ভাষাবীর এমএ ওয়াদুদের ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ (মঙ্গলবার)। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে বিভিন্ন আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী ও পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং দৈনিক ইত্তেফাকের সাবেক কর্ম্যাধ্যক্ষ ছিলেন এমএ ওয়াদুদ।

১৯২৫ সালের ১ আগষ্ট চাঁদপুর (তৎকালীন চাঁদপুর মহকুমা) সদর উপজেলার ৫নং রামপুর ইউনিয়নের রাঢ়িরচর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এমএ ওয়াদুদ। তিনি ছিলেন গণতান্ত্রিক যুবলীগ (১৯৪৮), পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ (১৯৪৮) ও কেন্দ্রীয় কচিকাঁচার মেলার (১৯৫৬) প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।

তিনি পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ (১৯৪৯), সাপ্তাহিক ইত্তেফাক (১৯৪৯) ও দৈনিক ইত্তেফাক (১৯৫৩) প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্যও ছিলেন। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন তিনি।

এমএ ওয়াদুদ ১৯৫৩-৫৪ সালে প্রাদেশিক ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। দু'বার নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও এক বার প্রাদেশিক ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন।

ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার কারণে তিনি ১৯৪৮ সালে একবার এবং ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত দ্বিতীয়বার কারাবরণ করেন।

১৯৫৪ সালে ৯২ (ক) ধারা জারি করে যুক্তফ্রন্ট সরকারকে বরখাস্ত করার পর ছাত্র আন্দোলনকে স্থিমিত করার জন্য পুনরায় এমএ ওয়াদুদকে কারারুদ্ধ করা হয়। ১৯৪৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার কারণে তৎকালীন শাসকদের রুদ্ররোষের শিকার হয়ে দীর্ঘদিন আত্মগোপন করতে বাধ্য হন। ১৯৪৯ সালে ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার কারণে বঙ্গবন্ধুসহ এমএ ওয়াদুদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার হন।

১৯৭৮ সালে সামরিক সরকারের সাথে হাত মিলিয়ে মন্ত্রীত্ব গ্রহণে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে তিন বার বিভিন্ন মেয়াদে এমএ ওয়াদুদ কারাবরণ করেন। সামরিক শাসনের সময় তাঁর বিরুদ্ধে বার বার মিথ্যা মামলা দায়ের করে তাঁকে হয়রানি করা হয়।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বর্তমান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও ডা. দীপু মনি তাঁর একমাত্র মেয়ে। ডায়াবেটিক ফুট সার্জারিতে দেশের একমাত্র বিশেষজ্ঞ ডা. জাওয়াদুর রহিম ওয়াদুদ ওরফে জেআর ওয়াদুদ (টিপু) তাঁর একমাত্র ছেলে।

বিবার্তা/ইমরান/কামরুল