পঞ্চগড়ে বাড়ছে শীত, কমছে তাপমাত্রার পারদ
প্রকাশ : ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:০৩
পঞ্চগড়ে বাড়ছে শীত, কমছে তাপমাত্রার পারদ
পঞ্চগড় প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

দেশের উত্তরের হিমালয় কন্যা খ্যাত জেলা পঞ্চগড়ে বাড়ছে শীত, কমছে তাপমাত্রার পারদ। গত দুই দিন মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে এই অঞ্চলে। শীতের দাপটে বিপাকে পড়েছে এ জেলার হতদরিদ্র থেকে নিম্ন আয়ের মানুষ।


শনিবার (৪ জানুয়ারি) ভোর ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল শুক্রবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হিসেবে রেকর্ড হয়েছিল ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।


আবহাওয়াবিদদের মতে, যেসব এলাকায় দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে, সেসব এলাকায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। সে হিসেবে উত্তরের এ প্রান্তিক জেলার ওপর দিয়ে দুই দিন ধরে বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ।


জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, জেলার প্রকৃতিজুড়ে হালকা কুয়াশা জড়ানো থাকলেও ঝলমলে রোদ নিয়ে উঠে গেছে ভোরের সূর্য। তবে তাপমাত্রার পারদ কমে যাওয়ায় কনকনে শীতে কাঁপছে এ জেলার মানুষ। রাতভর বৃষ্টির মতো ঝরেছে বরফ শিশির। বরফের মতো ঠান্ডা বাতাসে কাবু করে তুলছে এ এলাকার আপামর মানুষদের। গতকাল শুক্রবার রাত ৯টার পর থেকেই শহরের হাটবাজারগুলোতে জন কোলাহল কমতে থাকে। বাজারের কোথাও কোথাও কাগজের কাটন, শুকনো কাঠখড়ি জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করতে দেখা যায় সাধারণ মানুষকে।


তবে জীবিকার তাগিদে হাড় কাঁপা কনকনে শীতের মধ্যেই গায়ে শীতের কাপড় পড়ে কাজে বের হতে দেখা গেছে কর্মজীবী মানুষদের। এদের মধ্যে কেউ যাচ্ছেন নদীতে পাথর তুলতে, কেউ চা বাগানে, কেউ ভোরের টাটকা সবজি তুলে খেতে। তবে ঘন কুয়াশা না থাকায় সকাল সাড়ে ৭টার দিকে পূর্ব আকাশে দেখা মেলে পুবালি সূর্য। ধীরে ধীরে ফুটতে থাকে ঝলমলে রোদ। আর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে মানুষের কর্মব্যস্ততা। তবে উত্তরের ঝিরিঝিরি বাতাসের কারণে দুর্ভোগ বাড়িয়েছে শীতের তীব্রতায়।


সকালে খেতে হাল চাষে যাওয়ার সময় আজিজুল বলেন, ‘প্রচণ্ড ঠান্ডা। হাত-পা কুঁকড়া লাইগ্যা আহে। তারপরেও লাঙল-গরু নিয়ে বের হয়েছি।’ হাড় কাঁপা শীতের এমন বর্ণনা এ অঞ্চলের ভ্যানচালক, পাথর শ্রমিক, চা শ্রমিক, দিনমজুর থেকে নিম্ন আয়ের মানুষদের। তারা বলছেন, পেটের ক্ষুধা শীত বোঝে না, তাই যত ঠান্ডাই হোক, কাজ না করলে পরিবারের মুখে অন্ন জুটবে না।


এদিকে শীত বাড়তে থাকায় জেলা ও উপজেলার হাসপাতালগুলোর বহির্বিভাগে বেড়েছে রোগীর সংখ্যা। প্রতিদিন সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে রোগীরা ছুটছেন হাসপাতালে। এসব রোগীর মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধ মানুষের সংখ্যা বেশি। যারা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন তারাই কেবল হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। চিকিৎসকরা চিকিৎসার পাশাপাশি শীতে সুরক্ষিত থাকতে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন।


জেলার প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ বলেন, আজ শনিবার (৪ জানুয়ারি) ভোর ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল ৯টায় তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। শুক্রবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বিশেষ করে এ এলাকায় হিমালয়ের হিম বায়ু সরাসরি প্রবেশ করায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আকাশে মেঘের পরিমাণ কমে গেছে। ফলে সকালেই সূর্যের মুখ দেখা মিলছে।


বিবার্তা/মাসুম

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com