মামলার ফাঁদে ৮২ বছরের বাঁচা মিয়া
প্রকাশ : ০২ মার্চ ২০২৫, ০৯:৫৮
মামলার ফাঁদে ৮২ বছরের বাঁচা মিয়া
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

চট্টগ্রামের বাকলিয়া থানাধীন হাজী মনসুর আলী সড়কে বিএনপির কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের মামলায় কর্ণফুলীর ৮২ বছরের বৃদ্ধ মো. বাঁচা মিয়াকে আসামি করা হয়েছে। অথচ ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিলেন তিনি, এমনকি রাজনীতির সঙ্গেও তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন বাঁচা মিয়া।


শনিবার (১ মার্চ) চট্টগ্রাম দামপাড়া পুলিশ হেডকোয়ার্টারে হাজির হয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনারের কাছে লিখিত আবেদন করেন তিনি।


আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, আমার বয়স ৮২ বছর। জীবনে কোনোদিন থানায় বা আদালতে আমার নামে মামলা হয়নি। অথচ এখন শুনতে হচ্ছে, আমি নাকি ১৯ নম্বর আসামি! এত বছর ব্যবসা করে খেয়েছি, রাজনীতির সঙ্গে কখনো যুক্ত ছিলাম না। এখন জীবনের শেষ সময়ে এসে এমন অপবাদ সইবো কীভাবে?


তার লিখিত আবেদন সিএমপির দক্ষিণ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার, বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), ওসি (তদন্ত) এবং মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কাছেও পাঠানো হয়েছে।


আবেদনে বাঁচা মিয়া উল্লেখ করেন, তিনি চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানাধীন চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। জীবিকা নির্বাহের জন্য স্বল্প পরিসরে ব্যবসা করেন। কিন্তু গত ২২ ফেব্রুয়ারি দায়ের হওয়া মামলায় তাকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে, যেখানে বিএনপি অফিসে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ আনা হয়েছে।


তিনি বলেন, আমি যে এলাকায় থাকি, সেখান থেকে ঘটনাস্থল প্রায় ৭-৮ কিলোমিটার দূরে। আমি এই ঘটনার কিছুই জানি না। কিন্তু তবুও আমাকে আসামি করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ অন্যায়। বৃদ্ধ এই ব্যবসায়ী তার নির্দোষ প্রমাণে মোবাইল ফোনের অবস্থান (লোকেশন) এবং অন্যান্য প্রমাণ যাচাইয়ের অনুরোধ জানান। এই বয়সে থানায় যেতে হচ্ছে, আদালতে যেতে হবে। অথচ আমার কোনো দোষ নেই। আমি সুবিচার চাই।


সিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মাহমুদা বেগম বলেন, অভিযোগ যেহেতু দেওয়া হয়েছে, বিষয়টি তদন্ত কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হবে। কোনো নিরীহ ব্যক্তি যাতে হয়রানির শিকার না হন, সেটি নিশ্চিত করা হবে।


গত ২৩ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের বাকলিয়া থানাধীন হাজী মনসুর আলী সড়কে বিএনপির কার্যালয়ে হামলা ও মারধরের অভিযোগে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মৎস্যজীবী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনের ৩৫ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়। এছাড়া মামলায় আরও ৫০-৬০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। বাকলিয়া থানার ওসি ইখতিয়ার উদ্দিন জানান, মামলাটি চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল কাইয়ুম জয় (২৮) দায়ের করেছেন।


এজাহারভুক্ত আসামিদের মধ্যে রয়েছেন— মহানগর যুবলীগ নেতা আনোয়ার হোসেন (৪০), দেওয়ান বাজার যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. ইকবাল (৩৫), ছাত্রলীগ নেতা তাহসিন (২২), আওয়ামী লীগ নেতা মো. কামাল উদ্দিন (৫০), যুবলীগ নেতা মো. ফারুক (৩৫), শ্রমিক লীগ নেতা মো. কোরবান আলী (৩৮), ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক মো. সাইফুল (২০) প্রমুখ। বৃদ্ধ বাঁচা মিয়ার মতো আরও কেউ কি এ মামলায় অন্যায়ভাবে জড়িয়েছেন, তা তদন্ত করে দেখা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ।


বিবার্তা/জাহেদ/এমবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com