শিরোনাম
দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের বিশ্ব দেখার সুযোগ করে দিচ্ছে ‘শ্রবণআলো’
প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০২১, ১৯:১৫
দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের বিশ্ব দেখার সুযোগ করে দিচ্ছে ‘শ্রবণআলো’
উজ্জ্বল এ গমেজ
প্রিন্ট অ-অ+

আমি একদিন রাজধানীর ধানমন্ডির শংকর দিয়ে অফিসে যাচ্ছিলাম। চোখে পড়ে একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী রাস্তা পার হচ্ছিলেন। চোখে না দেখার কারণে চলন্ত বাসের সাথে ধাক্কা খান তিনি। দুঃখজনক ও আশ্চর্যের বিষয় ছিল যে, রাস্তার অন্য কোনো মানুষ তাকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসেননি। ছোট ঘটনাটি আমাকে ভীষণভাবে নাড়া দেয়। তখন মাথায় একটা আইডিয়া আসে। এমন মানুষদের পথেঘাটে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরার জন্য কিছু একটা উপায় বের করা যায় কিনা। সে ভাবনা থেকে আজ দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য একটা প্রযুক্তি তৈরি করেছি। আর সেটা হাজারো মানুষের উপকারে আসছে।


এভাবেই নিজের উদ্যোগের কথা জানাচ্ছিলেন ‘শ্রবণআলো’র উদ্ভাবক ও টেসারেক্ট টেকনোলজির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত ঘোষ। শুধু একটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিনি যে ডিভাইসটি তৈরি করেছেন সেটা আজ দেশের দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য একটা আলোর দিশা হিসেবে কাজ করছে।


কথায় কথায় জানা গেল, অমিত ছোটবেলা থেকেই কম্পিউটার নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে ভীষণ রকম পছন্দ করতেন। কম্পিউটারে গেম ইন্সটল থেকে শুরু করে ওয়েব অনুসন্ধান করে নানান রকম শিক্ষণীয় বিষয় নিয়ে পড়ালেখা করতেন। কম্পিউটারের প্রতি ঝোঁক থেকেই তার কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের উপর পড়ালেখা করার ইচ্ছা জাগে মনে। সেই ইচ্ছেটাকে মনে লালন করে দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হয়েছেন। আজ তিনি উদ্ভাবনী কাজ করছেন। ‘শ্রবণআলো’ তার অন্যতম উদ্ভাবন।



অমিতের পড়ালেখার জীবন শুরু হয় বরিশালের একটি ছোট্ট গ্রামের স্কুল থেকে। ছোটবেলায় সাধারণ ছাত্র ছিলেন তিনি। পরীক্ষায় সাধারণ নাম্বার পেতেন। ষষ্ঠ কিংবা সপ্তম শ্রেণিতে থাকার সময় থেকে তার কম্পিউটারের উপর বেশি আগ্রহ জাগে। এসএসসি পাস করার পর ঢাকাতে এসে ভর্তি হন কলেজে। এইচএসসির পরে স্বপ্নের বিষয় কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়তে ভর্তি হন রাজধানীর একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে। সফলভাবে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেন।


বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শুরু থেকেই ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ক্লাবে সাথে যোগ দেন অমিত। ক্লাবের বিভিন্ন কার্যক্রমে নিয়মিত হন। টিমের মেম্বারদের সাথে বিভিন্নি প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করেন। এর ফলে বিভিন্ন জায়গায় প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ পান তিনি। প্রোজেক্টগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-লট, রোবটিক্স, ইমেজ প্রোসেসিং বেসড হোম অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোজেক্ট এবং ডিপ লার্নিং বেসড ট্রাফিক ক্লাসিফিকেশন অ্যান্ড কাউন্টিং প্রোজেক্ট ইত্যাদি। এসব কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে করতে প্রোগ্রামিং বিষয়ে অভিজ্ঞ হতে থাকেন অমিত।


‘শ্রবণ আলো’উদ্যোগের শুরুটা কীভাবে, জানতে চাইলে অমিত বলেন, উদ্যোগটা শুরুর পেছনে রয়েছে দৈনন্দিন জীবনের খুব সাধারণ একটা ঘটনা। রাজধানীর ধানমন্ডির শংকর দিয়ে অফিসে যাচ্ছিলাম। চোখে পড়ে একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মানুষ রাস্তা পার হচ্ছিলেন। চোখে না দেখার কারণে তিনি চলন্ত বাসের সাথে ধাক্কা খান। রাস্তার অন্য কোনো মানুষ তাকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসেনি। বিষয়টা আমার হৃদয়কে স্পর্শ করে। মাথায় আসে এসব দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মানুষের পাশে দাঁড়ানোর তো কেউ নেই। আমি যেহেতু মেশিন লার্নিং এবং কম্পিউটার ভিশন নিয়ে কাজ করি, তাই আমি চাইলে প্রযুক্তির সাহায্যে এসব মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি।


তাহলে সেটা কীভাবে করা যায়? ভাবতে থাকি কাটিং-এজ টেকনোলজি ব্যবহার করে কীভাবে ব্যবহারকারীর জন্য সবচেয়ে কম দামে ইনোভেটিভ একটি প্রোডাক্ট নিয়ে আসা যায় কিনা। যেহেতু প্রযুক্তির জ্ঞান আছে, তাই এখন দরকার শুধু নিরলস চেষ্টা আর কঠোর পরিশ্রম। ধারণা (আইডিয়া) অনুসারে কাজের পরিকল্পনা শুরু করি। সেই পরিকল্পনা মতে ধারণার বাস্তবায়নে লেগে যাই। এভাবেই একজন প্রতিবন্ধীর রাস্তা পার হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উদ্ভাবনী চিন্তা থেকেই মূলত ‘শ্রবণআলো’উদ্যোগের শুরু হয়।



শুরুতে সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে ‘শ্রবণআলো’র প্রথম প্রোটোটাইপ তৈরি করেন অমিত। এরপরে আইসিটি ইনোভেশন ফান্ডের জন্য আবেদন করেন। সেখান থেকে ফান্ডও পান। এই ফান্ড ব্যবহার করে প্রোটোটাইপ-২ ডেভেলপ করার কাজ শুরু করা হয়েছে। প্রোটোটাইপ-২ নিয়ে কাজ করার সময়ে বিভিন্ন স্কিলের প্রফেশনাল একটি টিমের প্রয়োজন হয়। এই চিন্তা থেকে পরবর্তীতে টেসারেক্ট টেকনোলজি নামে সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু করেন।


‘শ্রবণআলো’টিমে এখন সফটওয়্যারের কাজ দেখছেন অনয় দে, অমিত ঘোষ দেখছেন কম্পিউটার ভিশন এবং মেশিন লার্নিং সম্পর্কিত কাজগুলো, তাহজিদ ইবনে রউফ উদয় কাজ করছেন আইওটি নিয়ে এবং ইউজার রিসার্চ ও সমগ্র গবেষণা কার্যক্রমটি পরিচালনা করছেন মো. তানজিম হাসান।


কম্পিউটার সায়েন্স এবং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিভিন্ন শাখায় কাজের অভিজ্ঞতা বিষয়ে অমিত বলেন, আমি স্ক্র্যাচ থেকে উৎপাদন পর্যন্ত মেশিন লার্নিং কিংবা ইমেজ প্রসেসিং বেসড বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করতে পছন্দ করি। আমাদের কাজগুলো যেমন ইনোভেটিভ, ঠিক তেমনি এই ইনোভেটিভ কাজগুলো করার জন্য আধুনিক ফ্রেমওয়ার্ক এবং মেথোডোলজি ব্যবহার করি। আধুনিক ফ্রেমওয়ার্ক ব্যবহার করার সাথে একটি চৌকস টিম গঠন করেছি আমার প্রতিষ্ঠিত টেসারেক্ট টেকনোলজিতে, যেখানে বিভিন্ন স্কিলের এবং অভিজ্ঞতার সংমিশ্রণ রয়েছে। আর যে প্রোডাক্টগুলো তৈরি করছি সেগুলো একাধিক প্ল্যাটফর্মের (অ্যান্ড্রয়েড, ওয়েব, হাইব্রিড, এম্বেডেড) সাথে যুক্ত থাকবে যাতে করে ব্যবহারকারীর পণ্যের উপর অভিজ্ঞতা আরো ভালো হয়।


‘শ্রবণআলো’উদ্ভাবনে বিভিন্ন অত্যাধুনিক ফিচার যোগ করা হয়েছে। সামগ্রিক সল্যুশন ডিজাইনের ক্ষেত্রে হিউম্যান সেন্টার্ড ডিজাইন পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে। যে প্রযুক্তির মাধ্যমে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর প্রতিবন্ধকতা এবং একটি সাহায্যকারী ডিভাইসটির কাছ থেকে কী কী ধরনের চাহিদা তাদের থাকতে পারে, সে সম্পর্কে বুঝতে সাহায্য করা হয়েছে। আর সে চাহিদাগুলোর উপর ভিত্তি করে ডিভাইসটির ফিচার, কাঠামো এবং বিভিন্ন প্যাকেজের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। পুরো ডিভাইসটির উদ্ভাবন এবং পরবর্তী বাজারজাত করণের প্রক্রিয়াতে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক অবস্থা এবং নিত্যনৈমিত্তিক চাহিদার উপর দৃষ্টি আরোপ করা হয়েছে।



উদ্যোগটির বিষয়ে অমিত বলেন, ‘শ্রবণআলো’ ডিভাইসটির পুরো প্রক্রিয়াটি অত্যাধুনিক করা হয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মেশিন লার্নিং টেকনোলজি সমন্বয়ে ‘শ্রবণআলো’ ইমেজ প্রসেসিং করা হয়েছে। সেইসাথে ওসিআর টেকনোলজি ব্যবহার করে অবজেক্ট ডিটেকশন, ডিস্ট্যান্স মেজারমেন্ট, লেখাকে টেক্সট থেকে স্পিচে রূপান্তরিত করার মাধ্যমে ব্যবহারকারীকে চলাফেরার সময়ে প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দেয়ার প্রযুক্তি রয়েছে। এতে বই কিংবা অন্য কোনো মাধ্যমের বাংলা কিংবা ইংরেজি লেখাকে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মানুষের জন্য সংযোগকৃত বোন-কন্ডাক্টর হেডফোনের মাধ্যমে শোনার ব্যবস্থাও রয়েছে।


ডিভাইসটিতে কমান্ড দেয়া, নির্দেশনা শোনার জন্য রয়েছে মাইক্রোফোন এবং একটি বোন-কন্ডাক্টর হেডফোন, যার সাথে যুক্ত থাকবে একটি ক্যামেরা। যা দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের ক্যামেরাসহ বস্তু শনাক্ত করতে এবং ব্যবহারকারীকে হেডফোন দিয়ে অবজেক্ট সম্পর্কে অবহিত করতে সহায়তা করবে। ডিভাইসটিতে রয়েছে বিভিন্ন মোড। এক মোড থেকে অন্য মোডে যেতে ব্যবহারকারী ভয়েস কমান্ড কিংবা সংযোগকৃত একটি বাটন ব্যবহার করতে পারেন। রিয়েল টাইম অবজেক্ট প্রোটেক্টশন অ্যানাউন্সমেন্ট এবং অবজেক্ট সার্চ ডিভাইসটিকে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী একজন মানুষের চলাফেরা এবং অন্যান্য ব্যবহারের জন্য আদর্শ হিসেবে নিয়ে আসে।


ডিভাইসটি ব্যবহারের ফলে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী একজন মানুষ চলাফেরার সময়ে কারো সাহায্য ছাড়াই সামনের বাঁধা, পরিচিত মানুষকে চেনা, রাস্তা পারাপার এবং যেকোনো লেখা বোঝার ক্ষমতা অর্জন করবে। সেইসাথে কারো উপর নির্ভরতা ছাড়াই কম্পিউটারে কোন কিছু পড়া, বই পড়া কিংবা কাজ করার মত সক্ষমতা একজন দৃষ্টিহীন মানুষ অর্জন করতে পারে।


বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রায় সাত লক্ষাধিক দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মানুষ রয়েছেন, যাদের পড়াশোনা, জীবিকা নির্বাহ এবং সামাজিক জীবন পরিচালনার জন্য প্রতিনিয়ত বাঁধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। আর এই ডিভাইসটি ব্যবহারের মাধ্যমে সুন্দর ও স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেতে পারবেন।



বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে পছন্দ করতেন অমিত। এ বিষয়ে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যখন আমাকে মার্স রোভার দলের (সেরা মার্স রোভারের জন্য বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতার) জন্য নির্বাচিত করা হয়েছিল, তখন আমাকে নতুন প্রোগ্রামিং ভাষা এবং কৌশল শিখতে হয়েছিল এবং আমাকে এটি রোভারে প্রয়োগ করতে হয়েছিল। আমার জন্য সেই সময়টি সবচেয়ে কঠিন সময় ছিল। তবে আমি দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করে আমার সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করেছি। কাজ শিখে সেই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছি। এখন আমি বুঝতে পারছি সেই কাজের ফল অবশ্যই উপযুক্ত ছিল।


‘শ্রবণআলো’র যাত্রা শুরু হয় টেসারেক্ট টেকনোলজিসের যাত্রা শুরু হওয়ার আগে থেকে। ‘শ্রবণআলো’ নিয়ে কাজ করার শুরু থেকেই যে সমস্যাটার সম্মুখীন হতে হয়েছে সেটা হচ্ছে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ এবং অর্থের অভাব। যার ফলে উদ্যোগটির ডেভেলপমেন্ট প্রক্রিয়া বেশ কয়েকবার স্থবির হয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে ব্যক্তিগত বিনিয়োগে উদ্যোগটির কার্যক্রম এগিয়ে যেতে থাকে। পরে আইসিটি ইনোভেশন ফান্ড ডেভেলপমেন্ট প্রক্রিয়াকে আবার সচল করে। এখনো উদ্যোগটিকে গুণগতমানসম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় উচ্চ প্রযুক্তিসম্পন্ন হার্ডওয়্যার যুক্ত করতে হবে। যেটি টেসারেক্ট টেকনোলজিসের পক্ষে করা এখনো সম্ভব হয়নি- বললেন অমিত।


টেসারেক্ট টেকনোলজিস একটি কার্যকর ইনকিউবেটর হিসেবে বর্তমানে কাজ করছে, যার ফলে বিভিন্ন সেক্টরের মেধাবী, উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন মানুষের চিন্তা এবং কাজ যুক্ত হয় ‘শ্রবণআলো’র সল্যুশন ডিজাইন, মার্কেট অ্যানালাইসিস এবং হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের সমন্বয় করণের কাজ করছে। এর ফলে কার্যকর প্রোটোটাইপ তৈরি করা হয় অনেক দ্রুত।


প্রোগ্রামিং নিয়ে কাজ করতে করতে জীবনে অর্জনও হয়েছে অমিতের। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ার সময় থেকেই বিভিন্ন প্রোজেক্ট নিয়ে কাজ করতে পছন্দ করতেন। প্রোজেক্টের কাজ করতে গিয়ে বেশ কয়েকটা প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ আয়ত্ত করে ফেলেন। এই প্রজেক্টগুলো নিয়ে আইআইটি কানপুর (টেককৃতি) এবং আইআইটি বোম্বেসহ (টেকফেস্ট) আরো বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন তিনি। ওই সময়ে তার টিম একটি রোভার বানিয়ে আমেরিকাতে মার্স রোভার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। ভারতের এইএইটিতে প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায়ও তার টিম ২য় স্থান অর্জন করে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ে অমিত ও তার কয়জন বন্ধু মিলে ৭টি রিসার্চ পেপার লেখেন। এই রিসার্চ পেপারগুলো এইইইইতে পাবলিশ করা হয়। রিসার্চ পেপারের বিষয় ছিল কম্পিউটার ভিশন, লট এবং ডিপ লার্নিং ইত্যাদি।



গরিব, খুব সাধারণ মানুষের কথা মাথায় রেখে ‘শ্রবণআলো’ ডিভাইসটির ডিজাইন করা হয়েছে। ডিভাইসটি বানানো, সেটার দামও নির্ধারণ করা হয় সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে, যাতে এত উন্নত প্রযুক্তির ডিভাইসটা সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকে। সেইসাথে প্রোডাক্ট ভ্যারাইটি এবং ফিচারগুলোকে কয়েকটি প্যাকেজের মধ্যে নিয়ে আসা হয়েছে, যাতে করে ডিভাইস থেকে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ নিজস্ব ক্রয় ক্ষমতা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সেবা পেতে পারেন। সাধারণত চোখের চিকিৎসাতে যেই খরচ হয়ে থাকে তার থেকে অনেক কম দামে এই ডিভাইস মানুষ ব্যবহার করতে পারবে।


‘শ্রবণআলো’ উদ্যোগকে নিয়ে বহুদূর এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন উদ্যমী এই কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার। অমিতের ভাষ্য, আমাদের ডিভাইসটিতে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে নতুন দৃষ্টিকোণ দিয়ে একটি নতুন পদ্ধতিতে বিশ্বকে দেখার সুযোগ করে দিচ্ছে। আমরা ডিভাইসের সফটওয়্যারটি উন্নত করার এবং আগামী দিনে এটিকে আরো বেশি ব্যবহারবান্ধব করার পরিকল্পনা করছি। সারা দেশের সাধারণ মানুষের কাছে ডিভাইসটি সাফল্য পেলে, এটি বিশ্বের জন্য উন্মুক্ত করারও পরিকল্পনা রয়েছে।


বিবার্তা/গমেজ/জাই


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com