা/এমবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]