টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে চলন্তবাসে গণধর্ষণ মামলায় ৪ জনের যাবজ্জীবন এবং প্রত্যেককে এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেছেন আদালত।
বুধবার দুপুরে টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক খালেদা ইয়াসমিন এ রায় প্রদান করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলো- বাসচালক হাবিবুর রহমান নয়ন (২৮), হেলপার খালেক ভুট্টো (২৩), আশরাফুল (২৬), সুপারভাইজার রেজাউল করিম জুয়েল (৩৮)।
এর মধ্যে রেজাউল করিম জুয়েল পলাতক রয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি এসএম নাসিমুল আখতার।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি নাসিমুল আক্তার নাসিম। তাকে সহায়তা করেন মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান আজাদ।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি নাসিমুল আক্তার নাসিম এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এ রায়ে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। এছাড়াও বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় যেভাবে গণধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে, এ রায় পরিচালিত গণধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ক্ষেত্রে অনেকটাই প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করবে।
তবে এ রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে আসামি পক্ষের আইনজীবী শামীম চৌধুরী দয়াল বলেন, এ রায়ে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ন্যায় বিচারের স্বার্থে এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন বলেও জানান তিনি।
মামলার বিবরনে প্রকাশ, ২০১৬ সালের ১ এপ্রিল কালিয়াকৈরের মৌচাকে কর্মরত এক গার্মেন্টস কর্মী গৃহবধূ টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী বাসস্ট্যান্ড থেকে ভোর ৫টার দিকে ‘বিনিময় পরিবহনের’ একটি বাসে কালিয়াকৈরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। এসময় বাসে যাত্রী না থাকার সুযোগে বাসটি কিছুদূর যাওয়ার পর কন্টাকটার বাসের জানালা দরজা বন্ধ করে দেন। পরে গাড়ির চালক হাবিবুর রহমান নয়ন তাকে ধর্ষণ করে। পালা ক্রমে বাসের কন্ডাকটার, হেলপারও তাকে ধর্ষণ করে।
পরে বাসটি ঢাকা না গিয়ে টাঙ্গাইল ময়মনসিংহ রোডের একটি ফাঁকা জায়গায় নামিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে ভিকটিম স্বামীকে বিস্তারিত জানালে তার স্বামী তাকে টাঙ্গাইল এনে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত বাসের চালক, হেলপার ও সুপার ভাইজারকে ওইদিন গ্রেফতার করে। ধর্ষিতার স্বামী বখতিয়ার বাদী হয়ে টাঙ্গাইল মডেল থানায় ৯ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে। পুলিশ তদন্ত শেষে চার জনকে আসামি করে চার্জশিস্ট প্রদান করে এবং ছয়জনকে এ মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদান করে।
গ্রেফতারকৃত তিন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে। ধর্ষিতা আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করে। জবানবন্দীতে ধর্ষিতা আশরাফুল নামের আরো একজনের নাম উল্লেখ করে। এতে মোট আসামির সংখ্যা দাড়ায় ১০ জনে। মামলার বাদীসহ ৯ জন আদালতে স্বাক্ষী প্রদান করে।
বিবার্তা/তোফাজ্জল/জহির
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]