ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে সিঙ্গারা খাওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে সাবেক কাউন্সিলরসহ ২০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক, প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) বেলা ১ টার দিকে বোয়ালমারী পৌরসভার গুনবহা তালতলা বাজারে এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সামান্য লেনদেন ও সিঙ্গারা খাওয়া নিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পৌরসভার তালতলা বাজারে হোটেল ব্যবসায়ী বিল্লাল মল্লিকের (৩২) সাথে বিএনপি নেতা, সাবেক কাউন্সিলর ফরিদ হোসেন মোল্যার ছেলে মো. রাহুল মোল্যা (২৩) এর কথা কাটাকাটির জেরে বিল্লাল মল্লিকের হোটেলে ভাঙচুর চালায় রাহুল ও তার সহযোগী কয়েকজন। ঘটনার পর সাবেক কাউন্সিলর ফরিদ আহমেদ বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষতিপূরণ বাবদ বিল্লাল মল্লিককে দুই হাজার টাকা দেয়। বিল্লাল সে টাকা না নিয়ে আগামী শনিবার সালিশ মীমাংসায় বসার কথা বলে।
সালিশে বৈঠকে বসার আগেই এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার সকালে গুনবহা গ্রামের নুরুল হক মল্লিকের ছেলে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নাসির মল্লিকের নেতৃত্বে একদল দুর্বৃত্ত দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সাবেক কাউন্সিলর ফরিদ হোসেন মোল্যার সমর্থকদের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে । পরে দুই গ্রুপই দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় ।
এতে আওয়ামী লীগ নেতা নাসির মল্লিকের ভাই ওমর মল্লিক ও ফরিদ কাউন্সিলের সমর্থক দুলু শেখের ছেলে রাজা শেখ (৩২) মারাত্মক আহত হয়। তাদের বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ সময় পেশাদারিত্ব দায়িত্ব পালনকালে গণমাধ্যমে কর্মী সিরাজুল ইসলাম (৪৮) সংঘর্ষকারীদের হামলায় আহত হন।সংঘর্ষের সময় বিএনপি নেতা সাবেক কাউন্সিলর ফরিদ হোসেন মোল্যা দুই পক্ষকে নিবৃত্ত করতে গিয়ে আহত হন। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ২০ জন আহত হয়। আহতের মধ্যে গুনবহা গ্রামের ছালাম শেখের ছেলে টুলু শেখ, মোহাম্মাদ জাহিদ, আকিম বিশ্বাস, আওয়ামী লীগ নেতা নাসির মল্লিক, মোহাম্মদ আলী (৩২), ওমর মল্লিক, জাকারিয়া মাহমুদ (২৮), সিরাজুল হক, মারুফ মল্লিক (৪০), মিলন মল্লিক (২৫), আহাদ মল্লিক(১৫) আহত হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আহত জাকারিয়া মাহমুদ বলেন, ফরিদ কাউন্সিলের ছেলে রাহুল-বিল্লালের দোকান থেকে সিঙ্গারা খেয়ে বিল না দেওয়া নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে দোকানে ভাঙচুর চালায় রাহুল। এ ঘটনা নিয়ে এ সংঘর্ষ।
আওয়ামী লীগ নেতা নাসির মল্লিক বলেন, আমার ভাই বিল্লালের সাথে লেনদেন ছিল ফরিদ কাউন্সিলের ছেলে রাহুলের, বিল্লাল টাকা পরিশোধ করলেও রাহুল সিঙ্গারা খেয়ে বিল না দিলে কথা-কাটাকাটি হয়। এ নিয়ে শুক্রবার সকালে আমার দলের লোকজনের উপর হামলা চালায় তারা।
বিএনপি নেতা ও সাবেক কাউন্সিলর ফরিদ হোসেন মোল্যা বলেন, আমার ছেলে বিল্লালের নিকট ৫ হাজার টাকা পায়, সে বিল্লালের দোকান থেকে ২৫ টাকার সিঙ্গারা খেয়েছিল। সে টাকা বাকি রাখায় কথা-কাটাকাটি হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড সহসভাপতি নাসির মল্লিক তার লোকজন নিয়ে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়। এতে আমিসহ আমার সমর্থক ১০ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
এ বিষয়ে বোয়ালমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো. গোলাম রসুল বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এখনো কেউ অভিযোগ করেনি, অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিবার্তা/মিলু/জেএইচ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]