বোয়ালমারীতে কমিশনের মাধ্যমে রেজিস্ট্রি, দলিল লেখক বরখাস্ত
প্রকাশ : ২৬ মার্চ ২০২৫, ২১:৪১
বোয়ালমারীতে কমিশনের মাধ্যমে রেজিস্ট্রি, দলিল লেখক বরখাস্ত
বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে ক্রোকের জন্য আবেদন করা জমি বিক্রির পর গোপনে কমিশন করে রেজিস্ট্রি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী আদালতের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দলিল লেখকের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন।


জানা যায়, বোয়ালমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের চালিনগর গ্রামের আ. মান্নান মোল্যা তার বোন হাসনাহেনাকে তার মালিকানাধীন কয়েক শতাংশ জমি ক্রয়ের জন্য কয়েক বছর আগে নগদ টাকা প্রদান করেন। বোয়ালমারী থানাধীন ৮০ নং কালীয়ান্ড মৌজার বিএস ২০৭ নং খতিয়ানে ৮৭ দাগের ৩৮.৫০ শতাংশ, বিএস ৬৮ খতিয়ানে ৪.৫০ শতাংশ, বিএস ৬৬ খতিয়ানে ৩.৮০ শতাংশ, বিএস ৬৭ খতিয়ানে ৩.৬২ শতাংশসহ আরো কিছু জমি। কিন্তু ভাই আ. মান্নান মোল্যাকে জমি লিখে দেয়ার আগেই বোন হাসনাহেনা মারা যান। পরে হাসনাহেনার ওয়ারিশগণ জমি লিখে না দিয়ে টালবাহানা করেন। উল্লেখ্য টাকা দেয়ার সময় হাসনাহেনার নিকট থেকে ভাই মান্নান মোল্যা একটি চেকের পাতা নিয়ে রেখেছিলেন। এরপর উপায়ান্তর না পেয়ে আদালতের শরণাপন্ন হয়ে ব্যাংক থেকে চেক ডিজঅনার করিয়ে গত ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি একটি মামলা করেন। মামলা নং ১/২০২৪। এরপর হাসনাহেনার অংশকৃত জমি ক্রোকের জন্য মান্নান মোল্যা আদালতে আবেদন করেন।


কিন্তু আদালতে বিচারাধীন থাকা অবস্থায় ওই জমি হাসনাহেনার ওয়ারিশগণ অন্যের নিকট তথ্য গোপন করে বিক্রি করে দেন। দলিল লেখক মো. ইকরাম হোসেনের মাধ্যমে ভুল তথ্যের ভিত্তিতে ওই জমি রেজিস্ট্রি হয়েছে চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি। জমি রেজিস্ট্রি হয়েছে কমিশনের মাধ্যমে, যেখানে জমির মালিকের স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা মধুখালী উপজেলার মুরারদিয়া গ্রাম উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু হাসনাহেনার ওয়ারিশগণ সবাই সুস্থ থাকার পরেও বর্তমান ঠিকানা বোয়ালমারী উপজেলার শিবপুর উল্লেখ করে বোয়ালমারীতে কমিশনের মাধ্যমে জালিয়াতি করে রেজিস্ট্রি করা হয়েছে। ওই জমি নিয়ে আদালতে মামলা বিচারাধীন থাকা সত্ত্বেও এবং দলিল দাতাগণ শারীরিক ভাবে সুস্থ থাকার পরেও অসুস্থ দেখিয়ে দলিল রেজিস্ট্রি করার ঘটনায় আ. মান্নান মোল্যা গত ২৩ মার্চ দলিল লেখক মো. ইকরাম হোসেনের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইনজীবীর মাধ্যমে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরে অভিযুক্ত দলিল লেখক মো. ইকরাম হোসেনকে মৌখিকভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল। পরে মানবিক কারণে বরখাস্ত প্রত্যাহার করা হয়েছে।


এ ব্যাপারে অভিযুক্ত দলিল লেখক মো. ইকরাম হোসেন বলেন, বিক্রেতা আমাকে যে ঠিকানার কথা বলেছে আমি সেই ঠিকানা (বোয়ালমারী পৌরসভার শিবপুর গ্রামের বিএস আব্দুস সামাদের বাড়ি) উল্লেখ করে জমি রেজিস্ট্রি করেছি। আমি এর বেশিকিছু জানি না।


জানতে চাইলে আব্দুস সামাদ বলেন, আমি ওই নামে কাউকে চিনি না। এরা কেউ আমার বাড়িতে ভাড়া থাকেন না। আর আমি ওই দিন ঢাকায় ছিলাম।


জানতে চাইলে পেশকার মো. নুর ইসলাম ওরফে সন্টু বলেন, ঘটনাটা আমরা পরে বুঝতে পেরেছি। ভুয়া বর্তমান ঠিকানা উল্লেখ করে দলিল লেখক ইকরাম হোসেন আমাদের সাথে প্রতারণা করেছেন। এজন্য তাকে মৌখিকভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল। পরে মানবিক কারণে বরখাস্ত প্রত্যাহার করা হয়েছে।


এ ব্যাপারে সাব রেজিস্ট্রার লুৎফুন্নাহার বলেন, কমিশনে দলিল করার ক্ষেত্রে বর্তমান ঠিকানা হিসেবে যেকোনটি ব্যবহার করলেই হয়।


এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সেখানে আদৌ তিনি বসবাস করেন কি-না বিষয়টি আরও ভালো করে জানার জন্য অফিসে আসেন।


বিবার্তা/মিলু/এসএস

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com