লামায় পিতৃপরিচয়ের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করলেন এক যুবক
প্রকাশ : ১১ নভেম্বর ২০২৩, ১৮:০৪
লামায় পিতৃপরিচয়ের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করলেন এক যুবক
লামা প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

বান্দরবান জেলার লামা উপজেলায় পিতার স্বীকৃতি পেতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তানফিজুর রহমান ইমন নামের মা হারা এক যুবক।


উপজেলার রুপসীপাড়া ইউনিয়নের ইব্রাহিম লিড়ার পাড়ার বাসিন্দা ইসহাক মিয়াকে পিতা দাবি করে ১০ অক্টোবর, শুক্রবার দিনগত রাতে স্থানীয় সাংবাদিক ফোরামের হলরুমে এ সংবাদ সম্মেলন করেন ওই যুবক।


সংবাদ সম্মেলনে তানফিজুর রহমান ইমন দাবি করে বলেন, রুপসীপাড়া ইউনিয়নের ইব্রাহিম লিডার পাড়ার বাসিন্দা বেসরকারি সার্ভেয়ার ইসহাক মিয়া আমার পিতা হন। ২০০৩ সালে ইসহাক মিয়ার সাথে আমার মা সুফিয়া বেগমের বিয়ে হয়। আমার মা ৩ বছর পর্যন্ত আমাকে লালন পালন করেছেন।


পরবর্তী সময়ে আমার পিতা ইসহাক মিয়া ভরণপোষণ না দেওয়ায় অর্থাভাবে আমাকে মা সুফিয়া বেগম সরই ইউনিয়নের কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন নামক একটি সেবামূলক সংস্থায় পড়াশোনা জন্য ভর্তি করিয়ে দেন। সেখানে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখার পর অষ্টম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশন করার জন্য পিতৃপরিচয় প্রয়োজন হলে পরিচয় সংকট ও যাবতীয় কাগজপত্রাদি দিতে না পারায় পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারিনি।


তখন থেকে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের কর্মী হিসেবে লালিত পালিত হচ্ছিলাম। ২০১৮ সালে আমার মা সুফিয়া বেগম মারা যান। আমার বয়স যখন ১৮ বছর পূর্ণ হয় তখন জাতীয় পরিচয়পত্র করতে পিতার পরিচয় সহ বিভিন্ন কাগজপত্রের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। পরবর্তীতে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি ও স্বজনের দ্বারস্থ হলে তারা আমার পিতা মো. ইসহাক মিয়ার কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেন। আমি আমার পিতা ইসহাক মিয়ার কাছে গেলে তিনি সন্তান হিসেবে স্বীকৃতি না দিয়ে বিভিন্ন তালবাহানা শুরু করে। এক পর্যায়ে বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি দিয়ে আমাকে তাড়িয়ে দেন।


এদিকে আমার মা সুফিয়া বেগম কর্তৃক বাদী হয়ে ২০০৪ সালে করা পিতা ইসহাক মিয়ার বিরুদ্ধে মামলাটি নথি পত্র হাতে পাই। এই মামলাটি এখন পর্যন্ত হাইকোর্টের হস্তক্ষেপে নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধ দমন ট্রাইবুনাল বান্দরবানে চলমান রয়েছে। বিধায় স্বীকৃতি পেতে আমি বাবার সঙ্গে অনেকবার যোগাযোগ করি কিন্তু তিনি আমাকে নানা কৌশলে আশ্বাস দেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পিতৃত্বের পরিচয়টা দিতে অনীহা প্রকাশ করেন আমার পিতা ইসহাক মিয়া। বর্তমানে মামলাটি আমার খালা রাবেয়া বেগম পরিচালনা করছেন।


তবে অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত ইসহাক মিয়া জানান, তানফিজুর রহমান ইমন আমার ছেলে নয়। তার দাবি সম্পূর্ণ আনলিগ্যাল। সুফিয়া বেগম বেঁচে থাকাকালীন বিভিন্ন স্থানে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, পরে তার সব অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছিল। এখন নতুন করে তানফিজুর রহমান ইমন বিভিন্ন জনের প্ররোচনায় মিথ্যা অভিযোগ তুলে আমার জীবনটা নষ্ট করার পাঁয়তারা করছে মাত্র।


জানতে চাইলে স্থানীয়রা জানায়, তানফিজুর রহমান ইমনের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা কোন ভাবেই কাম্য নয়, আমরা এই ঘটনার একবার সামাজিক ভাবে বসে সমাধান করে দিয়েছিলাম। কিন্তু ইসহাক মিয়া কেন এমন আচরণ করছে আমাদের বুঝে আসে না।


এ বিষয়ে বান্দরবান নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিজ্ঞ আইনজীবী মোহাম্মদ আলমগীর চৌধুরী বলেন, আসামিদ্বয় পিতার স্বীকৃতি দিবে বলে সামাজিকভাবে একটি আপস নামা করেছিল এবং সেটা দিয়ে একবার জামিন নিয়েছিলাম। কিন্তু জামিনে যাওয়ার পরে প্রতারণা করে ছেলেকে এখনো পিতার স্বীকৃতি দেয়নি বিবাদী। আসামিরা মামলা দীর্ঘায়িত করার জন্য মহামান্য হাইকোর্টে তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছিল। পরবর্তীতে স্থগিত কার্যক্রম বাতিল হওয়ার পর আবার ট্রায়াল কোর্টে আসছে। এই মামলার বিচার কার্যক্রম চলমান আছে।


বিবার্তা/আরমান/সউদ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com